৭২ - ৭৫ এ দেশের পরিস্থিতিঃ
১.১৯৭২ এর ১০ ই জানুয়ারী আওয়ামীলীগ তুমুল জনপ্রিয়। আওয়ামী লীগের মিথ্যা ওয়াদায় ভূলে জনগন ৭৩ এর সাধারন নির্বাচনে আলীগকে ভোট দেয়।
২.১৯৭৩ একদলীয় তোফায়েল বিসিএস সংঘঠিত হয়। ছাত্রলীগ নেতা তোফায়েল এর সুপারিশ ছাড়া কারো ভাল সরকারী চাকরী হয়নি।
৩. ১৯৭৪ সালের দুর্ভিক্ষে হাজার হাজার মানুষের মৃত্যু।
৪.৭২-৭৫ এ সেনাবাহিনীকে দুর্বল করে রাখা হয়েছিল। রক্ষী বাহিনী সেনাবাহিনী থেকে গুরুত্ব বেশী পাচ্ছিল।যুবলীগ সভাপতি কর্তৃক মেজর ডালিমের বউ অপহরন হয় । শেখমুজিবকে সাহেবকে বিচার দেওয়ার পরও বিচার হয়নি। (সংশোধনীঃ যুবলীগ সভাপতি নয় তদানীন্তন রেডক্রসের চেয়ারম্যান ঢাকা মহানগর আলীগের সভাপতি গাজী গোলাম মোস্তফা কর্তৃক মেজর ডালিমের বউ অপহরন হয় )। অনাকাংখিত ভূলের জন্য সরি। ১৯.৫.২০১২
৫.৭২-৭৫ এ পুলিশ বাহিনী আওয়ামী বাহিনীতে পরিনত হয়।
৬.সিরাজ সিকদারকে হত্যা করে জাতীয় সংসদে দম্ভোক্তি করা হয়। আদালত কোন ভূমিকা রাখতে পারেনি।
৭.কলাবরেটরস আইন করে বাংলাদেশে একটি সংঘাতময় পরিস্থিতির সৃষ্টি করা হয়।পরে শেখ মুজিব সাহেব সাধারন ক্ষমা ঘোষনা করেন।
৮. জাসদের ৩০ হাজার নেতা কর্মীকে খুন করা হয়। বিরোধীদলকে মামলার পর মামলা দিয়ে বিপর্যস্ত করা হয়।
৯. মুক্তিযোদ্ধের সেক্টর কমান্ডার মেজর জলিল সহ বিরোধী দলীয় অনেক নেতাকে গ্রেফতার করা হয় ।
১০.ত্যাগী নেতা ,মুক্তিযুদ্ধকালীন প্রধানমন্ত্রী তাজউদ্দিন সাহেবরা নিগৃহিত হয়।পদত্যাগ করতে হয় মন্ত্রসভা থেকে।
১১. ৪ টা পত্রিকা রেখে বাকী সব পেপার বন্ধ করে দেয়া হয়।
১২. ২৫ জানুয়ারী ৭৫ সালে পৃথিবীর ইতিহাসের বিখ্যাত কালো আইন বাকশাল জাতীয় সংসদে পাশ করা হয়।
এবার বর্তমান পরিস্থিতির সাথে ৭২-৭৫ এর পরিস্থিতি মিলিয়ে দেখুন।
১.২০০৮ এর ২৯ ডিসেম্বর আওয়ামীলীগ সাধারন নির্বাচনে ভূমিধস বিজয় লাভ করে। ষড়যন্ত্রের তথাকথিত নির্বাচনে ফখরু-মইনুরা পিঠবাচানোর জন্য আওয়ামীদের ক্ষমতা দিয়ে যায়।
২. এখনো হিন্দু , কমিউনিষ্ট , ছাত্রলীগ ব্যাকগ্রাউন্ড ছাড়া কারো ভাল সরকারী চাকরী হচ্ছেনা বলে খবরে প্রকাশ । আগে তোফায়েলদের সুপারিশ লাগত এখন মুক্তিযোদ্ধার সন্তান , নাতি পতি হলেই হল। মেধাবীদের কি দরকার???
৩.বাংলাদেশে চলছে এখন হিডেন হাংগার। ১০ টাকায় চাল খাওয়াবে ওয়াদা করে ৪৫ টাকায় চাল খাওয়াচ্ছে। ব্যাংকগুলো দেউলিয়া হওয়ার পথে। রিজার্ব ফান্ড খালি। খোদা না করুন এই মূহুর্তে বড় একটা প্রাকৃতিক দুর্যোগ হলে মোকাবেলা কেমনে করবে সরকার???
