বহু বছর আগে শরত চন্দ্র চট্টোপধ্যায়ের একটি প্রবন্ধ পড়েছিলাম যেখানে তিনি নারীদের মর্যাদার ব্যপারে বিভিন্ন ধর্মের অবস্থান তুলে ধরেছিলেন।
ভাষ্যটি হুবহু না হলেও অনেকটা নিম্নরুপঃ
বাইবেলে নারীদের বলা হয়েছে নরকের দ্বার স্বরূপ। ইহুদিরা ,,,,,,,,। হিন্দু ধর্মে ,,,,,,,। সত্যিকার অর্থে কোন ধর্ম নারীদের মর্যাদা দিয়া থাকিলে তাহা হইল ইসলাম। যদিও ইসলাম ধর্মে নারীদের প্রকৃত অবস্থানটি স্পষ্ট নয়।
বাংগালী আর মুসলমানদের মধ্যে ফুটবল খেলা হইতেছে।
অথচ শরত চন্দ্র চট্টোপধ্যায়ের বিরুদ্ধে সাম্প্রদায়িকতার অভিযোগ তোলা হয়েছিল তার একটি উপন্যাসে উপরোক্ত উক্তির জন্য।
৫০ বছর আগেও আমেরিকাতে একজন নারী নিজের নামে কোন সম্পদ রাখতে পারত না, অথচ ইসলাম নারীদের এ অধিকারটি দিয়েছিল ১৪০০ বছর আগে।
বিধবাদের বিয়ের ব্যপারে ইসলাম কোন বাধা রাখেনি, এমনকি একজন নারীকে তালাক দেয়ার অধিকারও দিয়েছে, অন্যান ধর্ম কি এই অধিকারগুলো দিয়েছে?
গত বিশ বছরে ভারতে প্রায় এককোটি মেয়ে শিশুকে হত্যা করা হয়েছে। এ আর এ কারনেই ভারতের বেশিরভাগ রাজ্যে জন্মপুরবরতি ভ্রুন নির্ধারন আইন দিয়ে নিষিদ্ধ করা হয়েছে।
হাদিসে আছে যে তার দুটি শিশুকন্যাকে শিক্ষা দিয়ে বিয়ের ব্যবস্থা করল তার জন্য বেহেস্ত ওয়াজিব।
এমনকি বলা হয়েছে যে তার মেয়ে দাসীকে শিক্ষা দিয়ে তাকে স্ত্রীর মর্যাদা দিল তার জন্য রয়েছে উত্তম পুরস্কার।
ভারতীয় মুসলমানদেরকে হয়তবা উপরোক্ত হাদিসটিই এই গর্হিত কাজটি থেকে বিরত রেখেছে।এর প্রমান প্রাক ইসলামে কন্যাশিশু হত্যার মত জঘন্য কাজটি ইসলাম আবির্ভুত হওয়ার পর রহিত হয়েছিল।
খাওয়ার সময় মেয়েদের পাতে বেশি খাবার তুলে দেয়ার নির্দেশ দেয়া হয়েছে।
অনেকে প্রায়শঃই কোরানের একটি আয়াতের বর্ণনা দিয়ে নারীদের ঊপড় পুরষের শ্রেষ্টত্বের কথা বলে থাকেন।
এই শ্রেষ্ঠত্ব ভুল অর্থে ব্যবহার করেন অনেকে। কোরানের আরেকটি আয়াতে জীবিকার ব্যপারে একে অপরের ওপর শ্রেষ্ঠত্বের কথা বলা হয়েছে, এক্ষেত্রে নারী পুরুষের উল্লেখ করা হয়নি।
আপনি কি এমন একটি প্রতিষ্ঠানের কথা বলতে পারবেন যেখানে একজন প্রতিষ্ঠান প্রধান নেই।পরিবারকে বলা হয় পৃথিবীর প্রাচীনতম প্রতিষ্ঠান।
পরিবারকে যদি একটি প্রতিষ্ঠান বলে ধরে নেয়া হয় সেখানে একজনের প্রাধান্য থাকাটাই শ্রেয় নয়কি।
এরজন্য সংসারের বয়োজেষ্ঠ পুরুষটি সবচাইতে যোগ্যতর নন কি। সন্তান প্রশবের সময় একজন মেয়ে কি রকম অসহায় হয়ে পরে তা কারো অজানা নয়, এসময়কি তার পক্ষে সম্ভব সংসারের হাল ধরা।
অলিম্পিকের এমন একটি ইভেন্টের কথা বলতে পারবেন কি যেখানে মেয়েরা পুরুষদেরে অতিক্রম করতে পেরেছে, বিশ্ব রেকর্ডের ক্ষেত্রেও মেয়েরা পুরুষদের চাইতে পিছিয়ে নয় কি?
