somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

আমার বন্ধু “ গুল্লু ” ও তার জীবন দ্বিতীয় পর্ব

০৭ ই জুলাই, ২০২৪ রাত ১০:১৯
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

আজ আমি আপনাদের সামনে এমন একটি নির্মম বাস্তব কাহিনী তুলে ধরেছি, তা শুনলে হয়তো আপনাদের মধ্যে নানা ধরনের প্রশ্ন উঁকি মারবে, জানিনা এ ধরনের ঘটনা আপনারা আগে কখনো শুনেছেন বা দেখেছেন কিনা? কিন্তু ঘটনার মধ্যে লুকিয়ে থাকা নির্মম সত্য আজও আমার অজানা যা আমাকে দিনের-পর-দিন মাসের-পর-মাস বছরের-পর-বছর কুঁড়ে কুঁড়ে খাচ্ছে। জানি না সত্য আমার সামনে কোনদিন আসবে কিনা? সৃষ্টিকর্তার উপর ভরসা আর বিশ্বাস রেখে দিন যাপন করছি একটু ভালোবাসার জন্য…………………………………………………………………………
বছর পাঁচেক আগে গত ৭ই অক্টোবর ২০১৫ আমার মা আমাকে ছেড়ে চলে যায় তার নিজের ভাই বোনের কাছে, যাওয়ার সময় সে সঙ্গে করে নিয়ে যায় বাবার সমস্ত টাকাপয়সা সম্পত্তি তারপর থেকে সে কোন ভাবে কোন যোগাযোগ বা সম্পর্ক রাখে নি বা রাখার চেষ্টাও করেনি। সে আমার বাবার টাকা পয়সা দিয়ে ভাই বোন এবং তাদের সংসার চালানো এবং খাওয়ানোর দায়িত্ব নিয়েছে।
আপনাদের শুনতে অবাক লাগলেও এটাই সত্যি তার কারণ জানতে হলে আপনাদের আজ থেকে ৩৫ বছর আগের একটা কাহিনী শুনতে হবে তা হল যাদের আমি মা বাবা বলে সম্বোধন করছি, তারা আসলে আমার নিজের মা-বাবা নয়। আমার যখন পাঁচ দিন বয়স তখন এই নিঃসন্তান দম্পতি আমাকে তাদের কাছে নিয়ে আসে। প্রথম প্রথম খুব ছোটবেলায় আমি কিছু বুঝতাম না, মনে হতো সব ঠিকই আছে কিন্তু ধীরে ধীরে আমি যখন বড় হতে লাগলাম তখন আমার মনে হতো বা মন বলতো এরা আমার নিজের কেউ নয়, সমস্যা শুরু হল আমার পিসির বিয়ের পর থেকে তখন আমার বয়স ১১ বছর (আমার এই পিসি আমার যখন ১০ মাস বয়স তখন আমাদের বাড়িতে আসে আসে) আমার দেখভাল করার দায়িত্বর সিংহভাগই তার ওপর ছিল, আস্তে আস্তে আমি আরো বড় হতে লাগলাম আর অনুভব করতে লাগলাম আমার চিন্তাধারা পছন্দ-অপছন্দ মন-মানসিকতা সবকিছুই তাদের থেকে আলাদা ,এটা কি করে সম্ভব তাদের পছন্দ-অপছন্দ তাদের চিন্তা ধারা তারা জোর করে আমার ওপর চাপিয়ে দিত। আমার নিজের ব্যক্তি স্বাধীনতা বলতে কিছুই ছিল না। তারা যা ভালো বুঝত তাই তারা করত, কোনদিনও আমি কি চাই আমার কি ভালো লাগে তারা আমাকে জিজ্ঞাসা করতো না বা আমার মনের কথা কখনো জানার চেষ্টাও করত না। আমার খুব একা লাগত, আমি সবসময় মনের মধ্যে একটা অজানা ব্যাথা অনুভব করতে লাগলাম। যখন দেখতাম আমার বয়সী অন্য ছেলেরা যখন নানা রকম খাবার দাবার জামা-জুতা বা অন্য সামগ্রী দিয়ে তাদের বাবা-মা তাদের পূর্ণ করে রেখেছে, তখন আমার দিনযাপন ছিল খুব সামান্য দরিদ্র ঘরের ছেলেদের মতন। কিন্তু তা হবার কথা ছিল না। কথা প্রসঙ্গে বলে রাখা দরকার আমার বাবা কেন্দ্রীয় সরকারি চাকরিজীবী ছিলেন সুতরাং আমি তাদের একমাত্র সন্তান আমার সাধারন দরিদ্র ঘরের মানুষের মতন দিন যাপন করার কথা ছিল না । যাই হোক এই ভাবে দিন গড়াতে শুরু করলো আস্তে আস্তে আমি মাধ্যমিক এবং উচ্চমাধ্যমিক পাশ করলাম। ছোটবেলা থেকেই আমি খুব ভালো ছেলে বলে পরিচিত ছিলাম বন্ধু, আত্মীয় এবং পাড়াপড়শিদের কাছে। বি-কম পড়াকালীন মাঝপথে আমার বাবা রীতিমত কান ধরে টেনে নিয়ে আমাকে আই টি আই এর মতন একটা সংস্থায় ভর্তি করলো, আমার একদম ইচ্ছা ছিল না আমার ছোটবেলা থেকে ইলেকট্রনিক্স নিয়ে পড়াশোনা করার খুব ইচ্ছা ছিল এবং আমি নিজেই টিফিনের পয়সা বাঁচিয়ে কিছু কিছু ইলেকট্রনিক্স সংক্রান্ত কাজকর্ম করতাম বা জানার চেষ্টা করতাম ।