বহু বিঘ্ন পেরিয়ে অবশেষে আমি পৌঁছলাম প্রজাপতিদের গ্রামে। এখানে কোনো কিছুর ছায়া হয় না। এক প্রহরের বেশি থাকারও নিয়ম নেই। মাঠের মধ্যে কতগুলো রঙিন অন্তর্বাস শুকোচ্ছে রোদে। কোনো জনমনিষ্যি নেই, এগুলো দেবীদের কিনা কে জানে! একটা ফলকে দেখলাম লেখা আছে : এইমাত্র-ছেঁড়া একটা বটপাতায় যতটুকু ধরে, খুঁজে নিয়ে শিগগির পালাও।
এসব যে ঘটবে, আমাকে যে পাঠিয়েছে, আগেই বলে দিয়েছিল। কী কী নিতে হবে, সেটাও। এই ধরো--একটা ডুমুর, আর সে-ই আংটি--যা ঘষা দিলে দৈত্য বেরিয়ে আসে। খুঁজে পাওয়া সম্ভব হলে আর নিতে হবে দেশলাই বাক্সের মতো দেখতে একটা বাদামি-পুস্তক, যার ভেতরে অক্ষর-না-চেনা-লোকের ভাষায় লেখা আছে গাছেদের সঙ্গে কথা বলার পদ্ধতি।
কতদিন ধরে ভাবছি, নিজের আহ্লাদগুলো সেরে নেব প্রথমে। কথা বলবো ডুমুর গাছের সঙ্গে, জেনে নেব সে আমার গতজন্মের বাল্যবন্ধু কিনা। একটি ডুমুর ফলের মূল্য কত হাজার কোটি টাকা, এসবও জানবো। আংটির দৈত্যকে বলবো, সেইরকম একজনকে এক্ষুনি বানাও, যার জন্য আমি কাঁদি--আর আমার আত্মার ভেতরে ঢুকে নীল মাছিগুলোকে তাড়িয়ে বের করে দাও এক মুহূর্তের মধ্যে।
যে আমাকে পাঠিয়েছে, বলেনি শুধু সেই ভয়ংকর ও জরুরি তথ্যটি, যে, কী পরিমাণ ঘড়েল এখানকার বটগাছগুলো। একটা পাতা, একটা পাতাই তো--তাই না? কত অনুনয় বিনুনয় করলাম, পা পর্যন্ত ধরতে চাইলাম, তবু, শালারা কোনো কথাই শুনছে না। কাছে যাওয়া মাত্রই “দূর হ হতভাগা” বলে তাড়িয়ে দিচ্ছে।
এখানে থাকার সময় ফুরিয়ে এলো প্রায়।