ভারতের সেনাবাহিনী আজ(রোববার ) দেশটির উত্তরপূর্বাঞ্চলীয় পদাতিক ব্যাটেলিয়নে কথিত বিদ্রোহের গুজব অস্বীকার করেছে। রুটিন ট্রেনিং চলাকালে এক জওয়ানের মৃত্যুকে কেন্দ্র করে এ বিদ্রোহের খবর সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমগুলোতে প্রচারিত হয়েছে।
অবশ্য সেনাবাহিনী স্বীকার করেছে, অরুণাচল প্রদেশে ১০ কিলোমিটার রুট মার্চের সময়ে আজ এক জওয়ানের মৃত্যু ঘটলে তার সহকর্মীরা “আবেগ তাড়িত” হয়ে উঠে এবং এতে এক সেনা কর্মকর্তা আহত হয়েছেন।
সেনা কর্মকর্তারা বলেছেন, রুট মার্চের আগে জওয়ানটি বুকের ব্যথা অনুভব করার কথা বলেছিল। অবশ্য সেনা ইউনিটের চিকিৎসক তাকে পরীক্ষা করে স্বাস্থ্যগত কোনো সমস্যা পায় নি এবং তাকে রুটমার্চে যোগ দেয়ার উপযুক্ত বলে ঘোষণা করেন। কিন্তু মার্চের সময় এ জওয়ান জ্ঞান হারিয়ে ফেলে এবং ফিল্ড অ্যাম্বুলেন্সে নেয়ার পর তার মৃত্যু ঘটে।
এ ঘটনায় চার থেকে পাঁচ জওয়ান আবেগ তাড়িত হয়ে উত্তেজিত হয়ে ওঠে এবং সামান্য ধ্বস্তাধস্তি হয় বলে ভারতীয় প্রতিরক্ষা বাহিনীর মুখপাত্র লে কর্নেল সুনিত নিউটন জানান। তিনি বলেন, ধ্বস্তাধস্তির সময়ে এক সেনা কর্মকর্তা সামান্য আহত হয়েছেন।
গত পাঁচ থেকে ছয় বছরের মধ্যে এ নিয়ে পঞ্চম দফা ভারতীয় সেনাবাহিনীতে সামরিক শৃঙ্খলার বিঘ্ন ঘটল। ২০১৩ সালে মুষ্টিযুদ্ধের প্রতিযোগিতাকে কেন্দ্র করে মিরাটে মোতায়েন শিখ লাইন ইনফ্যান্ট্রি রেজিমেন্টের সেনা কর্মকর্তা ও জওয়ানদের মধ্যে সংঘর্ষে সেকেন্ড-ইন-কমান্ডসহ দুই সেনা কর্মকর্তা আহত হয়েছিলেন। ভারতের তৎকালীন সেনাপ্রধান জেনারেল বিক্রম সিং এই শিখ লাইট ইনফ্যান্ট্রির সঙ্গে যুক্ত ছিলেন।
এ ছাড়া, ২০১২ সালের ৮ আগস্ট ভারত নিয়ন্ত্রিত জম্মু ও কাশ্মিরের সাম্বা জেলায় মোতায়েন সাঁজোয়া ইউনিট সিক্সটিনথ লাইট ক্যাভালরি'র এক সেনার আত্মহত্যার ঘটনাকে কেন্দ্র করে প্রায় বিদ্রোহ পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছিল। এ ঘটনার পর ওই ইউনিটের সব সেনা কর্মকর্তাকে সরিয়ে নেয়া হয় এবং পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের জন্য তড়িঘড়ি করে ওই এলাকায় দু'টি সেনা ইউনিট পাঠানো হয়েছিল।
একই বছরের ১০ ও ১১ মে চীন সীমান্তবর্তী লাদাখে মোতায়েন ২২৬ রেজিমেন্টের জওয়ানরা কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ করেছিল। ভারতীয় সেনা কর্মকর্তা ও জওয়ানদের মধ্যে গোলাগুলি বিনিময়ের ৪৮ ঘণ্টা পর ভারতীয় সংবাদ মাধ্যমে এ বিষয়ে বিস্তারিত বিবরণ প্রকাশিত হয়। ওই ঘটনায় ইউনিটের কমান্ডিং অফিসার, দুই মেজর এবং দুই জওয়ান মারাত্মক আহত হয়েছিল। মেজরের স্ত্রী’র এক জওয়ানের অসভ্য আচরণকে কেন্দ্র এ সেখানে এ পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছিল।
২০১২ সালে ১৬ ক্যাভেলারিতে সেনা কর্মকর্তা- জওয়ানদের মধ্যে গোলযোগের জেরে ৬০ সেনার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হয়।
২০১০ সালের ২৯ এপ্রিলে গুরুদাসপুরে মোতায়েন ৪৫ ক্যাভালরি ইউনিটের সেনাকর্মকর্তা ও জওয়ানদের মধ্যেও হাতাহাতি হয়েছিল।
এমবিফয়েজ/১৬
সর্বশেষ এডিট : ১৬ ই মে, ২০১৬ রাত ১২:৪৪