জোর করে আমাকে ওই আইটিআই এর মতন সংস্থায় ভর্তি করানোর ফলে আমার বি-কম পড়াটা অপূর্ণই থেকে গেল। ছোটবেলা থেকেই আমার বাবা আমাকে কথায় কথায় নোংরা গালাগালি এবং মারধর করতো, আমার মা সেগুলো তাকিয়ে তাকিয়ে দেখতো কিন্তু কোনো প্রতিবাদ করত না, বা কোনোভাবে আমাকে আগলে রাখার চেষ্টাও করত না। আমি শুয়ে শুয়ে শুধু কাঁদতাম আর ভাবতাম তারা আমার সঙ্গে এরকম কেন করছে? প্রকৃত পিতামাতা কি এমন ব্যাবহার করে তাদের ছেলেমেয়েদের সঙ্গে? আমার বয়সী অন্য ছেলে মেয়েদের বাবা-মায়েদের দেখতাম তাদের কত যত্ন করে ভালোবাসে। বাবা-মার সঙ্গে তাদের মানসিকতা কত দৃঢ় এবং বিশ্বাস কত মজবুত। আমি কোন জিনিস আবদার করলে তাদের কাছে খুব বিরক্তির কারণ হতো এবং সেটা খুব জ্বালা মনে হতো। ধীরে ধীরে আমার আবদার গুলো তারা অন্যায় আবদার বলে পাড়া-প্রতিবেশী ,আত্মীয় এবং বন্ধু-বান্ধবদের মধ্যে প্রচার করতে লাগলো। আর আমার ভালো খাবার ভালো জিনিস না পেয়ে মনটা ভেঙে টুকরো টুকরো হতে লাগলো। আমার বাবা-মায়ের দেওয়ার সামর্থ্য থাকলেও আমাকে সব জিনিস থেকে দূরে ঠেলে রাখত এবং নানান অছিলায় এড়িয়ে যেত। এতে আমার মনে ধীরে ধীরে রাগ ও ক্ষোভের সৃষ্টি হতে লাগলো। বারবার তারা আমার কাছ থেকে অনেক কিছু গোপন করার চেষ্টা করত। সব সময় তারা সব কাজ করতো আমাকে লুকিয়ে না জানিয়ে ,কোন কিছুর মধ্যে তারা আমাকে ডাকতো না বা রাখত না ফলে নিজেকে খুব ছোট এবং বঞ্চিত মনে হতো।আমার যখন ৮ বছর বয়স তখন আমার যে পিসি আমায় দেখভাল করত তা্র বিয়ের জন্য পাত্র দেখার তোরজোর শুরু হয়। তখন আমার বাবা-মা বিহারে এক নির্জন জঙ্গলে আশ্রমে নিয়ে যায় কিন্তু আমি সেখানে কান্নাকাটি করি এবং তারপর আমার বাবাও আমাকে ফেরত নিয়ে আসে। কিন্তু আমার মা আমাকে রেখে আসার খুব চেষ্টা করে কিন্তু শেষ পর্যন্ত বাবা ওখান থেকে আমাকে ফেরত নিয়ে আসে। তখন তারা আর আমাকে আশ্রম এ রেখে আসতে পারেনি কেননা আমার পিসির বিয়ে হয়ে গেলে আমাকে দেখবে কে? আমার পিসির আমাদের বাড়ির কাছে বিয়ে হবার সুবাদে মাঝে মাঝে আসতো আমার সঙ্গে দেখা করতে, কিন্তু তাতেও আমার বাবা-মা বিরক্ত বোধ করত তারা চাইত না কেউ আমাকে ভালোবাসুক বা সুসম্পর্ক রাখুক। তারা আমাকে ঘর সাজানোর বস্তু বলে মনে করত আমার কোন স্বাধীনতা বলতে কিছু ছিল না। এইভাবে প্রচন্ড মানসিক কষ্টের মধ্যে দিয়ে আমার দিন যেতে লাগল। মানসিক কষ্ট সহ্য করতে না পেরে মাঝে মাঝে আমার শরীর খারাপ হয়ে যেত। আমার বাবা ছিল খুবই কৃপণ মানুষ এবং খুব ছোট মনের মানুষ। আমার জন্য পর্যাপ্ত খাবার দাবারের তারা বন্দোবস্ত করতো না। বয়স কম থাকার জন্য আমার নানা রকম ভালো জিনিস খেতে ইচ্ছা করত, যা আমি আমাদের পরিচিত বাড়ির সন্তানদের দেখতাম। কিন্তু আমি আমার মনের কষ্ট মনে চেপে রাখতাম কাউকে কোনদিন কিছু বলতাম না।
যাইহোক এইভাবে ধীরে ধীরে সময় বয়ে যেতে লাগলো। আমি ওই আইটিআই এর মতন সংস্থায় পাস করলাম কিন্তু বি- কম পাস করা আমার হলো না। কিন্তু আইটিআই পাস করেও সেই ভাবে কোন উপার্জনের পথ বের করতে পারলাম না । কম্পিউটার আমার ছোটবেলা থেকে শেখার আগ্রহ ছিল তাই কম্পিউটারের আমি বিভিন্ন রকমের ছোটখাটো কোর্স করছিলাম। তাই নিজে আমি ঘরে বসেই কম্পিউটারের ছোটখাটো কাজ কর্ম করতাম। কিন্তু তেমন কোনো ভাল চাকরির সুযোগ আমি কোনো দিন পাইনি।