somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

কোটা আন্দোলনের ঘটানটা কিন্তু খুব সহজেই সামাল দেয়া যেত।

১৮ ই জুলাই, ২০২৪ রাত ১:৫৪
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

ঘটানটা কিন্তু খুব সহজেই সামাল দেয়া যেত।

আন্দোলনকারীরা আন্দোলন করছে যাতে কোটা পদ্ধতি সংস্কার করা হয়।
যতদূর জানি, সরকারও এর পক্ষে। ২০১৮ সালে কোটা বাতিল করেছিল, আদালতে এ নিয়ে মামলা চলছে।

যা বুঝলাম তা হচ্ছে মূল সমস্যা সরকার চায় মুক্তিযোদ্ধাদের নাতিদের জন্যও কোটা ধরে রাখতে, আর সাধারণ শিক্ষার্থীরা বলছে যে না, মুক্তিযোদ্ধা ও ওদের সন্তানদের জন্য কোটা ঠিক আছে, কিন্তু নাতিদের জন্য একটু বেশিই হয়ে যায়। ৫৬% কোটা ধরে রাখা সাধারণ মানুষের জন্য জুলুমের সমান। এই %কে কমিয়ে আনতে হবে, যৌক্তিক হতে হবে। কেউই বলছে না নারী, প্রতিবন্ধী কোটাগুলি বাতিল করতে। বুঝতে হবে যে এদের আন্দোলন কেবলই চাকরি পাওয়ার আন্দোলন না, এদের আন্দোলন রাষ্ট্রের প্রতিটা নাগরিকের সমান অধিকারের আন্দোলন। সমাজে প্রচলিত আধুনিক বর্ণবাদ, পরিবারতন্ত্র ইত্যাদি থেকে বেরিয়ে আসার আন্দোলন। এদের মূল লক্ষ্য ঋত্মিক রোশনের সুপার থার্টি সিনেমার সেই মাস্টারজির মতন, "রাজার ছেলে হলেই রাজা হবেনা। যোগ্যতর কেউ হবে।"

প্রধানমন্ত্রী নিজেই পরিবারতন্ত্রের প্রোডাক্ট বলে উনি বিষয়টা বুঝবেন না।

মুক্তিযুদ্ধের ভুয়া সার্টিফিকেটের ঘটনা আমরা সবাই জানি। হাজার হাজার লোকে জাল সার্টিফিকেট নিয়ে ঘুরছে। আবার অন্যদিকে হাজার হাজার প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধা অভিমানে সার্টিফিকেট নেননি। এমন অবস্থায় "নাতির কোটা" কতটা যৌক্তিক?

সরকারের পক্ষ থেকে লোকজন গিয়ে আন্দোলনকারীদের সাথে বসে সহজেই সমস্যার সমাধান করতে পারতো। কিন্তু তা না করে প্রধানমন্ত্রী বলে বসলেন "মুক্তিযোদ্ধাদের সন্তানদের চাকরি না দিয়ে তাহলে কি রাজাকারের বাচ্চাদের চাকরি দিব?"
কথাটা যে যতই সুগারকোটিং করুক না কেন, রাষ্ট্রের অভিভাবকের কণ্ঠ থেকে বেরিয়ে আসা গালি ছাড়া আর কিছুই মনে হয়না। তাই শিশু কিশোররা ক্ষেপে গিয়ে বলল, "তুমি কে আমি কে? রাজাকার রাজাকার! কে বলেছে কে বলেছে? স্বৈরাচার, স্বৈরাচার!"

স্লোগানে এইসব শিশু কিশোরদের বুকফাটা অভিমান ফুটে উঠছে।
নিজের বাবা মা যদি কাউকে জারজ সন্তান বলে গালি দেয়, তাহলে যেমনটা লাগে, এখানেও ঘটনা তাই। এখানে শব্দ চয়নে আমাদের প্রধানমন্ত্রীর কি আরও বিচক্ষণ হওয়া উচিত ছিল নয় কি?

এদিকে আওয়ামীলীগ/ছাত্রলীগ ঘটনাকে আরও ঘোলাটে করলো। ওরা বাচ্চাদের স্লোগানের কেবল প্রথম অংশ কোট করে ঘৃণ্য রাজনৈতিক চাল চাললো। আমাদের মহান মুক্তিযুদ্ধকে যেভাবে বরাবর মিসইউজ করে, এইবারও তাই করে বলল "এরা স্বঘোষিত রাজাকার! এরা দেশের শত্রু। পাকি জারজ।"
ইন্ধন যোগালেন আমাদের "বুদ্ধিজীবী" ড. মুহম্মদ জাফর ইকবাল। তিনি আগা মাথা না বুঝে, কিছুই না জেনে বলে বসলেন "এদেরতো চাকরি পাওয়া দূরের কথা, দেশেই থাকার অধিকার নেই।" "বাকি জীবনে আর ঢাবিতে যেতে চাই না, ওদের দেখলেই মনে হবে ওরাই সেই রাজাকার!"