এটা মেনে না নিয়ে আর ঊপায় নেই যে শারিরীকভাবে মেয়েরা দুর্বল হয়ে থাকে। পুরুষদের এই শ্রেষ্ঠত্ব প্রকৃতিগতভাবেই স্বাভাবিক এবং এতে নারীদের অমর্যাদার কিছু নেই।
নারীদের সৌন্দর্য তার কোমলতায়, নমনীয়তায়। পেশীবহুল পুরুষদের মেয়েরা পছন্দ করলেও পেশীবহুল মেয়েকে কয়জন পুরুষ পছন্দ করবে। গবেষনায় দেখা গেছে সারা প্বথিবীতে পুরুষদের চাইতে নারীদের গড় আয়ু এই কারনে বেশী যে তারা জীবনের বেশিরভাগ সময় ঘরের নিরাপদ পরিবেশে বাস করেন। বাইরের কঠিন পরিবেশে কঠিন শ্রমের কাজগুলো তাদেরকে করতে হয় না।
আমার উপর কার হক বেশি?
এক সাহাবীর এই প্রশ্নের উত্তরে নবিজি সাঃ বলেছিলেন, তোমার মার।
তারপর কার?
তোমার মার।
পরপর তিনবার তিনি একই উত্তর দিয়েছিলেন।
চতুরথবারের উত্তরে বলেছিলেন তোমার বাবার।
অর্থাত পরিবারে একজন মাকে (নারীকে) বাবার (পুরুষের) তিনগুন বেশি মর্যাদা হয়েছে।
আরেকবার নবিজি সাঃ কয়জন যুবককে কিছু লাকড়ি যোগাড় করে আগুন জবালাতে বললেন, তারপর নিয়ে আসতে বললেন এক বুড়ি মা এবং তার সন্তানকে। মা তার সন্তানের উপর অসন্তুষ্ট ছিলেন। নবিজি সাঃ তারপর বললেন ছেলেটিকে ধরে আগুনে ফেলে দেয়ার জন্য।
ঠিক ফেলে দেয়ার মুহুর্তে বুড়ি মা ভয়ে আর্তনাদ করে উঠলেন।
তখন নবিজি সাঃ বুড়ি মা এবং তার সন্তানকে উদ্দ্যেশ করে বললেন, মা যদি তার সন্তানের উপর অসন্তুষ্ট থাকে তবে তাকে অনন্তকাল দোজখের আগুনে জ্বলতে হবে।
আরেকটি হাদিসে বলা হয়েছে যে ব্যক্তি তার স্ত্রির কাছে উত্তম সে প্রকৃত অর্থে উত্তম। এসব
এসব কিছুতে প্রমানিত হয়না যে অনেক ক্ষেত্রে নারীদেরকেও সম্মানের প্রশ্নে পুরুষের উপর শ্রেষ্ঠত্ব দেয়া হয়েছে।
দুটো পরিসংখানের কথা বলি।
আমেরিকার ৫০% এর উপরের মহিলারা স্বামীর চাইতে তার কুকুরকে বেশি ভালবাসে।
আমেরিকাতে ইসলাম ধর্মে যারা ধরমান্তরিতে হচ্ছে তার বেশিরভাগ মেয়েরা।
নারীদের অধিকারের আন্দোলনে সোচ্চার পাশ্চাত্যের পুরুষদের প্রতি তাদের মেয়েদের এই বৈরি আচরনের কারন কি?
আমেরিকার একটি বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন মহিলা প্রফেসরের ন্যাসনাল জিওগ্রাফির একটি একটি অনুষ্ঠানে
দেয়া উক্তি দিয়ে শেষ করছি।
তাকে হয়ত একজন নারীবাদী বলা যাবে না কিন্তু ১৪০০ বছর আগে তিনি নারীদের জন্য যা করেছেন তা আজকের একজন নারীবাদীর পক্ষে করা অসম্ভব ছিল।