গত সাত আট বছর ধরে দেশ জুড়ে ধর্ষণের মহামারী চলছে। জনগণ নিয়ম করে প্রতি বছর দুচারটি ধর্ষণ আর হত্যাকান্ডের প্রতিবাদে, অপরাধীর বিচারের দাবীতে মিছিল মিটিং আর প্রতিবাদ সভা করে আবার যে যার কাজে ব্যস্ত হয়ে পড়ছে। ফলাফল? ধর্ষণের সংখ্যা প্রতিদিন এক্সপোনেনশিয়াল হারে বৃদ্ধি পেয়েছে।
ধষর্কের মৃত্যুদন্ডের দাবীতে পিটিশন
এধরনের প্রতিবাদ এখন শুধুই প্রহসনে পরিণত হয়েছে মাত্র।
দু-চারদিন হৈ চৈ এর পর এসব হত্যাকারী, ধর্ষকের পাল হাসিমুখে দাপটের সাথে ঘুড়ে বেড়ায় আর ধর্ষিতারা বেছে নেয় আত্মহননের পথ অথবা জীবন্মৃত হয়ে বেঁচে থাকে।
এই দুরবস্থার জন্য দেশের দুঃশাসন, আইন-প্রয়োগকারী সংস্থার ব্যর্থতা দায়ী তা একবাক্যে সকলেই স্বীকার করবে। ব্যর্থতার পিছনের প্রধান কারণটি সকলেরই জানা, মূল্যবোধের অবক্ষয় আর রন্ধ্রে রন্ধ্রে ছড়িয়ে পড়া দুর্নীতি!! এক দিন, দুদিন, চারদিন নয় বছরের পর বছর ধরে চলে আসছে এই অনৈতিকতার অবাধ চর্চা।
দেশে ভালো মানুষের সংখ্যা নিতান্ত কম নয়। আমি বিশ্বাস করি লক্ষ লক্ষ নয় সৎ মানুষের সংখ্যা কোটি কোটি, তারপরও হায়নার পালের এই তান্ডবের মূল কারন আমাদের নির্লিপ্ততা। আমাদের চারপাশে ঘটে যাওয়া অনৈতিকতা আমরা দেখেও না দেখার ভান করি, এড়িয়ে যাওয়াটাই সর্বত্তোম উপায় ভেবে নিজ দায়িত্ব সম্পাদন করছি।
দুর্নীতি সব সময়ই দুর্নীতি, অনৈতিক আচরণ সকল ক্ষেত্রেই বর্জনীয়।
নিজের ঘর থেকেই নৈতিকতার চর্চা শুরু প্রয়োজন। মনে রাখা জরুরী, প্রতিটি অপরাধীর শুরুটা ছোট খাটো অপরাধ দিয়েই ঘটে। আমরা সেসব মেনে নেয়াতে তারা ধীরে ধীরে আরো নির্ভীক হয়ে উঠে এক সময় বড় অপরাধের দিকে পা বাড়ায় তাই নৈতিকতার অবক্ষয়ে দেশের আজকের এই দুরবস্থার জন্য আমরা সকলেই দায়ী।
আজকের এই অরাজকতা একদিনে সৃষ্ট নয়, তিল তিল করে অপরাধের প্রশ্রয়ে বর্তমানের অচলাবস্থা করে গড়ে উঠেছে। আমরা প্রতিবাদ করিনা, বিশেষ বিশেষ ক্ষেত্রে অপরাধীর সাথে সখ্যতা গড়ে তুলি। অনেকে মনে করেন, ঘুষ খাওয়া তো তেমন বড় অপরাধ নয়, নেতা হলেতো চাঁদাবাজি করাটাই স্বাভাবিক, সামান্য অপরাধ বড় করে দেখার কিছু নেই- আমাদের এই প্রশ্রয় আর উদাসীনতা দেশের নৈতিকার এই চরম বিপর্যয়ের জন্য দায়ী।
