আমি এই রাস্তা দিয়ে সর্বমোট পায়চারী দিয়েছি চৌত্রিশ বার। এখান থেকে বের হওয়ার পথ আমি চৌত্রিশ বার হাঁটার পরও পাইনি। আমার পথবিভ্রম হলো কিংবা গোলকধাঁধাঁ আমাকে আটকে ফেললো। আমি মুক্ত ছিলাম অথচ ছিলাম বন্দী। সর্বশেষে আমি ক্লান্ত হলাম এবং পথ চলার সেখানেই ইতি টেনে বসে পড়লাম। তখন আমি বন্দী ছিলাম না কিন্তু বহমানের কাছে হেরে যাওয়া স্তদ্ধ এক নদী ছিলাম।
**
আমি রেশমার কাছে এক কাপ চা চাইলাম। চায়ের কথা বেমালুম ভুলে গিয়ে পিঁড়ি পেতে বসে সে আমায় জোনাকবালার গল্প শুনাতে বসল। তার কন্ঠ ছিলো কাঁপা কাঁপা কিন্তু দীর্ঘশ্বাস বের হলো না। আমি গল্প শুনা থামিয়ে তার অলক্ষ্যে তারই চোখের মনিতে ডুবসাঁতার দিলাম। আজলা ভরে নিয়ে আসলাম দুমড়ে মোচড়ে থাকা দীর্ঘশ্বাসগুলো।
আমি তাকে বললাম হাত পাতো। সে দুহাত পাতলো। তার হাতের তালুতে আমি সব গুছানো দীর্ঘশ্বাসগুলো রাখলাম। তার চোখের পাতা নড়ল অথচ সে আর গল্প বললো না।
রেশমা আমাকে ক্ষানিক বসতে বলে ভিতর বাড়িতে চলে গেলো আমার জন্য চা আনতে।
**
আমি বলছি, প্রতিটি মানুষের কাছে একটা নদী থাকে। আমারো একটা ভাঙাচুরা নদী আছে।
...
..
.
আমি মেঘের চোখে শ্রাবন খোঁজতাম। আর তুমুল বর্ষায় আমি ছুরি দিয়ে নিজের চোখকে ক্ষত-বিক্ষত করতাম। কেননা আমি জেনে গিয়েছিলাম প্রতিটি মানুষই তার চোখের গভীরে শ্রাবন ধরে রাখে।
**
সে আমার হাত ধরে বললো-চলো বৃষ্টি স্নানে যাই। আমি তার চোখের দিকে চাইলাম আর তীব্র দৃষ্টি দিয়ে তাকে পুড়িয়ে দিলাম।
সে আমার চোখে চোখ রেখেই বললো-ভালবাসি।
অথচ আমি নিশ্চুপ এক নিরবতা! আমি দক্ষিন বারান্দার ঝুলন্ত দুলনায় দুলে দুলে সারা বিকেল তাকে অবিরাম ভিজতে দেখলাম অথচ সে বৃষ্টি স্নানে সিক্ত হলো না।
সর্বশেষ এডিট : ০৮ ই সেপ্টেম্বর, ২০১১ সকাল ৭:৫৯