৪. সীমান্তে বিএসএফের উপর্যুপুরী হত্যাকান্ডে মনে হয় সেনাবাহিনী ভারতের অনুগত। বিডিয়ার বিদ্রোহের মাধ্যমে সেনাবাহিনী একটা মেসেজ পেয়েছে আর সেটি হল ভারতের স্বার্থের বিপক্ষে গেলে ৫৭ জন সেনা অফিসার হারানোর মত বড় ঘটনা আরও ঘটবে। সাবেক গোয়েন্দা প্রধানদের গ্রেফতার করে দেশের পক্ষে কাজ করাকে নিরুৎসাহিত করা হয়েছে। মেজর জিয়াদের মত সার্ভিং মেজরদের গুম করে র এর এদেশীয় সদর দপ্তরে আটকে নির্যাতন ও জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে বলে দৈনিক আমারদেশ সহ জাতীয় পত্রিকায় খবরে প্রকাশ। সেনাবাহিনীর অনেক দেশপ্রেমিক অফিসার নিজেকে নিরাপদ ভাবছেন কিনা প্রশ্ন তোলার অবকাশ সৃষ্টি হয়েছে। সেনাবাহিনীর দেশপ্রেমিক অংশ কোনঠাসা বলে খবরে প্রকাশ।
৫.বর্তমান সরকারের আমলে পুলিশের কিছু সাবেক আইজিকে গ্রেফতার করে পুলিশের ভিতরে সরকার বিরোধীদের মানসিকভাবে শায়েস্তা করা হয়েছে।
চীফ হুইফ জয়নাল আবেদীন ফারুকের উপর নির্যাতন কারী এএসপি হারুন এখন প্রমোশন পেয়ে এসপি। কি দারুন সাজা ! হারুন এখন রাজা।
খুলনায় হরতালের সময়ে বিরোধী দলীয় নেতা কর্র্মীদের থানায় ধরে এনে নির্যাতন কারী অছি কামরুল এখন সাসপেন্ড হয়ে প্রমোশন পেয়ে মডেল থানার অছি।
ঢাকায় বেশীরভাগ পুলিশ গোপালগঞ্জের ও ফরিদপুরের। ঢাকার বেশীরভাগ পুলিশ কমিশনারগন কোন জেলার??? এভাবে পুলিশ ৭২-৭৫ এর মত আওয়ামী পুলিশ এ রুপান্তরিত হয়েছে।
৬. ইলিয়াস আলীকে গুম করে ইলিয়াস এর বিপক্ষে অপপ্রচার চালানো হচ্ছে। এক্ষেত্রে কিছু মিডিয়াকে ব্যবহার করা হয়েছে।গুম , ক্রসফায়ার , এনকাউন্টার নিয়ে আদালত কিছুই করতে পারেনি। বরং বিএনপি, জামাত, বিজেপি , এলডিপির শীর্ষ নেতাদের গ্রেফতার করতে হুকুম দিতে পেরেছে। গায়ের জোরে ইতিহাস চর্চার বিষয়ে তাদের আগ্রহটা ভাল। স্বাধীনতার ঘোষক নিয়ে তাদের রায় না দিলেই নয়। আওয়ামী ট্রাইবুনালে কি হচ্ছে দেশবাশী ও বিশ্ববাসী ইতিমধ্যে জেনেছে । এসব ক্ষেত্রে আদালত চরম বিজ্ঞতার পরিচয় দিচ্ছে। আমার মত বাচ্চা লোকমানদের বিপক্ষে আদালত যেকোন কিছু করতে পারঙ্গম কিন্তু পারেনা ফেলানীদের জন্য কিছু করতে।
৭. যুদ্ধাপরাধীদের বিচার নাটকে আওয়ামী হায়েনা ছাড়া সবাই বিরক্ত। ইযাহিয়া খান, জুলফিকার আলী ভুট্টো, টিক্কা খানরা সহ ৯৫ জন পাকিস্তানী সেনা কর্মকর্তা ও ৯৩ হাজার সেনা যারা যারা রেসকোর্স ময়দানে আত্বসমর্পন করেছিল তাদের বিচারের কথা বলা হচ্ছেনা। রাজনৈতিক বিরোধিতার কারনে জামাত নেতাদের বিচার হলে চীনপন্থী কমিউনিষ্টদেরও বিচার নয় কেন?? যারা ১৯৭০ সালের নির্বাচনে আওয়ামী টিকিটে এমএনএ নির্বাচিত হয়ে পাকিস্তানের প্রতি আনুগত্য পোষন করেছিল তাদের বিচার নয় কেন???
৮. জাতীয় নেতাদের ডান্ডাবেড়ী পড়ানো হল। বিনএপি জামাতের অনেক কেন্দ্রীয় নেতা সহ ২ লাখের ও বেশী নেতাকর্মী গ্রেফতার ও মামলার শিকার হল । অবশেষে বিএনপি ও ১৮ দলের শীর্ষ ৩৪ নেতা কারাগারে পাঠানো হল যেখানে একই মামলায় বিএনপির ব্যারিস্টার মাহবুব উদ্দিন খোকন জামিনে।
৯.মুক্তিযোদ্ধা কর্নেল অলিকে গ্রেফতার করা হয়। সরকারের সাথে থাকলে পদ পায় । আর সরকারের বিরোধিতা করলে বদ উপাধি পায়।
১০. বঙ্গতাজ এর ছেলে সোহেল তাজের সাথে ন্যাক্কার জনক আচরন করা হচ্ছে। তাজউদ্দিনের মত সোহেল তাজকেও পদত্যাগ করতে হয়েছে।
১১. আমারদেশ সম্পাদক , সংগ্রাম ম্পাদক , শীর্ষ নিউজ সম্পাদককে গ্রেফতার করা হয়েছে। চ্যনেল ওয়ান, যমুনা টিভি বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। গোপন বিষয় জেনে ফেলায় সাংবাদিক সাগর রুনি রা বলি হয়ে গেলেন।
১২. তত্তাবধায়ক সরকার বাতিল করে সরকার পরিবর্তনের ধারাকে প্রতিরোধ করে আওয়ামীদের ভিশন- ২০২১ পূর্ন করতে ৭২ এর সংবিধানে ফিরে যেতে সংবিধানের ১৫তম সংশোধনী আনা হয়েছে। আন্তধর্ম বিয়ে , কুরআনের মিরাসী আইনের উপর হাত দেয়ার চেষ্টা চালানো হচ্ছে।
এই মূহুর্তেই আওয়ামীলীগ সরকারের সর্তকতা জরুরী।
সর্বশেষ এডিট : ১৯ শে মে, ২০১২ বিকাল ৫:১৬