২০০৭ সালের পাকিস্তানের রাজধানী ইসলামাবাদে লাল মসজিদ নামে পরিচিত মসজিদ ও মসজিদ সংলগ্ন মাদ্রাসায় ৬০ হাজার পাকিস্তানি আর্মি "অপারেশান সানরাইজ" চালায়। জঙ্গি বিমান, হেলিকাপ্টার, সাজোয়া যান আর ট্যাংক বহর নিয়ে অবরুদ্ব করে রেখে ভয়ংকর হামলা চালায় সেখানে। ছোট ছোট বাচ্ছা, নর-নারী সহ প্রচুর মাদ্রাসা শিক্ষর্থী নিহত হয়। প্রায় ধংস হয়ে যায় লাল মসজিদ ও মাদ্রাসা।
২০০৭ সালে হটাৎ একদিন লাল মসজিদের পরিচালক রশিদ গাজির মনে হলো পাকিস্তানে ইসলামী শাসন কায়েম করতে হবে। পাকিস্তান হতে সকল অশ্লীল কর্মকান্ড, নর-নারীর অবাধ মেলামেশা বন্ধ করতে হবে। সেই লক্ষে তারা "পাপ কাজে বাধা" দেওয়ার কাজ করতে থাকে। কখনো পাকিস্টানি আধা সামরিক বাহিনী রেন্জারের উপর মাদ্রাসা শিক্ষার্থীরা হামলা করে ওদের রেডিও সেট ও অস্র ছিনতাই করে লাল মসজিদের ঢুকে যাওয়া। কখনো পরিবেশ মন্ত্রনালয়ে হামলা করে আগুন লাগিয়ে দেওয়া। কখনো অডিও ভিডিও দোকানে হামলা চালায়।
সর্বশেষ যখন এক চাইনীজ বিউটি পার্লারের কয়েকটি মেয়েকে উঠিয়ে নিয়ে আসে বেশ্যাবৃত্তির অভিযোগে, এবার পাকিস্তান সরকার এ্যকশানে যায়। মাওলানা রশীদ গাজির সাথে পাকি সরকার আলোচনা করতে ব্যার্থ হন। উনি আলোচনায় বসতে চান না। ৫ বা ৬ হাজার মাদ্রাসা শিক্ষার্থী দিয়ে উনি পাকিস্তানে ইসলাম কায়েম করবেন।
মাদ্রাসার মূল ফটকে পাকি আর্মি বিস্ফোরক ঘটায়।
মাদ্রাসা শিক্ষার্থীদের কাছে কিছু একে-৪৭ মাত্র ছিলো। পাকি আর্মীর অবরোধের সময় নির্দেশ ছিলো যে কেউ ঐ কম্পাউন্ড হতে অস্র হাতে বেরোলেই সাথে সাথে গুলি করা। ঐ পুরো এলাকায় কার্ফিউ জারি ছিলো। সেই মাদ্রাসা হতে যে শিক্ষার্থী আত্বসমর্পন করবে তাকে পাকি সরকার ৫ হাজার রুপি ও ফ্রি এডুকেশান দিবে বলে ঘোষনা করা হয়।
অনেকেই আত্বসমর্পন করে বেরিয়ে আসে, বাকিরা ভেতরেই শহিদ হওয়ার ঘোষনা দেয়। রশীদ গাজির বড় ভাই, মহিলাদের বোরকা পরে বেরিয়ে আসার সময় পুলিশের হাতে ধরা পড়ে।
ডেড লাইন শেষ হলে জুলাইয়ের ৬ তারিখে পাকিস্তানের স্পেশাল কমান্ডো লাল মসজিদে আক্রমনের জন্যে প্রস্তুত হয়। প্রথমে তারা লাল মসজিদের ওয়ালে একটা বিস্পোরন ঘটিয়ে ফুটা তৈরী করে।
বুলেটে জাঝরা হয়ে যাওয়া মসজিদের একাংশের ছাদ।
ধংস হয়ে যাওয়া মসজিদ।
দুই দিন পর অবরোধ মুক্ত হয় লাল মসজিদ। মসজিদটা প্রায় ধংস হয়ে যায় ঐ অপারেশানে।
বর্তমানে হেফাজতে ইসলামের কর্মকান্ড দেখে লাল মসজিদের কথা মনে পড়ে যায়। দেশ কি সে দিকেই এগুচ্ছে? সে রকম পরিস্হিতি হলে তার মাশুল দেবে কে?
অতএব সময় আছে এখনো, ইসালম নাম শুনলে কেউই ঝাপ দিবেন না, চোখ কান খোলা রাখুন।