দুই একটা ভাল চাকরির সুযোগ এলেও তাতে টাকা খরচ হবে বলে আমার বাবা- মা কোনো আগ্রহ দেখায় নি। ফলে ধীরে ধীরে এদের দুজনের সঙ্গে মানসিক দূরত্ব দেখা দিতে শুরু করেছিল। কোনদিনও এদের সঙ্গে আমার সুসম্পর্ক সেভাবে গড়ে ওঠেনি তবুও যেটুকু ছিল তাও ধীরে ধীরে ক্ষীন হতে লাগলো এরই মাঝে আমার যখন ২২ বছর বয়স আমার পিসির কাছ থেকে জানতে পারি এরা দুজন “তোর আসল বাবা মা নয়”। তোকে খুব ছোটবেলায় এরা নিয়ে এসেছিল। তখন আমার মাথায় আকাশ ভেঙে পড়লো আমি তখন কি করবো কি করবো না কিছুই বুঝতে পারছিলাম না আমার চোখের সামনে সব এক নিমেষে অন্ধকার হয়ে গেল, আমি নিজেকে খুব নিঃসঙ্গ একা দুর্বল মনে করতে লাগলাম। সদ্য যৌবনে পা রাখা এক যুবক যার ওই ২২ বছর বয়স থেকে জীবনে ধীরে ধীরে প্রতিষ্ঠিত হবার কথা কিন্তু আমার মন থাকত সবসময় বিষন্ন হয়ে যার ফলে আমার জীবনের সফলতার স্বপ্ন ধীরে ধীরে শেষ হতে লাগল। তারপর অতিকষ্টে একটু একটু করে দাঁড়াবার চেষ্টা করতে লাগলাম। এরই মধ্যে আমি টালিগঞ্জ স্টুডিও তে একটা চাকরি (সালটা ২০০৪ নভেম্বর মাস) পাই। দুপুর বারোটার মধ্যে বেরিয়ে যেতে হতো রাত বারোটায় বাড়ি আসতাম। আমার মাকে অনেক রাত পর্যন্ত আমার জন্য অপেক্ষা করতে হতো বলে সে বলত অতদূরে কাজ করতে গিয়ে তোর কোন লাভ নেই। তোর বাবার যা টাকা আছে তাতেই তোর হয়ে যাবে। তারপর আমার সেই কাজে আর যাওয়া হলো না । (কথা প্রসঙ্গে বলে রাখি আমি কিন্তু প্রথম মাসের মাইনে পেয়ে বাবা মার হাতেই দিয়েছিলাম।) আমার বয়সের ছেলেরা যখন কিছু কাজ করছে বা প্রতিষ্ঠিত হচ্ছে তখন আমি ঘরে নিজেকে বন্দী করে রেখেছি। আস্তে আস্তে আমি হতাশা এবং অবসাদে ভুগতে লাগলাম, নিজেকে ঘরে আটকে জানলা দিয়ে লোক দেখতাম, আর মনে মনে খুব কষ্ট পেতাম। ছোট বেলা থেকে আমাকে কারো সঙ্গে সেই ভাবে মিশতে দেওয়া হতো না। ফলে আমি কারো সাথে খুব বেশি মিশতে পারতাম না। আমি ঘরে বসে কম্পিউটারে বিভিন্ন কাজে নিজেকে দক্ষ বানাতে লাগলাম।২০০৩ সালে আমার বাবা চাকরি থেকে অবসর গ্রহন করে। আমি আমার বাবাকে বললাম তুমি বাড়ির মধ্যে আমাকে একটা দোকান করে দাও কিন্তু আমার মা বলল ওর দ্বারা দোকান করা হবে না। সব কিছুতেই আমার -মা বলতো আমার দ্বারা কোন কিছু করা সম্ভব নয় আমার দ্বারা কিছু হবে না ।যার ফলে আমার মন সবসময় ভেঙে যেত। এইভাবে ধীরে ধীরে সব সময় এদের সঙ্গে আমার মানসিক লড়াই চলতে লাগল। প্রায় প্রতিদিন আমার সঙ্গে এদের ঝগড়া হতো, এবং সেটা এমন জায়গায় পৌঁছে যেত, যে আমাকে বাইরে হোটেলে খেতে হতো। পাড়ার লোকেরা এসে মাঝে মধ্যে ঝগড়ার মীমাংসা করত তাতে কোন লাভ হতো না দুদিন ঠিক থাকার পর আবার ঝগড়া শুরু হতো। ধীরে ধীরে এদের সঙ্গে আমার সম্পর্ক এতটাই তিক্ত হতে শুরু করল যে এদের আমি ভীষণভাবে ঘৃণা করতে শুরু করলাম। আমার মায়ের হাতে ভাত খাওয়া বন্ধ করে দিলাম। সে রান্না করে ফেলে রেখে দিত আমার যখন ইচ্ছা হতো তখন নিজের হাতে খেতাম। আমি খেলাম কি খেলাম না তাতে আমার মায়ের কোন ভ্রুক্ষেপ ছিল না। সে নির্লিপ্তভাবে থাকতো আর সারাদিন কি যেন চিন্তা করত। তারা নিজেরা বাবা মায়ের মতন আচরন করার কোনো চেষ্টা করতো না। কিন্তু আমার থেকে ছেলের মতন আচরণ আশা করত। বাইরের ছেলেদের উদাহরণ আনত অমুক বাবুর ছেলে ভালো তো তমুক বাবুর ছেলে ভালো, কিন্তু নিজেরা অন্য আর পাঁচটা বাবা-মা যা করে কখনোই করতো না। তার জন্য তাদের কখনো বিবেক জাগ্রত হতো না।প্রসঙ্গত বলে রাখি, আমার বাবা যখন ঘরে না থাকত, তখন আমার মা তার সম্বন্ধে অনেক বাজে কথা বলত, (বিশেষ করে তার চরিত্র সম্বন্ধে), তার একটা অডিও আমি রেকর্ড করে রেখেছি। আমার পৈতা ছোটবেলায় এরা দেয়নি আমার যখন 29 বছর বয়স তখন আমার এক বন্ধু প্রচেষ্টায় একরকম বাধ্য হয়েই আমার বাবা আমার পৈতা দেয় ওইটা হওয়ার পর ভেবেছিলাম সব ঠিক হয়ে যাবে, কিন্তু না তারপর থেকে পরিস্থিতি আরও খারাপ হতে থাকে। আমাকে এরা দুজন সম্পূর্ণভাবে ছেড়ে দিল। আমাকে প্রতিষ্ঠিত হওয়ার জন্য কোনরূপ সাহায্য করল না এবং সবচেয়ে বড় ব্যাপার আমি যখন নিজে প্রতিষ্ঠিত হওয়ার জন্য নানান কাজে যাওয়ার চেষ্টা করছি তখন সেখানে সর্বক্ষেত্রে আমার মা বাধা দিত । আমি নানান জায়গায় ঘুরে ঘুরে কাজ জোগাড় করতে