ইসলামে দু’য়ার গুরুত্ব, তাৎপর্য ও ফজিলত
(আল্লাহুম্মা সল্লেআলা সাইয়্যেদিনা মুহাম্মাদ। ওয়ালা আলিহি ওয়া আসহাবিহি অসাল্লাম)
মহান আল্লাহ পাকের নিকট সবচেয়ে পছন্দের কাজ হলো তার নিকট প্রার্থনা করা। বান্দা যখন মহান আল্লাহর দরবারে কায়মোন বাক্যে দু’আ করেন তখন মহান আল্লাহ খুশী হন। তিনি বলেন, “আল্লাহ তায়ালাকে সবিনয়ে এবং গুপ্তভাবে ডাক। তিনি সীমা লঙ্ঘনকারীদের ভালবাসেন না। ” বান্দার ডাকে মহান আল্লাহ সাড়া দেন। তিনি বলেন, “আমাকে ডাক আমি উত্তর দেব।” রাসুল স. মহান আল্লাহর দরবারে দোয়া করার গুরুত্ব দিয়ে বলেন, “আল্লাহর নিকট মুনাজাত ব্যতীত অধিক সম্মানীত বস্তু আর নেই।” হযরত আবু যর (রা.) বলেন, “খাদ্যের সাথে লবণের যতটুকু দরকার, নেকীর সহিত দু’য়াও ততটুকু যথেষ্ট।” তিনি আরো বলেন, “আল্লাহ তায়ালার অনুগ্রহ প্রার্থনা কর। কেননা, আল্লাহ তায়ালা প্রার্থনা করাকে ভালবাসেন।”
দু’য়ার ফজিলত : দু’য়ার ফজিলত সম্পর্কে তিরমিযি শরীফের হাদিস, “আবু হুরায়রা রা. হতে বর্ণিত- নবি স. বলেছেন- “আল্লাহ তায়ালার নিকট দু’য়ার চেয়ে কোন জিনিস বেশী সম্মানিত নয়।”
দু’য়ার নিময় : শরিয়ত সমর্থিত নয় এমন বিষয়ে দু’য়া না করা আর শরিয়ত সমর্থিত বিষয়ে দু’য়া করাই হলো দু’য়ার প্রাথমিক নিয়ম। ম্যাজিস্ট্রেটের কাছে তহশিলদারের চাকুরীর জন্য দরখাস্ত করা আর ডাকাতির অনুমতি চেয়ে দরখাস্ত করা এক কি করে হতে পারে? অথচ এই সাধারণ বিষয়টুকু আমাদের জ্ঞানে বুঝে আসলেও শরিয়তের বিভিন্ন সাধারণ বিষয় বুঝানোর জন্য বিজ্ঞজনদের মাথা পিটাতে হয়। বুজুর্গের কবরে গিয়ে তার কাছে সন্তান কামনা করা, নাযায়েজ চাকুরীর জন্য দু’য়া প্রার্থনা করা, নাযায়েজ ব্যবসা প্রতিষ্ঠান উদ্ভোধনের জন্য কোরান খতমের ব্যবস্থা করা আজকাল সামান্য ব্যাপারে পরিণত হয়েছে। দ্বিনী জ্ঞানের অভাব আর উদাসিনতা আমাদের রন্ধ্রে রন্ধ্রে প্রবেশ করেছে। আমাদের কাজের দ্বারা এই ধারণা প্রকাশ পায় যে, যারা তাসবিহ-তাহলিল পাঠ করেন তারা খোদার আত্নীয়। তারা দু’য়া করলে সব হাসিল হয়ে যাবে-কি বৈধ কি অবৈধ !
দু’য়ার পদ্ধতি মহান আল্লাহ শিখিয়ে দিলেন : পবিত্র কুরানের শুরুতেই মহান আল্লাহ রাব্বুল ইজ্জত সূরা ফাতেহার প্রথমাংশে তার প্রশংসা শিক্ষা দিয়ে পরের ও চূড়ান্ত অংশে তার নিকট কিভাবে, কি প্রার্থনা করতে হবে তার শিক্ষা দিলেন। ‘ছিরাতুল মুস্তাকিম’ এর পথ অর্থাৎ সহজ-সরল পথ প্রদর্শনের জন্য মহান আল্লাহর দরবারে প্রার্থনা করার কথা বলা হয়েছে। ‘ছিরাতুল মুস্তাকিম’ বলতে তাফসিরকারকগণ ইসলাম এবং কুরআনকে বুঝিয়েছেন। অর্থাৎ প্রার্থনাকারী প্রার্থনা করছে কোরানের পথ ও ইসলামের পথ সন্ধানে কেননা ইসলাম এবং কোরানেই রয়েছে দুনিয়ার পূর্ণাঙ্গ কল্যান ও আখেরাতের স্থায়ী মুক্তি। (চলবে)
সর্বশেষ এডিট : ০৫ ই আগস্ট, ২০২০ সকাল ১০:০২