লক্ষ্যণীয় বিষয় ধর্ষক, খুনি অথবা ছিনতাইকারী প্রত্যেকে তার নিজ নিজ এলাকা, নিজ নিজ গন্ডির মাঝেই অপরাধ সংঘটিত করছে। আয়েশার ধর্ষক ঢাকার ক্লাবে এসে ধর্ষন করছেনা, কন্সটেবল হালিমা খাতুনের ধর্ষক নামী দামী কোন সেলিব্রিটিকে স্পর্শ করছেনা। পাড়ার মাস্তানদের ক্ষেত্রেও একই কথা, তারা যে যার নির্দিষ্ট গন্ডির মাঝেই করে যায় একের পর এক ঘৃণ্য অপরাধ- নিজ নিজ গন্ডির মাঝে সম্ভব নিকৃষ্টতম অপরাধ। অপরাধীরা তাদের গন্ডির মাঝে স্বীয় ক্ষমতার অপব্যবহারের লোভ সামলাতে পারছেনা, দু চারজন প্রভাবশালীর সাথে সখ্যতার কারনে অপরাধ সংঘটনের আগে থেকেই নির্ভীক আর নিশ্চিন্ত থাকছে। তারা জানে কোথাও দুচারটি মিষ্টি কথা, কোথাও উপঢৌকন আবার কোথাও আত্মীয়তার জোড়ে এড়িয়ে যেতে সক্ষম হবে প্রাপ্য শাস্তি।
মূল্যবোধের অবক্ষয়ের কারনে প্রশাসন, সরকার মনে করছে এটা খুব স্বাভাবিক ব্যাপার, এমনটি হরহামেশাইতো হচ্ছে। আর তাই তারা পরিচিত, প্রিয়জনদের গুরু অপরাধও লঘু-দৃষ্টিতে কখনও ক্ষমাশীল দৃষ্টিতে দেখছে!
এই ব্লগের প্লাটফর্মটি বাংলাদেশের একটি অতি ক্ষুদ্র চিত্র বললে ভুল হবেনা। ব্লগের শুরু থেকে আজ অবধি সরকারের অপকর্মের সমালোচনা, দুর্নীতি আর দুঃশাসনের প্রতিবাদে লেখা পোস্টের সংখ্যা অগুনিত! অনিয়ম উচ্ছৃঙ্খলায় অতিষ্ট জনজীবনের প্রতিবাদ সেসব পোস্টের মন্তব্যের ঘরে তুলে ধরে এসব দুর্নীতিবাজদের প্রতিমানুষের ক্ষোভ আর ঘৃণা। তারপরও আমরা নৈতিকতা আর মূল্যবোধের অবক্ষয়রোধে কতোখানি দায়িত্ব পালন করছি, একটু ভেবে দেখা যাক...
অধিকাংশ ব্লগার এখানে আসেন নিজের বক্তব্য, কেউ নিজের শিল্প সাহিত্য তুলে ধরতে। নতুনরা কিছুটা নার্ভাসনেস নিয়ে একটি লেখা পোস্ট করে- তা কেউ পড়বে, সমালোচনা করবে মতামত জানাবেন এমন আশায়। আর এই ব্যাপারটি আরো সুন্দর আর পরিশীলিত করতে "আলোচিত পোস্ট" নামের একটি কলাম শুরু করেছে, যেখানে জনপ্রিয় লেখাগুলো ঠাঁই পাবে; নবীন, খুব অপরিচিত লেখকেরও সুন্দর লেখাটি সকলের সামনে আসবে এই উদ্দেশ্যে।
ইদানীং এই লিস্টে তাকালে আমরা কি পাই?
