১২ই ডিসেম্বর ২০১৩। সকল জল্পনা, কল্পনা, ষড়যন্ত্র এবং বিদেশী বেনিয়াদের হুমকিকে থোড়াই কেয়ার করে স্বাধীন সার্বভৌম বাংলাদেশে কার্যকর করা হয় ১৯৭১ এর মুক্তিযুদ্ধ চলাকালীন সময়ের কুখ্যাত রাজাকার “কসাই কাদের” খ্যাত কাদের মোল্লার ফাঁসির রায়। এই দেশীয় এক পাকিস্তানী সহচরের।মুক্তিযুদ্ধের ৪২বছর পর স্বজন হারানো পরিবারগুলো বিচার পায় তাদের স্বজনদের নৃ:শংস হত্যাকান্ডের।
পাকিস্তানী সহচর বলার সাথে সাথেই জামাত-বিএনপি এবং তথা-কথিত সুশীলরা একে আওয়ামী রাজনীতির একটা নোংরামীর অংশ হিসেবে একে যুক্তি খন্ডনের চেষ্টা করতেন। কিন্তু ১৯৭১ এর পরাজিত পাকিস্তান যে শুধূমাত্র আত্ন-সমর্পন করে সত্যিকারের স্বাধীনতাকে মেনে নেয়নি বরং এই পরাজয়ের প্রতিশোধ হিসেবে এই জাতির উপর প্রজ্জ্বলিত করেছিল হিংস্রতা এবং বর্বরতার লেলিহান শিখা; সেই শিখায় এখনও পুড়ছে মানুষ। মরছে মানুষ। এরা সবাই বাঙালী। এই স্বাধীন সার্বভৌম বাংলাদেশের নাগরিক। কিন্তু কেন? কিভাবে? ১৯৭১ এর ১৬ই ডিসেম্বরের পর তো এই দেশের সকল সরকার প্রধান এবং রাজনৈতিক, সামাজিক, অর্থনৈতিক সবকিছু পরিচালনা করেছে এই দেশে জন্ম নেয়া নাগরিক সমাজ। কোন পাকিস্তানী তো আসে নাই। কেন তাদের বার বার হেয় করা হয়? কেন উদোর পিন্ডি বুধোড় ঘাড়ে চাপানোর এই নগ্ন অপ-প্রয়াস?
এর উত্তর খোঁজার জন্য বেশিদূর যেতে হবেনা। কাদের মোল্লা এই দেশের পাসপোর্ট ধারী নাগরিক। তার জন্ম এই দেশে। তাকে ফাঁসির দন্ডাদেশ দেয়ার সাথে সাথে পাকিস্তান জামাতে ইসলামের পেজ তার ছবি সম্বলিত শোকবানী প্রচার করল। পাকিস্তান জাতীয় সংসদে পর্যন্ত শোকপ্রস্তাব করা হল। কিন্তু কেন? যে দেশে প্রতিদিন ড্রোন হামলায়, তালেবান সহ অন্যান্য জঙ্গী হামলায় হতাহত হচ্ছে সে দেশের শতশত নাগরিক, তাদের নিয়ে তো কোন শোকপ্রস্তাব করা হয়নি। তবে অন্য একটি রাষ্ট্রের নাগরিকের মৃত্যুকে কেন্দ্রকরে কেন শোক প্রস্তাব? একটি রাষ্ট্র শোক প্রস্তাব কোন শ্রেনীর নাগরিক বা ব্যক্তির জন্য করা হয়? তবে কি কাদের মোল্লা পাকিস্তানের দ্বৈত নাগরিক ছিলেন? তিনি কি পাকিস্তানের পররাষ্ট্র বিষয়ক নীতি নির্ধারনী কোন গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি ছিলেন?
কাদের মোল্লা’র জন্য পাকিস্তান সরকারকে যদি এই দেশ আবারো আক্রমন করতে বলা হয়ে থাকতে পারে এবং আমাদের দেশের তথাকথিত বিরোধী দলীয় নেত্রী নির্বিকার ভাবে তা মেনে নিতে পারেন তাহলে যদি ঐ বিরোধী দলীয় নেত্রীর সত্যিকারের পরিচয় এবং তার ভাষায় “সামঝোতা”র বুলিগুলো কোথা থেকে আসে বলে প্রশ্ন করি তাহলে কি খুব ভূল হবে?
একজন বাঙালী হিসেবে চিন্তা করুন, গোলাম আজম, নিজামী, মুজাহিদরা তাহলে কোন স্ট্যাটাস এবং প্রটোকল গ্রহন করে এই দেশে রয়েছে এবং পাকি এজেন্ডা বাস্তবায়ন করছে? তাদের লালন-পালনকারী দের এখনই সময় সমূলে উৎপাটন করা।
যুদ্ধ অবসম্ভাবী। ১৯৭১ সালে যুদ্ধ ছিল আংশিক। পাকি এজেন্ডা এবং তাদের তাবেদারদের এই দেশে থেকে বিতাড়িত এবং এখনও যারা এই দেশের খেটে খাওয়া মানুষগুলোকে নৃশংস ভাবে পুড়িয়ে মারে আর মুখে গনতন্ত্রের বুলি আওড়ায় তাদের পুটকি দিয়ে গনতন্ত্র ভরে পাকিস্তানে পাঠিয়ে দেয়া কি আমাদের কর্তব্য নয়?