লাগলাম যখন যেখানে যা পেতাম তাই করতাম। আবার ঘরে কিছুদিন বসে থাকতাম। মনের কষ্ট নিয়ে আমি কোনো জায়গাতেই বেশিদিন কাজ করতে পারতাম না এবং আমার বাবা-মা কোনভাবেই আমাকে কাজ যাতে একটানা করতে পারি তার জন্য উৎসাহিতও করত না। এরপর 2011 সাল নাগাদ বাবার শরীর খারাপ হতে শুরু করল। তিনি হার্ট পেশেন্ট ছিলেন। পূর্বে তার দুবার হার্টের অপারেশন হয়েছে। ধীরে ধীরে বাড়ির পরিস্থিতি খারাপ হতে শুরু করল। ঘরে বাইরে যেন একটা অরাজকতার সৃষ্টি হতে লাগলো। আমার মা তার ভাই ও দুই অবিবাহিত বোনের সঙ্গে গোপনে সম্পত্তি নিয়ে পালানোর ছক কষতে থাকে। ছোটবেলা থেকেই আমি খুব ভদ্র ছেলে ছিলাম। তারা তাদের সুবিধা মতন আমাকে দিয়ে কাজ করিয়ে নিত, কিন্তু ধীরে ধীরে তারা তাদের নোংরা স্বভাব দিয়ে আমার মন মানসিকতা নষ্ট করে দিচ্ছিল। আমার মন সবসময় উদাস হয়ে থাকতো। শুধু শুয়ে শুয়ে কাঁদতাম আর ভগবানকে বলতাম আমাকে রক্ষা করো। এরই মধ্যে আমার বাবার ছোটবেলার বন্ধুর মেয়ের সঙ্গে আমার একটা সম্পর্ক গড়ে ওঠে। যাকে আমি ছোটবেলা থেকেই চিনতাম জানতাম। বাবা ওকে খুব পছন্দ করত, সে আমাদের বাড়িতে ছোটবেলা থেকেই আসতো। তাই তার সঙ্গে আমার ছোটবেলা থেকেই কথা হতো। বাবাকে মাঝেমধ্যে ডাক্তারখানায় যেতে হতো, দুদিন ঠিকঠাক, তো আবার তার শরীর খারাপ হতো এভাবে দীর্ঘ দু'বছর লড়াই করার পর, বাবা ১৯ মে 2014 সালে মারা যান,তারপর যাবতীয় কাজকর্ম করে তাঁর পারলৌকিক ক্রিয়া সম্পন্ন করি। আমার বাবা মারা যাওয়ার পর আমার মায়ের অবিবাহিত দুই বোন গুরুদশা অবস্থায় তার হাত ধরে টানাটানি শুরু করে ,যাতে আমার মা তাদের বাড়িতে পাকাপাকিভাবে গিয়ে থাকতে শুরু করে। আমার মামা মায়ের ছোট ভাই বয়স প্রায় 68। সে কোন দিন কোনো কাজকর্ম করে নি। তার একটি বিবাহযোগ্যা মেয়ে রয়েছে। সেই ভাই বাবা মারা যাওয়ার পর প্রতিদিন মায়ের কাছে আসতো এবং বাবার সমস্ত টাকা-পয়সার খোঁজ-খবর রাখতে শুরু করলো। আমার মা, বাবার শ্রাদ্ধশান্তি হয়ে যাবার কিছুদিন পর থেকে বিভিন্ন জায়গায় ঘুরে বেড়াতে শুরু করলো। এখানে একটু বলে রাখি, আমার মা কিন্তু আমার বাবার বাৎসরিক শ্রাদ্ধ ছয় মাসের মধ্যে সম্পন্ন করে। তারপর থেকে দুই বোন ও ভাইয়ের পরিবার নিয়ে নানান জায়গায় বেড়তে যেত,এবং মাঝে মধ্যে দুই একদিনের জন্য ভাই বা বোনের বাড়িতে থেকে যেত।(এই প্রসঙ্গে একটু বলে রাখি, আমার বাবা কিন্তু সারা ভারতবর্ষের প্রতিটি জায়গায় তাকে ঘুরিয়েছে।কারণ, তাদের বিয়ের ১৬ বছর পর তারা আমাকে নিয়ে আসে।) সে সব সময় বাড়ি থেকে পালিয়ে যাবার চেষ্টা করত।
বাবা মারা যাওয়ার পর আমি আমার বাবার বাল্যকালের বন্ধুর মেয়েকে পিসি বিয়ে দেয় তার বাড়িতে।প্রথমে আমার সেরকম আয় ছিল না। আমি একটি শপিং মলে কাজ শুরু করি। কিছুদিন কাজ করার পর সেই কাজ আমার চলে যায়। তখন আমার মাথায় আকাশ ভেঙে পড়ে। তখন আমি বাড়ীতে একটা দোকান করার পরিকল্পনা করি। এবং ইতিমধ্যে তার ভাইয়ের যাতায়াত খুব বেড়ে যায়, কিন্তু আমি কোনদিনই সেই ব্যাপারটা সেই ভাবে বুঝতে পারিনি, যে এত যাতায়াতের কারণ আসলে কি? আমার দোকান তৈরীর কাজের ব্যাস্ততার পিছনে আসলে আমার মা তার ভাইয়ের সঙ্গে গোপন ভাবে পালানোর এবং থাকার পরিকল্পনা তখনই হয়ে যায়। সন্তানসম্ভবা বৌমার প্রতি তার কোন খেয়াল ছিল না। 