বেনিফিট অফ ডাউট দিতেই বললাম তিনি আগা মাথা না বুঝে, না জেনে বলেছেন। যদি সব জেনেবুঝে করে থাকেন, তাহলে উনার চেয়ে বদমাইশ, বুইড়া শয়তানের হাড্ডি এই দুনিয়ায় কেউ নেই। উনাকে এককালে খুব শ্রদ্ধা করতাম। কিন্তু গতকাল থেকে আমার সেই বিশ্বাস আর নেই।

এরপরের ঘটনা আমরা সবাই জানি।
ছাত্রলীগ যুক্ত হলো, সেই শিশু কিশোরদের নিরাপদ সড়ক চাই আন্দোলনের মতন দমন পীড়ন শুরু হলো, পুলিশ যুক্ত হলো ছাত্রলীগের ইউনিফর্মধারী একটি শাখা হিসেবে। রক্ত ঝরলো, ভাংচুর হলো, এ ওকে মারলো, সে তাকে মরলো। এখন ব্যাপারটা চলে গেছে পয়েন্ট অফ নো রিটার্নে। এখন আর ফেরার পথ নেই।
অথচ আসলেই ব্যাপারটা খুব সহজেই সমাধান করা যেত।

এখন যদি প্রধানমন্ত্রী আলোচনায়ও ডাকেন, ছাত্র ছাত্রীদের মাথায় থাকবে এই মহিলার হাতে আমাদের ভাইদের রক্ত লেগে আছে। ওদের রক্ত কি বৃথা যাবে?
প্রধানমন্ত্রীর মাথায় থাকবে তাঁরই দলের কিছু ছেলেকে ছাদ থেকে ছুড়ে ফেলেছে এদের দলের কিছু ছেলে পিলে। যদিও বনের মশা কয়টা মরলো তাতে বনের রাজার কিছুই যায় আসেনা, তবুও সেই মশার পরিবারের লোকজনের কাছেতো সে আর ফেরত আসবে না। মশাগুলোর জন্য মায়া হয়। একটাই মানব জীবন, বহু সাধনার ফল। পৃথিবীতে এরচেয়ে দামি আর কিছুই হতে পারেনা। অথচ কত ফালতু কারনে নষ্ট হলো।
সর্বশেষ এডিট : ১৮ ই জুলাই, ২০২৪ রাত ১:৫৪
৭টি মন্তব্য ২টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

পাগলের প্রলাপ' যখন সত্যি হয়......

লিখেছেন জুল ভার্ন, ০৭ ই সেপ্টেম্বর, ২০২৪ সকাল ১০:১৯

'পাগলের প্রলাপ' যখন সত্যি হয়......
[/সব

আমার এক মামা ততকালীন পূর্ব পাকিস্তানে হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টালে জব করতেন হোটেলের শুরু থেকেই। সেই মামা মাঝেমধ্যে আমাদের জন্য হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টাল থেকে মুখরোচক কেক, পেস্ট্রি ছাড়াও বিভিন্ন... ...বাকিটুকু পড়ুন

তার চাওয়া পাওয়ার কিছু ছিল না, তবুও

লিখেছেন খাঁজা বাবা, ০৭ ই সেপ্টেম্বর, ২০২৪ দুপুর ১:৩২



শেখ হাসিনার নাকি বায়ক্তিগত চাওয়া পাওয়ার কিছু ছিল না। শেখ মুজিবের বেয়ে নাকি দুর্নীতি করতে পারে না। সে এবং তার পরিবার যে হাজার হাজার কোটি টাকার দুর্নীতি করতে পারে... ...বাকিটুকু পড়ুন

দেশের বর্তমান পরিস্থিতি সংক্রান্ত বিষয়ে সামু কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি

লিখেছেন সাড়ে চুয়াত্তর, ০৭ ই সেপ্টেম্বর, ২০২৪ বিকাল ৩:৪৬

ছাত্র-জনতার সম্মিলিত অভ্যুত্থানের মাধ্যমে গত ৫ আগস্ট, ২০২৪ তারিখে ফ্যাসিস্ট হাসিনা এবং তার দলের পতন ঘটানো হয়। এটা আমাদের একটা জাতীয় গৌরবের দিন। এটা নিয়ে কারও সন্দেও থাকলে মন্তব্যে লিখতে... ...বাকিটুকু পড়ুন

জ্বীনভুতে বিশ্বাসী বাংগালী ও ঢাকায় ৫০ হাজার ভারতীয় একাউন্টটেন্ট

লিখেছেন সোনাগাজী, ০৭ ই সেপ্টেম্বর, ২০২৪ বিকাল ৪:৩৩




ব্লগার সাড়ে চুয়াত্তর ব্লগে লিখেছিলেন যে, উনার ভগ্নিপতিকে জ্বীনেরা তুলে নিয়ে গিয়েছিলো; ২ সপ্তাহ পরে ভগ্নিপতিকে দিয়ে গিয়েছে; এই লোক, সামুর কাছে আমার বিরুদ্ধে ও অন্য... ...বাকিটুকু পড়ুন

বেছুর নিজস্ব একটি জ্বীন ছিলো!

লিখেছেন সোনাগাজী, ০৭ ই সেপ্টেম্বর, ২০২৪ রাত ৮:২৪



আমাদের গ্রামের খুবই সুশ্রী ১টি কিশোরী মেয়েকে জংগলের মাঝে একা পেয়ে, প্রতিবেশী একটা ছেলে জড়ায়ে ধরেছিলো; মেয়েটি ঘটনাকে সঠিকভাবে সামলায়ে, নিজের মাঝে রেখে দিয়েছিলো, এটি সেই কাহিনী।... ...বাকিটুকু পড়ুন

×