ব্লগে সরকারী দলের প্রতিনিধি প্রতিদিন নিয়ম করে নির্দিষ্ট সময়ে দুর্নীতি আর দুঃশাসনের চূড়ান্ত অবস্থানে উপবিষ্ট নিজ দলের তোষামোদ করে পোস্ট দেয়, সেই লেখা আদতে দুজন পাঠক না পড়লেও তা ৫০০০ থেকে ২০০০০ পঠিত সংখ্যা নিয়ে "সর্বাধিক পঠিত"র লিস্টে চলে যায় নিমেষে। দুর্নীতিগ্রস্থ সরকারের প্রতিনিধির নীতিবোধ, ঔচিত্যবোধ থাকবেনা এমনটাই স্বাভাবিক- আর তাই প্রায় সচেতন ব্লগার বিষয়টি জানার পরও কিছু বলার থাকেনা।
সবচেয়ে দুঃখজনক "আলোচিত পোস্ট" প্রায় কনস্ট্যান্টলি অবস্থান করা অন্য নামগুলো।
এদের কেউ কেউ আমার অত্যন্ত প্রিয় ব্লগার তাই তাদের অনৈতিক আচরণটি অনেক বেশী পীড়াদায়ক! পোস্ট করার কয়েক মিনিটের মাঝে নিয়মিত ভাবে তাদের সাধারণ মানের লেখাটি আলোচিত পোস্টে চলে যাওয়ায় হতভম্ব হয়ে লক্ষ্য করি এরা নিজের মাল্টিনিক নিয়ে নিজেদের পিঠ চাপড়ে যাচ্ছে। মনে রাখা জরুরী, যে কোন অন্যায় করতে হলে নিজের নীতি বিসর্জন দিয়েই করতে হয়, লজ্জা সম্পূর্ণ ঝেড়ে ফেলেই শুধু এমনটা করা সম্ভব। আত্মমর্যাদাবোধ আর লজ্জা নিঃসন্দেহে এমন ঠুনকো পরিচিতির চেয়ে হাজার গুন বেশী মূল্যবান।
যে অপরের লেখা চুরি নিয়ে বড় বড় কথা বলছে এধরনের নির্লজ্জ আচরণ করে সে নিজেও যে একপ্রকারের চোর তা হয়তো বুঝতে পারছেনা। নিজের পোস্ট ভিন্ন নিকে ভালোলাগা জানানো, নিজের পোস্টে নিজেকে প্রশ্ন করে পরবর্তী পোস্ট দিতে উৎসাহিত করা- কখনও সৎ লোকের কর্ম নয়।
দেখা যায় ধর্ম সম্পর্কে ভূল উপদেশবাণী দিয়ে যাওয়া ব্যক্তিটি নিজের সস্তা পোস্টগুলো আলোচিত পোস্টে আনতে একাধিক নিকের অধার্মিক কাজ শুধু করছেনা, হাস্যকর ভাবে নারী নিক এমনকি হিন্দু নামের নিকও খুলে বসে আছে। ইসলাম ধর্মকে যে এতোটুকু নিজের মাঝে ধারণ করে, নূন্যতম প্রকৃত ঈমানদার প্রতিটি মানুষ বিশ্বাস করে ভূগর্ভের কেন্দ্রস্থলে পৌঁছে অন্যায় করলেও তা সর্বশক্তিমানের দৃষ্টি এড়িয়ে যাবেনা। মহান আল্লাহ্কেে ভয় না করে এই সামান্য পরিচিতির প্রলোভনের কাছে নতি স্বীকার কোন ধার্মিক ব্যক্তির পক্ষে সম্ভব নয়।
নির্লজ্জতার সকল সীমা অতিক্রম করে নিজেকে জনপ্রিয় ব্লগার আখ্যা দিয়ে মাল্টি নিক থেকে পোস্ট দেয়া শুধু নয়, সেখানে নিজের নামটিকে ইসলামিক চিন্তাবিদ হিসেবে পরিচিত করার অপচেষ্টা্ করার মতো ন্যাক্কারজনক ঘটনাও আছে! অধর্মের আশ্রয় নিয়ে ধর্মের কথা, অনৈতিকতার আশ্রয় নিয়ে অবক্ষয়ের কথা বলে চলছে আর আমরা সেসব দেখেও না দেখার ভাণ করছি, উৎসাহ দিচ্ছি!
