ঘটনা কিন্তু সত্যি !!
আমার দাদার নাম আকবর ( সম্রাট দি গ্রেট )
আমার বাপের নাম সেলিম ( শাহজাদা )
সেই সুত্রে আমি কি ?
অবশ্যই রাজবংশীয় কন্যা !
বিশাল ব্যাপার কিন্তু , হেলাফেলার জিনিষ নয় । তাই বংশের মান রক্ষার্থে কিছু একটা করা উচিৎ। কি করা যায়, কি করা যায় ভাবতে ভাবতে সিদ্ধান্ত নিয়েই ফেললাম এখন থেকে সাথে তলোয়ার রাখব। এতে খান্দানী ভাবসাব স্পষ্ট হয়। যেই কথা সেই কাজ, নেমে পরলাম খান্দানী তলোয়ারের খোঁজে । কিন্তু ভালো কাজে বাঁধা আসবেই । খবর পেলাম তলোয়ার কেন , আম কাটার ছোট ছুরি সহ ধরা পরলেই নাকি জেলে পুরে দেবার গ্যারান্টি ১০০% , এইটা কোন কথা ?
এদিকে কিছু একটা করতে না পারলে বাপদাদার নামের মান থাকে না। আবার জেলের ভয়ে তলোয়ারের চিন্তা বাদ দিয়ে দেয়াটাও পরাজয় মেনে নেয়া টাইপ সিদ্ধান্ত হবে। আমি সম্রাটের নাতনী, শাহজাদার কন্যা, না না না এ মেনে নেয়া যায় না। কিছু একটা করতেই হবে, কিন্তু সেটা কি ? অবশেষে চমৎকার একটা সিদ্ধান্তে আসলাম। সাপও মরবে, লাঠিও ভাংবে না টাইপ বুদ্ধি।
তলোয়ারের বদলে আলপিন । চাইলে সেফটিপিনও রাখা যেতে পারে। ভেবে দেখলাম আসলে আলপিন হচ্ছে তলোয়ারের ক্ষুদ্রতম রূপ। কিভাবে? আচ্ছা ব্যাখ্যা করছি, সেই ক্লাস নাইনের ‘কম্পিউটার শিক্ষা’ বইতে ছবি দেখেছি ইয়া বিশাল বিশাল সাইজের বাক্স। বলে কিনা ওইগুলো ছিল কম্পিউটার। ছোট হতে হতে সেই বাক্স এখন ‘কম্পিউটার শিক্ষা’ বইয়ের সমান হয়ে গেছে, এমনকি তারচেয়েও ছোট! এতো বড় বড় বাক্সগুলো এইটুকু ছোট হয়ে গেলো আর তলোয়ারের আকৃতি কিনা আগের মতই থাকবে। উহু, সেও তেমনি ছোট হয়ে আলপিনে রুপ নিয়েছে।
কথা হচ্ছে এটা কি কাজে আসবে ।
আরে বলে কি ? কি কাজে আসবে মানে ! চরম উপকারিতা, বলি তাহলে,
আমিতো ঠিক করেছি সুযোগমত গেঁথে দিব একেবারে । অন্তত আঁধইঞ্চি হলেও।
কিছু ইতর প্রানীবিশেষ, এদের দেখা মেলে লোকাল বাসে, মানুষের ভীড়ে, কিংবা আলোআঁধারি রাস্তায়। সামনে স্ত্রীলোক দেখলেই হাত নিশপিশ করে, গায়ে পিঠে হাত বুলিয়ে দিতে ওস্তাদ লোক । এসব প্রতিভাবান লোকের খপ্পরে পরেনি এমন মেয়ে খুব কমই আছে। কোন মেয়ে হয়তো ঘুরে ঠেসে কলার ধরেছে, কিংবা ঠাটিয়ে চড় দিয়েছে। কিন্তু ঘেন্নায় পিত্তি জ্বলে গেলেও চুপচাপ সরে আসা মেয়েই বোধয় সংখ্যায় বেশি।
আমি দ্বিতীয় সারিতে, কেননা ঠাটিয়ে চড় কষানোর মত সাহসী আমি নই । বরং লজ্জায় কুঁকড়ে যেতে পারি। ঘেন্নায় একদলা থুথু হয়তো আসে, কিন্তু সেটা তার মুখে ছুঁড়ে দেবার মত শক্তি আমার নেই ।না জানার ভান করে সরে যেতে পারি।
কিন্তু এখন ? হে হে , এখন কি হবে বাছাধন ? অস্ত্র আমার সাথেই থাকবে, মিনিপ্যাক তলোয়ার। সুযোগমত গেঁথে দিব একেবারে, অন্তত আঁধইঞ্চি হলেও। জঙধরা পিন হলে সবচেয়ে ভাল হয়। খোঁচা খাবে, রক্ত ঝরবে, ঘা হবে, পঁচবে ।এই অপরাধে আমাকে কেও জেলে পুরতে আসবে না । খোঁচা দেবার অপরাধে জেলে যাবার নিয়ম নেই ।
বিঃদ্রঃ নারীজাতির জন্য এটি একটি আহবানপত্র । লিপ্সটিক-আয়না সাথে থাকুক আর নাই থাকুক, হাতের কাছে একটি আলপিন কিংবা সেফটিপিন রাখুন ।
সর্বশেষ এডিট : ১৭ ই মে, ২০১৪ রাত ১:১২