কর্পোরেট শ্রম শোষণের শিকার বাংলালিংকের কর্মীরা গত ২ অক্টোবর থেকে অনির্দিষ্ট কালের কর্মবিরতি শুরু করেছে। আজ সন্ধ্যায় ধর্মঘটকারীদের পক্ষ থেকে পাঠানো এক প্রেস বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে জানানো হয়েছে :
"বাংলালিংক এর দীর্ঘ দিনের বৈষম্যনীতির প্রয়োগ, অবিবেচক সিদ্ধান্ত ও বর্তমান জীবন যাত্রার সহিত অসামানঞ্জস্যপূর্ণ বেতন কাঠামো ও দীর্ঘ দিন অস্থায়ী হিসাবে কর্মরত সুবিধা বঞ্চিত কর্মচারীদের বেতন কাঠামো পরিবর্তন এবং স্থায়ী করণের দাবিতে সারা দেশের বাংলালিংক এর কর্মচারীরা ০২ অক্টোবর ২০১৩ সন্ধ্যা হইতে অনিদৃষ্ট কালের জন্য শান্তিপূর্ণ কর্ম বিরতি পালন করছে।"
এর আগে গত ৪আগষ্ট ২০১৩ বাংলালিংকের ৭৬ জন অস্থায়ী কর্মী তাদের চাকুরি স্থায়ী করার দাবীতে শ্রম আদালতে পৃথক ভাবে ৭৬টি মামলা রজ্জু করেন। আদালত তাদের মামলা গ্রহণ করে বাংলালিংক কর্তৃপক্ষকে ১৫ দিনের মধ্যে জাবাবদিহি করার জন্য নোটিশ দিয়েছিলো।
কিন্তু আন্দোলনকারীদের সাথে কথা বলে জানা গেছে, বাংলালিংক কর্তৃপক্ষ নানান টালবাহানার মাধ্যমে সময়ক্ষেপন করে চলেছে। জবাবদিহির শেষ দিনে গিয়ে একমাস আরো সময় প্রার্থনা করে ২ অক্টোবর পর্যন্ত সময় বাড়িয়ে নিয়েছিলো। এরপর ২ অক্টোবর আদালতে গিয়ে থ্রিজি সংক্রান্ত ব্যাস্ততার কারণ দেখিয়ে আবারো ২৩ অক্টোবর পর্যন্ত সময় আদায় করেছে।
এভাবে সময়ক্ষেপনের পাশাপাশি চলছে নানা ভাবে হুমকী ধামকি ভয় ভীতি প্রদর্শন। যাদের চুক্তির মেয়াদ শেষ হচ্ছে তাদের চুক্তিও আর নবায়ণ করা হচ্ছে না। কাউকে ঢাকার বাইরে বদলি করা হয়েছে, কাউকে ডেকে নিয়ে বলা হচ্ছে 'বেশি বাড়াবাড়ি করলে পারমানেন্ট করে তারপর একে একে সবাইকে লাত্থি মেরে বের করে দেব।" এক কথায় চাকুরি স্থায়ী করণ ও বেতন কাঠামো ন্যায্য করণের দাবীর 'অপরাধে' বাংলালিংক কর্তৃপক্ষ তাদের জীবনকে আরো অনিশ্চিত করে তুলেছে।
এই অবস্থায় নিরুপায় হয়েই আন্দোলনকারীরা অবশেষে গত ২ অক্টোবর থেকে কর্মবিরতি পালন শুরু করেছেন। এই ধর্মঘট সফল করার জন্য সমাজের সকল স্তরের সচেতন মানুষের সংহতি ও সমর্থন জরুরী।
বাংলালিংকের বিরুদ্ধে কর্মীদের ৭৬ মামলা: আড়ালে কর্পোরেট শ্রম শোষণের অন্ধকার
সর্বশেষ এডিট : ০৩ রা অক্টোবর, ২০১৩ সন্ধ্যা ৭:২৪