আমার এই লেখাটি পড়ে হয়তো তাদের কেউ কেউ আরো দু/চারটি নতুন আইডি এখনই খুলে বসবে, অপরাধীদের কাছে অপরাধটাই স্ট্রেস রিলিভারের কাজ করে।
আবার অনেকে হয়তো ভাবছে এসব অতি ক্ষুদ্র অন্যায়, এড়িয়ে গেলেই হলো। সত্যি কি তাই? যাঁরা দীর্ঘদিন ধরে ব্লগে আছেন, এধরনের নির্লজ্জ কাজে তাঁদের খুব ইতরবিশেষ এসে যায়না(যদিও বেশ পুরনো ব্লগারও অপকর্ম করছে) তবে নতুন ব্লগারদের জন্য প্রচন্ড হতাশার সৃষ্টি করে! আমরা যারা মাল্টিনিক খুলে আত্মপ্রচারের নির্লজ্জচর্চা টি করছিনা তাদেরও আরশিতে নিজেদের প্রতিবিম্ব দেখাটা জরুরী। দুটো বেশি মন্তব্য পাওয়া, থাম্বস আপ বা বাহাবা পাবার লোভে, কেউ তার নামে শিরোনাম দিয়ে ছড়া কবিতা লিখে যাবে বা নিজের প্রকাশিত বইটি প্রচার করবে এমন স্বস্তা কিছুর লোভে সেসব অন্যায়কারীদের অসততা এড়িয়া যাচ্ছি কিনা, পোস্টে মন্তব্য করে আমরা তাদের উৎসাহিত করে যাচ্ছি কিনা!
যদি তাই করে থাকি, মনে রাখতে হবে নিষ্পাপ শিশু আয়েশার পিতা হজরত আলী বা কন্সটেবল হালিমা খাতুনের মতো ভিক্টিমরা কিন্তু ধর্ষকের প্রতি ক্ষোভে আত্মহননের পথ বেছে নেয়নি। যে দূর্নীতিগ্রস্থ প্রশাসন ঘুষ গ্রহন করে বা সজন প্রীতির ঘৃন্য চর্চায় মেতে উঠে নরপশু ধর্ষকদের অপরাধ এড়িয়ে গেছে, প্রশ্রয় দিয়েছে, তাদের এই অনাচার আর নির্লিপ্ততার প্রতিবাদেই ছিলো তাঁদের আত্মহনন।
যারা এই কাজটি করছে তাদের কেউ কেউ হয়তো অন্যায়ের গভীরতা অনুধাবনে অক্ষম, নিজের নামটি প্রচারের নিতান্তই ছেলেমানুষিটি করে এভাবে নিজের পিঠ চাপড়ে যায়। তাঁদের বেনিফিট অফ ডাউট দেয়া যায়। আজ এভাবে চোখে আঙ্গুল দিয়ে বিষয়টি দেখিয়ে দেবার পর যদি তাঁরা এই কুঅভ্যাস থেকে বিরত হন, তাঁদের স্যালুট কারণ অন্যায়ের পথে পা বাড়ানো অত্যন্ত সহজ হলেও সেখান থেকে ফিরে আসাটা খুব সহজ নয়। যারা পারেন, তাঁরা বীর।
এধরনের অপকর্ম নিয়ে সোচ্চার না হলেও অধিকাংশ ব্লগার তাদের মাল্টিনিক গুলো জানেন। এধরনের অন্যায় কখনও সুনাম বয়ে আনেনা। পোস্ট করার ১০- ১৫ মিনিট নয়, ২-৩ ঘন্টা পর্যন্ত মন্তব্য না পেলে, ভালোলাগা না পেলেও অন্যদের দৃষ্টিতে সন্মানিত হয়, তবে যে মাত্র মাল্টি নিকের তান্ডব শুরু পোস্ট আলোচিত কলামে উঠে গেলেও নৈতিকতার অবক্ষয়টি প্রকট হয়ে উঠে, অপরের চোখে ছোট হয়ে যায়। দীর্ঘদিন আগে এই ব্লগ একটি অস্থির সময় পাড়ি দিয়েছে, সেসময় এধরনের মাল্টি নিক নিয়ে নিজের পিঠ চাপড়ে যাবার মতো সস্তা ঘটনা ঘটেছে ব্যাপক ভাবে। যাঁদের মাঝে আত্ম মর্যাদাবোধের কিছু