সকাল সাড়ে নয় টায় অফিসে বসে প্রথম খবর পেলাম যে, রানা প্লাজা ধ্বসে পড়েছে। সময় আনুমানিক ৮:৩৫/৪০ মিনিটের দিকে এই মর্মান্তিক ঘটনা ঘটেছে। শুনার সাথে সাথেই অফিস থেকে বেড়িয়ে ছুট দিলাম। সাভার বাজারের দিকে। আমার অফিস থেকে ১০/১৫ মিনিটের দূরত্বে। বের হয়ে দেখি যাতায়াতের সুবিধার জন্য ঘটনাস্থলগামী এম্বুলেন্স ও সংশ্লিষ্ট গাড়ী ছাড়া সব ধরণের গাড়ী, রিক্সা, অটো আটকে দেয়া হয়েছে তাই পায়ে হেঁটেই রওয়ানা দিলাম। রানা প্লাজার আশেপাশে ততক্ষণে অলরেডি লোকে লোকারণ্য, মিছিলের মতো আরো হাজার হাজার মানুষ আসছে। কোন রকমে ঠেলে-ঠুলে ভেতরে প্রবেশ করলাম। আহত, নিহত শ্রমিকদের স্থানীয় লোকজনের সহায়তায় বের করে আনা হচ্ছে। দমকল, সেনাবাহিনী ও অন্যান্যরা তখন কেবল আসতে শুরু করেছে। আহত, নিহত এবং যাদের এখনো খোঁজ পাওয়া যাচ্ছিলনা তাদের স্বজনদের আহাজারিতে বাতাস ভারী হয়ে আছে। স্থানীয় সকল ধরণের সেবাদান প্রতিষ্ঠান তড়িৎ এগিয়ে এসেছে উদ্ধার কাজে।
উক্ত ভবনে ৪টি গার্মেন্টস ছিল এবং কম করে হলেও ৪ হাজার শ্রমিক কর্মরত ছিল। ধ্বসে পড়ার ভয়াবহতা চোখে না দেখলে ধারণা করা অসম্ভব। এক কথায় এই পরিস্থিতিকে শুধু মাত্র স্যান্ডউইচ এর সাথে তুলনা করা যায়। ৮তলা ভবনের ছাদগুলো একটার উপরে আরেকটা বসে গেছে। আশে-পাশের ভবন এর ছাদ এবং দেয়াল ভেঙ্গে উপরের শুধু ৮তলা এবং অন্যান্য ফ্লোরের দেয়ালের পাশ্ববর্তী অংশ থেকে একজাহারের বেশী শ্রমিককে উদ্ধার করা কয়েছে যার মধ্যে ১০০ উপরে মৃতদেহ। বাকী ফ্লোর পর্যন্ত যেতে এবং উদ্ধার করতে এই মৃতের সংখ্যা আমার পর্যাবেক্ষণ মতে নিশ্চিত করে বলতে পারি এই মর্মান্তিক ঘটনায় মৃতের সংখ্যা ১০০০ ছাড়িয়ে যাবে। তবে আপনারা নিশ্চয়ই জানেন যে বাস্তব আর সরকারী হিসাব কখনোই এক হওয়াতো দূরের কথা কাছাকাছিও যায় না।
তদন্ত কমিটি গঠন করে যে তদন্ত প্রতিবেদন দেয়া হয় তা কখনোই আলোর মুখ দেখে না। শাস্তি প্রদানতো বহু দূরের কথা। তাই বলছি.........
তোদের পায়ে ধরি "তদন্ত কমিটি করিস না" কঠোর আইন কর যেন মালিক এবং ভবন নির্মানকারী কোন ভাবেই পার পেতে না পারে।
(১০০০ এর উপরে আহত রোগীকে চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে যাদের মধ্যে অনেকেই মূমূর্ষ, তাই বিপুল পরিমাণ রক্তের প্রয়োজন, সেচ্ছায় রক্তদান করতে চাইলে যোগাযোগ করুনঃ
ব্লাড ব্যাংক, "এনাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল"
থানা রোড, সাভার ঢাকা।