2015 সালের ফেব্রুয়ারি মাসে আমি বাড়ির মধ্যে একটি কম্পিউটার জেরক্স সংক্রান্ত দোকান করি। এরই মধ্যে আমার একটি কন্যা সন্তান হয়। আমার মায়ের পেনশনের টাকা দিয়ে সংসার চলতো, আমিও আমার ক্ষমতা অনুযায়ী সাধ্যমত চেষ্টা করতাম। কেননা দোকান খুললেই প্রথম প্রথম আমার উপার্জন কম ছিল, বাবার অবসর গ্রহণের পর থেকে (2003 সাল) আমার মা, বাবার সাথে যাতে আমার সম্পর্ক খারাপ হয় তার চেষ্টা করত। আমি ছোটবেলা থেকে বাবাকে বেশি ভালবাসতাম এবং তার প্রতি ছিলাম আমি অনুরক্ত। কিন্তু আমার মা তিলে তিলে বাবার প্রতি ভালোবাসা শ্রদ্ধা নষ্ট করে দিয়েছিল। বাবা বাড়িতে না থাকলে তার সম্বন্ধে নোংরা কথা বলে আমার মন বিষাক্ত করার চেষ্টা করত। তার একটি রেকর্ড আমার কাছে আছে আপনারা চাইলে আমি শোনাতে পারি। সে সর্বসময় বলতো তোর বাপের অন্যত্র বিয়ে আছে, তোর বাপ চরিত্রহীন, তোর বাপ অনেক খারাপ মানুষ, এই ধরনের কথা বলতো। বাবা অবসরের পর থেকে আস্তে আস্তে বদলে যেতে থাকলো । আগে যতটুকু আমাকে নিয়ে চিন্তা করত ক্রমশ তা ফিকে হয়ে গেল। সে শুধু নিজেকে নিয়েই ব্যস্ত থাকতো। আমার বাবা-মার মধ্যে কোন দৃঢ় বন্ধন ছিল না। যেটা প্রত্যেক স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে থাকা দরকার। দুজনের মধ্যে না ছিল কোন ভালোবাস, না ছিল কোন শ্রদ্ধা, না ছিল কোন বিশ্বাস, আমার দিদা জোর করে আমার বাবার সঙ্গে আমার মায়ের বিয়ে দিয়েছিল। আমার বাবার মতে,আমার মা ছিল নির্গুণা মহিলা। বাবা বিয়ের আগে তাদের তিন বোনকে টিউশন পড়াতে যেত। এবং পড়াতে গিয়ে সে ষড়যন্ত্রের শিকার হয়েছে এবং একরকম বাধ্য হয়ে আমার মাকে বিয়ে করেছিল। সে কারণে আমার বাবা-মার মধ্যে কোন মানসিক বন্ধন তৈরি হয়নি। শুধুমাত্র আমার বাবা কেন্দ্রীয় সরকারি চাকরি করত বলে তার টাকা পয়সার লোভে এই বিয়ে দিয়ে, আমার দিদা তার বাকি দুই মেয়েকে এবং সাথে ছেলেটার একটা বন্দোবস্ত করতে চেয়েছিল। ছোটবেলা থেকে দেখতাম বাবা-মার মধ্যে তুমুল ঝগড়া মারামারি হচ্ছে। আমার বাবার মুখের ভাষা ভালো ছিল না। খুব নোংরা গালাগালি করা ছিল তার স্বভাবের একটি বৈশিষ্ট্য। তাদের নোংড়ামি দেখে দেখে আমি বড় হয়েছি। আমার মাও কিন্তু খুব একটা কম যেত না সে এতটাই নোংরা স্বভাবের ছিল যে তার ভাই, দুই বোন এবং আমাদের বাড়ির আশেপাশের কিছু লোককে দিয়ে আমার বাবাকে অপমান করে এবং মার খাওয়ায়।যাই হোক, বড় হবার পর তারা প্রচার করে পাড়ায়, আমি তাদের খুব অত্যাচার করি। তারা আমার ছোট ছোট দাবি ও আবদার গুলোকে সর্বসময় অত্যাচার হিসেবে নিত। আমার অত্যাচারে তারা অতিষ্ঠ। বাবা মারা যাবার পর থেকেই সে একটু একটু করে বাবার সমস্ত টাকা পয়সা ব্যাংক পোস্ট অফিস থেকে শুরু করে যাবতীয় নথিপত্র কাগজপত্র তার ভাইয়ের মাধ্যমে সরিয়ে ফেলে এবং সবাইকে প্রচার করে আমার অত্যাচারে বাড়ি ছাড়া হয়েছে। আমার একটাই প্রশ্ন আপনাদের কাছে আছে, কেউ যদি কাউকে অত্যাচার করে তাহ্লে অত্যাচারী ব্যাক্তি কি সমস্ত সম্পত্তি নিয়ে পালাতে পারে? যাইহোক, ছোটবেলা থেকে এই মায়ের নানান কাজকর্ম আর অন্যান্য মায়েদের থেকে সম্পূর্ণ আলাদা ছিল। আমি যখন তাঁর জারিজুরি বুঝতে শুরু করি, তখন অনেক দেরি হয়ে গেছে। সবকিছুই আমার হাতের বাইরে চলে গেছে। আমার বাবা অবসর গ্রহণের পর থেকে তার আমার প্রতি প্রতিশোধ স্পৃহা যেন বাড়তেই থাকে। একটু বলে রাখি এখানে আমার বাবা যখন অবসর গ্রহণ করে তার পর থেকে এই মায়ের এই দুই বোন প্রায় প্রতিদিনই আমাদের বাড়িতে সকালবেলায় আসতো, তাদের নাকি সবজি বেশী হয়ে্ যেত। তারা এত সবজি কিনেছে যে সবজি দিতে আসতো (প্রায় যাতায়াত ৬ কিমি পথ)। আমার বাবা এতটা কৃপণ মানুষ ছিল, যদি কেউ কিছু দিত তাহলে সে খুব খুশি হতো। কিন্তু আমার মনের মধ্যে মাঝে মাঝে সন্দেহ হতো, যে কেন তারা এরকম মাঝে মাঝে সব্জি আমাদের বাড়িতে নিয়ে আসত। তাড়াতাড়ি করে আমার মা নিয়ে লুকিয়ে রেখে দিতে। ওটাও আমার কাছে খুব সন্দেহের কারণ হত। হঠাৎ একদিন আমি খুঁজে পেলাম যে সবজির মধ্যে একটা সাদা সরষের প্যাকেট।