মাত্র অবশিষ্ট ছিলো, তাঁরা সেপথ থেকে ফিরে এসেছেন। সম্প্রতি দেখেছি তাঁদের কয়েক জনের লেখা পোস্ট হবার কয়েক ঘন্টা পর্যন্ত কোন মন্তব্য বা ভালোলাগা পায়নি, তারপরও তাঁর সৎ থেকেছেন। অন্যায় করার আত্মগ্লানির চেয়ে পোস্ট মন্তব্যশূণ্য থাকা অনেক বেশি তৃপ্তিদায়ক আর সন্মানজনক, এই সত্যটি শুধু মাত্র সৎ মানুষেরাই অনুধাবনে সক্ষম।
আমরা যদি আমাদের এই ব্লগের অতি ক্ষুদ্র পরিসরে সামান্য পরিচিতির(যদিও তা কুখ্যাতিই বেশি বয়ে আনে) লোভে এধরনের অনৈতিক কাজ থেকে বিরত থাকতে না পারি, নিজের পোস্টে দুটো বেশি মন্তব্য বা থাম্বসআপ পাবার লোভে এরনের নীতিবর্জিত কাজকে সমর্থন জানিয়ে তাদের পোস্টে মন্তব্য করে তাদের উৎসাহিত করে যাই তাহলে- প্রশাসন, পুলিশ কর্মকর্তা, রাজনীতিবিদ বা সরকারকে দোষারোপ করার কোন অধিকার আমাদের নেই। কারণ আমরা নিজেরাও সেই নষ্টদের ভিড়েরই একজন।
নবীন ব্লগারদের উৎসর্গের কারণ- তাঁরা অনেকে ব্লগে এসে ভড়কে যান- বিশেষ করে নির্দিষ্ট কিছু ব্লগারের পোস্ট প্রায় প্রতিদিন আলোচিত পোস্টে দেখে ভাবতে পারেন এদের লেখার মান উন্নত এবং নিজের লেখা সম্পর্কে খারাপ বোধ করেন। কেউ কেউ এই অনৈতিকতা চর্চাকে বাহাবা পেতে দেখে এক সময় নিজেও সেই গড্ডালিকা প্রবাহে গা ভাসিয়ে লজ্জা, আত্মসন্মানবোধ বিসর্জন দিয়ে মাল্টি নিকে নিজের পিঠ চাপড়ে দিতে উদ্যত হন। তাঁদের জ্ঞাতার্থে বলতে চাই, ভদ্রতার কারণে চুপ করে থাকলেও অধিকাংশ ব্লগারেরা এদের এই অপচর্চা সম্পর্কে অবগত।
কারো মাঝে আত্মপ্রচারের বাসনা অতিরিক্ত হলে অপরের সমস্যা না করেও তা করা যায়। অনেকে পোস্টের শিরোনামে নিজের নিকটি ব্যবহার করে- তা অত্যন্ত বিরক্তিকর হলেও অন্যায় নয় এবং কাউকে বঞ্চিত না করেই করছে।
আমি ব্লগে খুব অল্প সময়ের জন্য আসি, সেক্ষেত্রে আলোচিত পোস্টটি ভালো পোস্টের সূচক হয়ে ভালো ভালো লেখা পড়ার সুযোগ করে দিতে পারে মনে হয়েছে। দুঃখজনক ভাবে গত কয়েকদিনের মাঝে একসময় আলোচিত পোস্টের কলামে ১০০% অসৎ ব্লগারের অবস্থান দেখে মনে হয়েছে আজকের এই অবস্থার জন্য সচেতন ব্লগারদের দায় কম নয়। কেউ ন্যাকামী, কেউ তোষামোদের কাছে নতি স্বীকার করে এধরনের নির্লজ্জ আচরণ এড়িয়ে যাওয়ায় আজ এমন সম্ভব হয়েছে।
অনেক ব্লগারের পূর্বের নিক ব্যান হওয়ায় তাঁরা নতুন নিক খুলে সুন্দর ব্লগিং করছেন, সেটা ভিন্ন ব্যাপার। তবে সকল আত্ম মর্যাদাবোধ বিসর্জন দিয়ে একাধিক মাল্টি নিক নিয়ে নিজের স্বনামের পিঠ চাপড়ে দেবার এই অসুস্থ প্রতিযোগিতা নিন্দনীয়!
