পর্যটন বিকাশের বদৌলতে সাজেকের পরিচিতি দেশে-বিদেশে ছড়িয়ে পড়লেও সেই পাহাড়ি জনপদের শিক্ষার অবস্থা একেবারেই নাজুক। সাজেকের সুউচ্চ রুইলুই (লুসাই) পাহাড়ের নিচে ঝরনাপাড়া এলাকায় কিছুটা উপরে-নিচে ১১টি দরিদ্র চাকমা পরিবারের বসবাস। সন্তানদের শিক্ষা নিয়ে তাদের প্রত্যেকের রয়েছে অদম্য আগ্রহ। সেসব পরিবারের ২৩ শিশুর জন্য কলেজপড়ূয়া সুনম চাকমা চালু করেছেন ব্যতিক্রমী এক বিদ্যালয়। সেখানে গিয়ে দেখা যায়, সাজেক যাওয়ার মূল সড়কের পাশে চওড়া একটি জায়গায় বেড়ার ঘরের খিড়কির (জানালা) মতো খোপ দিয়ে উঁকি মারছে অনেক শিশু। ছোট কক্ষটির ভেতরে তিন পাশে বসে আছে ২৩টি ছেলেমেয়ে।
সুনম চাকমা জানান, ২০১৬ সালে বাঘাইহাট উচ্চ বিদ্যালয় থেকে এসএসসি পাস করার পর ভর্তি হন খাগড়াছড়ির দীঘিনালা ডিগ্রি কলেজে। কিন্তু জুমজীবী মা-বাবার পক্ষে কলেজে যাওয়ার প্রতিদিনকার গাড়ি ভাড়াও দেওয়া সম্ভব হচ্ছিল না। দুই বছর আগে এখানে এসে দেখেন এখানকার শিশুরা বছরে ছয় মাসেও বিদ্যালয়ে যায় না। সুনম সিদ্ধান্ত নিলেন, বাড়ি বাড়ি গিয়ে পড়ানোর চেয়ে পরিবারের প্রতিটি শিশুকে নির্ধারিত একটি স্থানে জড়ো করে নিয়মিত পাঠ দেওয়া হলে শিশুদের শিক্ষা জীবনে কোনো ছেদ পড়বে না। বানানো হয় স্বেচ্ছাশ্রমে একটি ঘর।
স্থানীয় দোকানি জগদীশ চাকমা বলেন, ১১ পরিবার সুনমের বার্ষিক খোরাকি বাবদ সোয়া ২৭ কেজি করে চাল দেয়। তবে বাড়তি চাল বিক্রি করেই শিক্ষক সুনমের লেখাপড়া-পোশাক পরিচ্ছদসহ অন্যান্য খরচ তিনি তার মতো চালান। অভিভাবক ইন্দু কুমার চাকমা বলেন, সাজেকের সৌন্দর্য দেখতে কত লোকজন আসেন। গাড়ির চাপে শিশুরা রাস্তা দিয়ে হাঁটতে পারে না। অতিষ্ঠ হয়ে নিজেদের খরচে স্কুল চালু করতে বাধ্য হয়েছি।
সুনম চাকমা বলেন, গত দুই বছরে শিশুরা 'ডাবআদাম সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়'-এর নিয়মিত পরীক্ষায় অংশ নিয়ে ভালো ফল করছে। প্রতিদিন সকাল ৭টা থেকে বেলা সাড়ে ১১টা পর্যন্ত পাঠ দেওয়া হয় তাদের।
তথ্য ও ছবি - ইন্টারনেট
সর্বশেষ এডিট : ১৫ ই মে, ২০১৮ রাত ১১:২৪