তা তারা প্রায়ই দিত এবং আমার কাছে ধরা পরত। এর কারণ কি আমি জানিনা, হয়তো কোন তান্ত্রিক ক্রিয়ার মাধ্যমে আমার বাবার মন আমার থেকে দূরে সরানোর চেষ্টা করেছিল এবং তাকে সম্পূর্ণ ভাবে করায়ত্ত করার চেষ্টা করেছিল। সকাল বিকাল আমার কোনো নূ্ন্যতম টিফিন ছিল না। অনেক বেলায় আমি সামান্য ভাত আর একটা আলু সিদ্ধ পেতাম, কিন্তু ওই দিন (২৯শে সেপ্টেম্বর ২০১৩) সকাল ১১.৩০ মিনিট অবধি আমি কিছু টিফিন পেলাম না।ক্ষুধার জ্বালায় আমার গ্যাসের সৃষ্টি হতে লাগল।তখন আমি দেখলাম সবে ভাত নামল। আমার ওই দেখে মাথা গরম হয়ে গেল, আমি তাই দেখে হাঁড়ি মাটিতে উল্টে দিলাম। একদম ভগবানের দিব্যি করে বলছি যে এই সামান্য ঘটনাটাই ঘটেছিল,অথচ আমার মা হাউমাউ করে বেরিয়ে গিয়ে পাড়ার ছেলেদের কাছে গিয়ে বলে, যে তার গায়ে আমি নাকি গরম ফ্যান ঢেলে দিয়েছি। যেহেতু আমার বাবা , মা পাড়ায় অনেক আগে থেকেই আমার সম্বন্ধে খারাপ ধারনা, লোকেদের দিয়েছে তাই আমি মিথ্যাবাদী হলাম আর পাড়ার ছেলেরা তাদের কথাই বিশ্বাস করল, তারপর তারা এসে আমাকে মারধোর দিল। (সেই মারের ফলে আজ আমার একটি চোখ ভীষন ভাবে ক্ষতিগ্রস্থ।জানিনা ভব্যিষতে এই চোখের কি হবে???) তারপরে পুলিশ আসে থানায় নিয়ে যায় এবং থানাতে তার গায়ে কোথায় ফ্যান ফেলেছি পুলিশ তা দেখতে চায়, কিন্তু সে তা দেখাতে পারেনি। তারপর বিকেল বেলার দিকে আমার হবু বউ এবং আমার পিসি গিয়ে আমাকে থানা থেকে উদ্ধার করে ।পিসি তাদের বাড়িতে নিয়ে যায়। আমার বাবা-মার কিন্তু কোনো হেলদোল নেই। সকালবেলা থানায় দিল কিন্তু তারপরে কি হলো কোনো হেলদোল নেই এবং কোনো অনুশোচনাও ছিল না ।
আমাকে তাড়ানোর জন্য তারা উঠেপড়ে লাগে, আমি বলতাম আমি এত বছর পর কোথায় যাব? তোমরা আমাকে আমার ঠিকানা বলে দাও আমার আসল বাবা মায়ের ঠিকানা বলে দাও আমি সেখানে চলে যাব। কিন্তু সে সম্পর্কে কোনো তথ্য তারা দেয়নি। কিন্তু জিজ্ঞাসা করলেই বলতো জানিনা। আমাকে দত্তক নেওয়ার আইনি কাগজপত্র তাদের কাছে ছিল না। তারা না আমাকে আমার আসল বাবা-মার কাছে পৌঁছে দিলো না তারা ভালো বাবা মার মত আমাকে ভালবাসল বিশ্বাস করল, না আমাকে জীবনে প্রতিষ্ঠিত হতে সাহায্য করলো।ছোটবেলা থেকেই আমার মন মানসিকতা নিয়ে খেলা করে গেল। একটা নিষ্পাপ ফুটফুটে জীবনকে তারা ধীরে ধীরে হত্যা করে দিল। আমি বেঁচে থেকেও আছি আর পাঁচটা ছেলের থেকে আলাদা। সারা পাড়া-প্রতিবেশী আত্মীয় স্বজন বন্ধুবান্ধবের কাছে আমার সম্বন্ধে দীর্ঘ দিন মিথ্যা কথা বলে আমার সামাজিক ভিত একেবারে নষ্ট করে দিয়েছে। সারা পাড়ায় বলে বেড়াতো আমি তাদের অত্যাচার করি, আমার অত্যাচারের জন্য তাদের অবস্থা খুব খারাপ। আমি সেভাবে কোনদিন কারো কাছে কিছু বলতাম না তাদের সম্বন্ধে। কারণ আমি তাদের মা-বাবা বলে মনে করতাম, কেননা আমি ছিলাম নিষ্পাপ মাটির নরম ঢেলা, কিন্তু তারা ছিল বয়সে অনেক পরিণত এবং তাদের মন মানসিকতা ছিল খুবই প্রফেশনাল ।আমার বাবা মারা গিয়েছে কিন্তু আমার মা এখনো তার খেলা চালিয়ে যাচ্ছে আজ ২০২৪।
আমার মা গত ৭ই অক্টোবর ২০১৫ তে বাড়ি ছেড়ে চলে যাওয়ার আগেও একবার চলে যায় জুন মাসে, তখন আমার স্ত্রী বাপের বাড়িতে ছিল সে শুনতে পেয়ে সঙ্গে সঙ্গে বাড়ি আসে। বাড়ি এসে আমার মাকে ফোন করে মায়ের দুই বোন ফোনের পাশে দাড়িয়ে আমার স্ত্রীকে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করে সেবার আমার স্ত্রী কান্নাকাটি করে তাকে বাড়ি ফিরিয়ে আনে কিন্তু কিছুদিন থাকার পর আবার সে পাকাপাকিভাবে গত ৭ অক্টোবর ২০১৫ তে চলে যায়। বাড়িতে থাকা তার পক্ষে সম্ভব ছিল না কেননা টাকা-পয়সা সোনাদানা সবকিছুই ছিল তার ভাইয়ের আলমারিতে ছোট ছোট বিষয় ঝগড়া করত ঝগড়া করার ফলে লোক জড়ো হয়ে