আমি সরাসরি মুখোশ উন্মোচিত না করলেও আর কেউ করবেননা এমন নয়। এসব অপকর্ম সম্পর্কে অবগত বিভিন্ন ব্লগারের মন্তব্য থেকেই এদের কারো কারো মাল্টি নিকের সম্পর্কে জেনেছি।
নবীন ব্লগারেদের জ্ঞাতার্থে জানাই, আপনার ভালো ভালো গঠনমূলক লেখা, সাহিত্যকর্মটির জেনুইন পাঠক অবশ্যই এই ব্লগে আছে। নিজের লেখাটি আরো অধিক সংখ্যক জেনুইন পাঠকের কাছে পৌঁছে দিতে নিজের পোস্টের সকল মন্তব্যের জবাব দিন আর অন্যদের পোস্টে মন্তব্য করুন- এটাই এখানে নিজের বক্তব্য তুলে ধরার সবচেয়ে সুস্থ সুন্দর উপায়।
নির্লজ্জ আচরণের মাধ্যমে ১০০+ মন্তব্য পাবার চেয়ে ডিগনিফাইড ব্লগিং করে ২টি মন্তব্য এমনকি পোস্ট সম্পূর্ণভাবে মন্তব্যশূণ্য থাকাও অনেক সন্মানের, এই সত্যটি নীতিবর্জিতরা অনুধাবনে অক্ষম।
সামহয়্যাইনব্লগের ক্ষুদ্র পরিসরে আমরা যদি অন্যায় পরিহার করে ডিগনিটি নিয়ে ব্লগিং উৎসাহিত না করতে পারি তাহলে ১৬ কোটি মানুষের অন্যায় নিয়ন্ত্রণের আশা করাও অন্যায়। তাই, প্রত্যেক সচেতন ব্লগারের উচিৎ এধরনের অনৈতিক কাজে লিপ্ত ব্লগারদের সম্পূর্ণ এড়িয়ে যাওয়া যতোদিন পর্যন্ত তারা এই অপকর্মটি থেকে সরে না আসছে।
আমাদের এই ক্ষুদ্র প্লাটফর্মটিতে অন্যায়ের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াতে শিখে, নীতিবর্জিতদের প্রতিহত করার মাধ্যমেই শুরু হোক সত্য ও ন্যায়ের পথে যাত্রা! আমরা নিজ নিজ পরিসরকে দুর্নীতি মুক্ত করায় দৃঢ় প্রত্যয়ী হলে, এক সময় সিস্টেম প্রশাসন দুর্নীতি মুক্ত হতে বাধ্য হবে। সেদিন ধর্যক, খুনিদের নিয়মিত বিচারও নিশ্চিত!
ছবিসুত্র: ইন্টারনেট
****পাঁচ/ছয়জন চিহ্নিত ব্লগারের মাল্টিনিকের প্রমাণ সংগ্রহে আমার মাত্র ১০ মিনিটের মতো সময় নষ্ট হয়েছে, যাঁরা অধিক সময় ব্লগে কাটিয়ে থাকেন তাঁরা কতো সহজেই এদের চিহ্নিত করতে সক্ষম তা ভেবে দেখা জরুরী****
সর্বশেষ এডিট : ১৬ ই মে, ২০১৭ দুপুর ১:১৭