আমার মায়ের ভীষণ শখ আমাদের বাড়িটার একটা নাম থাকবে।
বাবার কাছে আবদার পৌঁছে যাওয়া মাত্র তিনি বললেন বাড়ির নাম হবে ‘তিনকন্যা’। কিন্তু আমাদের তিন বোনেরই দাবী, এমন অদ্ভুত নাম রাখা চলবে না । অগত্যা এ নাম বাতিল খাতায় ।
এরপর নাম খোঁজা চলছে, একটা নাম চাই, সুন্দর একটা নাম।
তখন মা জানালেন মনে মনে একটা নাম ঠিক করে রেখেছিলেন তিনি, অনেক আগে থেকেই।
ব্যাখ্যা দিলেন, পান্থ শব্দটা তাঁর ভীষণ পছন্দ, এটি থাকতেই হবে । আর পেছনে নীড় শব্দটা জুড়ে দিলে কেমন হয়?
‘পান্থনীড়’...... নামটা আমাদের পছন্দ হয়ে গেলো ।
এরপর বাবা ঘোষণা দিলেন, শ্বেতপাথরে খোদাই করা নাম বসবে সদর দরজার পাশে। যেই বলা সেই কাজ। নিজে গিয়ে নাম লিখিয়ে আনলেন, মিস্ত্রি দিয়ে সেটি বাড়ির সামনের দেয়ালে লাগানো হল।
মা দেখে এলেন এবং মন খারাপ করে বাবাকে জানালেন নামের বানান ভূল।
বাবা বিব্রত এবং বিরক্ত। বললেন এটা কোন ব্যাপার হল ? কোত্থেকে সাদা রঙ যোগার করে ভুল বানান সুদ্ধ করার চেষ্টা ......
ভুল নাম নিয়ে নেমপ্লেটটা এখনো লেপ্টে আছে সদর দরজার বাঁ পাশের দেয়ালে । আলসেমিতে সেটি আর ঠিক করা হয় নি। তাতে কি! লোহার গেটখানা ঠেলে ভেতরে ঢুকলেই যেন পৃথিবীর গোটা সুখ আমার হাতের মুঠোয়, মা আর বাবা নামের দুইটা মানুষের বসবাস যে সেখানে
অথচ দু’দিন আগেই সে সদর দরজা পেছনে ফেলে আবার চলে এসেছি একটা অচেনা শহরকে আপন করার আশায়।