যেত। বাড়িতে সে পাড়ার লোকের সামনে স্বীকার করেছিল যে সমস্ত টাকা-পয়সা সম্পত্তির ভাইয়ের আলমারিতে রেখেছে, এইবার চলে যাওয়ার পরের দিন সে থানায় একটা অভিযোগ জানায়। থানা থেকে পুলিশ এসে আমাকে , স্ত্রীকে এবং আমার সাত মাসের সন্তানকে থানায় নিয়ে যায় আমি আমার সাত মাসের মেয়েকে নিয়ে থানায় থানায় গেলে থানার বড়বাবু বলেন যে, তুমি নাকি তোমার মায়ের বেশ কিছু দরকারি নথিপত্র নিয়ে নিয়েছো আমি বললাম না আমি তো আমার মায়ের কোন কিছু নেই নি তারপর আমাকে কিছু জিজ্ঞাসাবাদ করার পর ছেড়ে দেয়। বাড়ি থেকে যাওয়ার পরে শুধু এই নয় সে রেশন কার্ড অব্দি বন্ধ করে দেয়। এই করোনা মহামারীতে সরকার থেকে যে ফ্রিতে রেশন ব্যবস্থা করেছে সাধারণ মানুষের জন্য তার কার্ড বন্ধ করে দেওয়ার জন্য আমরা তার বরাদ্দ ন্যূনতম চাল-ডাল বিগত ২০২০ মার্চ মাস থেকে পেয় ২০২২ শেষ অবধি কিছুই পাই নি। । শুধু এই নয় সে যাবার পরে গ্যাসের বইটিও বন্ধ করে দিয়ে চলে যায়। যাতে আমরা গ্যাস সিলিন্ডার না পাই।
বাড়ি ছেড়ে চলে যাবার পর আমার কাকা পিসিরা তাকে অনেক ভাবে বোঝানোর চেষ্টা করে বাড়ি ফেরানোর জন্য কিন্তু সে ভাই বোনকে ছেড়ে আসতে চায় না । প্রতি মাসে পেনশনের টাকার কিছুই আমাকে দিচ্ছিল না আমার কাকা পিসিদের বহু অনুরোধে সামান্য কিছু টাকা দিতে রাজি হয়, তাও চলে যাবার সাত –আট মাস পর থেকে। তার ভাই প্রতি মাসে পোস্ট অফিস থেকে পেনশন নিয়ে যেত কিছু টাকা আমার বাবার বন্ধুর হাতে দিয়ে যেত আমাদের দেওয়ার জন্য কিন্তু করোনা মহামারী শুরুর কয়েক মাস আগে থেকে সেই কাকা মানে আমার বাবার বন্ধু টাকা দিতে আসতে পারব না বলে টাকা দেওয়া বন্ধ করে দেয়,। তারপর থেকে দীর্ঘ বছর খানেক যাবৎ আমি আর কোন টাকা পেতাম না । বাড়ি ছেড়ে চলে যাবার পর বহু হিতাকাঙ্খী, শুভাকাঙ্ক্ষী এবং আমার কাকা পিসিরা তাকে জিজ্ঞাসা করেছে এই যে আপনি সব টাকা-পয়সা সোনাদানা নিয়ে পালিয়ে ভাই বোনের কাছে বসে আছেন আপনার ছেলে এসব টাকা সম্পত্তি কি পাবে না? তখন সে সেই কথার কোনো উত্তর দিত না। এই করোণা মহামারীর কালেও সে বলছে যে ছেলে খেটে খাক আমি এক পয়সাও দিতে পারবোনা। আমার দোকানের অবস্থা খুব খারাপ আমার মেশিনপত্র গুলো খারাপ হয়ে গেছে দোকানের উপর থেকে বৃষ্টির জল পড়ে। আমি কি করবো এই অবস্থায় কিছু জানিনা। তার ৬৫ বছরের ভাই সারা জীবনে কিছু না করে এখন এই বয়সে এসে বউ-বাচ্চাকে নিয়ে দিদির টাকার কাছে এসে আশ্রয় নিয়েছে। বাবা মারা যাওয়ার আগে থেকেই বাড়িটার অবস্থা খুব একটা ভালো ছিল না বাড়িটা যেকোন সময় ভেঙে পড়ার উপক্রম হয়েছিল আমি বন্ধু-বান্ধবের থেকে টাকা ধার নিয়ে এবং আমার পরিচিত দুই একজন বিশ্বস্ত লোকের কাছ থেকে কিছু টাকা ধার নিয়ে বাড়িটা আমি মেরামত করি এছাড়াও যাবতীয় সমস্ত বাড়ি রক্ষণাবেক্ষণ গুলি করি তাতে আমার বেশ কিছু বাজারে ধার হয়েছে, সেই টাকাও আমি শোধ করতে পারছিনা বর্তমানে আমার অর্থনৈতিক সমস্যা খুবই মারাত্মক আকার নিয়েছে চারিদিকে যে সমস্যা চলছে তাতে করে আমার মত এক ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীর কাছে দিনযাপন করা খুবই দুস্কর হয়ে উঠেছে আমার বাবার টাকা থাকা সত্ত্বেও এখনো পর্যন্ত আমার মা তা থেকে আমাকে বঞ্চিত করে রেখেছে।
এটা ২০২১ সালের মাঝামাঝি অবধি। বিগত প্রায় তিন বছরের গল্প আরো বাকি।
আমি শ্রুতি লেখক মাত্র। আমি গুল্লুকে চিনি প্রায় ৪০ বছর। বিগত ২০বছর ধরে আমি গুল্লুর জীবনের অনেক রহস্য উদ্ঘাটন করেছি। আপননারা জানতে চাইলে পরে আবার দিব। গুল্লুর একটা কথা আমার হৃদয়ে সরাস্রি লেগেছিল, তা আপনাদের সাথে শেয়ার করি। " দোস্ত আমি যদি মারা যাই, তুই আমার মৃত্যুর তদন্ত করাবি।"

