অনেকদিন ধরে ছবি তুলতে পারছিলাম না। বলাযায় সুযোগ পাচ্ছিলাম না আর কি। তবে এই সপ্তাহে সময় বের করে নিয়েছি এবং এখন থেকে সেটা চালিয়ে যেতে হবে। এবার টার্গেট বর্ষায় হাওরটাকে ভালভাবে ধারণ করা। উদ্দেশ্য ও অবশ্য আছে এটা নিয়ে কিছু করার। সে যাই হোক চলুন ছবি দেখা যাক। বলে রাখা ভাল, আমি প্রকৃতিকে একটু বেশী রংঙিন করে দেখতে চাই সব সময়; ছবি প্রসেসিং এর সময় সে চেষ্টাই ছিল খানিকটা। অবশ্য ফটোগ্রাফির ভাষায় এটা অপচেষ্টা কিনা আমার জানা নেই। এটা নিয়ে আপাতত মাথা ব্যথাও নেই, কারন আমি তো আর সেই রকম গোছের ফটোগ্রাফার না।
এই হলো বর্ষাকালে হাওরের মানুষের যোগাযোগ মাধ্যম। যে কোন জায়গায় যেতে হলে এমনকি ছেলেমেয়েদের স্কুলে যেতে হলেও এভাবে নৌকায় করে যেতে হয়। চারিদেকে জলে ঘেরা ছোট্ট ছোট্ট পাড়া/গ্রাম গুলি দ্বীপে পরিনত হয় বর্ষাকালে।
ঐ যে দূরে উজানধল, শাহ্ আব্দুল করিমের গ্রাম দেখা যাচ্ছে।
এমন ফাঁকা হাওরের মাঝে এই লোকটি তার সাথে আরেকজন সঙ্গী নিয়ে মাছ ধরছে। এদর কাছে অতি সাধারণ বিষয়টা। এ নিয়ে ভাববার ও কিছু নেই তাদের কাছে। রাতেও তারা এভাবে নির্জন ফাঁকা হাওরে মাছ ধরে একাকী। তাদের অনেক অনেক পূর্ব পুরুষ থেকে এভাবেই চলে আসছে। মানুষের জীবন ও জীবিকা কি বিচিত্র তাই না? আমরা তেমন করে কখনো চিন্তা করে দেখি না।
এই সব দৃশ্যের বর্ননা দেওয়ার ভাষা আমি খুঁজে পাইনে। তবে স্বচক্ষে যখন দৃশ্যগুলো দেখি তখন হৃদয়ে কি যে এক উপলব্ধি হয়! আমার বাংলাদেশের ছবি এগুলো।
এটা হাওরের একটা পাড়া। দৃশ্যটা দেখতে সুন্দর তাই না? কিন্তু ওদের জীবনটা কি কঠিন একটু ভাবলেই অনুমান করা যায়।
এই ছবিটা অবশ্য আরো কিছুদিন আগে তোলা। এমন মেঘাচ্ছন্ন দিনে সাধারণত ছবি তোলার জন্য বের হই না। তবে ঐদিন গাড়িতে বের হয়েছিলাম বলে ক্যামেরা সাথে ছিল। মেঘলা দিনে হাওরের সে আরেক রূপ। তবে মেঘ বৃষ্টি যাই হোক তাদের জীবন কিন্তু থেমে থাকে না।
শেষের ছবিটা বাদে বাকি ছবিগুলো সুনামগঞ্জের দিরাই উপজেলার বরাম হাওর থেকে তোলা। আমরা অনেকেই বাংলাদেশের অনেক দর্শনীয় জায়গায় বেড়াতে যাই। তবে আমার দেখা মতে অনেক দর্শনীয় যায়গা আছে যেখানে গেলে তেমন ভাল লাগেনা। সে বিচারে হাওর অতুলনীয়। একদিকে দেখা যায় বাংলার অপার সৌন্দর্য , অন্যদিকে প্রতক্ষ্য করা যায় এখানকার মানুষের জীবনের আবহমানকালীন সংগ্রাম।