গুল্লুর সঙ্গে সরাসরি যোগাযোগ।
ইমেইল- [email protected]




সর্বশেষ এডিট : ০৭ ই জুলাই, ২০২৪ রাত ১০:২০
০টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

পাগলের প্রলাপ' যখন সত্যি হয়......

লিখেছেন জুল ভার্ন, ০৭ ই সেপ্টেম্বর, ২০২৪ সকাল ১০:১৯

'পাগলের প্রলাপ' যখন সত্যি হয়......
[/সব

আমার এক মামা ততকালীন পূর্ব পাকিস্তানে হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টালে জব করতেন হোটেলের শুরু থেকেই। সেই মামা মাঝেমধ্যে আমাদের জন্য হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টাল থেকে মুখরোচক কেক, পেস্ট্রি ছাড়াও বিভিন্ন... ...বাকিটুকু পড়ুন

তার চাওয়া পাওয়ার কিছু ছিল না, তবুও

লিখেছেন খাঁজা বাবা, ০৭ ই সেপ্টেম্বর, ২০২৪ দুপুর ১:৩২



শেখ হাসিনার নাকি বায়ক্তিগত চাওয়া পাওয়ার কিছু ছিল না। শেখ মুজিবের বেয়ে নাকি দুর্নীতি করতে পারে না। সে এবং তার পরিবার যে হাজার হাজার কোটি টাকার দুর্নীতি করতে পারে... ...বাকিটুকু পড়ুন

দেশের বর্তমান পরিস্থিতি সংক্রান্ত বিষয়ে সামু কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি

লিখেছেন সাড়ে চুয়াত্তর, ০৭ ই সেপ্টেম্বর, ২০২৪ বিকাল ৩:৪৬

ছাত্র-জনতার সম্মিলিত অভ্যুত্থানের মাধ্যমে গত ৫ আগস্ট, ২০২৪ তারিখে ফ্যাসিস্ট হাসিনা এবং তার দলের পতন ঘটানো হয়। এটা আমাদের একটা জাতীয় গৌরবের দিন। এটা নিয়ে কারও সন্দেও থাকলে মন্তব্যে লিখতে... ...বাকিটুকু পড়ুন

জ্বীনভুতে বিশ্বাসী বাংগালী ও ঢাকায় ৫০ হাজার ভারতীয় একাউন্টটেন্ট

লিখেছেন সোনাগাজী, ০৭ ই সেপ্টেম্বর, ২০২৪ বিকাল ৪:৩৩




ব্লগার সাড়ে চুয়াত্তর ব্লগে লিখেছিলেন যে, উনার ভগ্নিপতিকে জ্বীনেরা তুলে নিয়ে গিয়েছিলো; ২ সপ্তাহ পরে ভগ্নিপতিকে দিয়ে গিয়েছে; এই লোক, সামুর কাছে আমার বিরুদ্ধে ও অন্য... ...বাকিটুকু পড়ুন

বেছুর নিজস্ব একটি জ্বীন ছিলো!

লিখেছেন সোনাগাজী, ০৭ ই সেপ্টেম্বর, ২০২৪ রাত ৮:২৪



আমাদের গ্রামের খুবই সুশ্রী ১টি কিশোরী মেয়েকে জংগলের মাঝে একা পেয়ে, প্রতিবেশী একটা ছেলে জড়ায়ে ধরেছিলো; মেয়েটি ঘটনাকে সঠিকভাবে সামলায়ে, নিজের মাঝে রেখে দিয়েছিলো, এটি সেই কাহিনী।... ...বাকিটুকু পড়ুন

×