অনেক দিন আগের কথা , এক বন্ধু কইলো চিরতা খাইলে নাকি শরিলের রক্ত পরিষ্কার হয় এবং সাথে আরো অনেক উপকার আছে , সেই গুলা আর কইলামনা হেইগুলা হালকা +১৮

তাই অনেক দোকান খুইজা খাইজ্জা এক হিন্দীর দোকানে গিয়া চিরতা পাইলাম

প্রতি দিন রাইতে ঘুম যাওয়ার আগে একটি গ্লাসে পানি নিয়ে পরিমান মতন চিরতা ভিজিয়ে ফ্রিজে রেখে দেই , সকালে ঘুম থেকে উঠে খাওয়ার জন্য

কিন্তু চিতরা পানি তিতা হয় না

তাই এক সদস্যের তদন্ত্র কমেটি ঘটন করলাম

এক সময়ে মনে হলো কেউ চিরতার পানি খেয়ে গ্লাসে আবার পানি ভরে রাখে, তাই হয় তো তিতা হয় না

তাই সেই দিন দুই গ্লাসে চিরতা ভিজাছিলাম, এক গ্লাস ফ্রিজে রাখলাম আরেক গ্লাস রুমে রাখলাম , সকালে ঘুম থেকে উঠেই দুই গ্লাস টেস্ট করলাম

দেখি ফ্রিজে যেই চিরতার গ্লাস রেখেছি সেটা তিতা কম আর রুমেরটা অনেক বেশি তিতা

তাই সন্দেহের মাত্রা আরো বেড়ে গেলো । যেহেতু ফ্রিজটা আমরা দুই রুমের তিন জন ব্যাবহার করি , কিন্তু সফিক ভাই দেশে গেছে প্রায় ১ মাস ,তাই এই কাম মামুন ভাই ছাড়া আর কেউ করে নাই , সে হয় তো আমার চিরতার পানি খেয়ে গ্লাসে পানি ভরে রাখে

তাই তাকে জিগানো উচিৎ , সে কি আমার চিরতার পানি খেয়ে আবার পানি দিয়ে রাখে নাকি

তাই তাকে জিজ্ঞাসা করলাম , কিন্তু সে অস্বীকার করলো , এবং বললো সে সুস্থ মানুষ তার কুনু রোগবাগ নাই , কেন সে চিরতার পানি খাইতে যাইবে এবং আরো অনেক অনেক কথা কইলো

তার কথায় আমি কিছুটা অপমানিত বোধ করলাম

তাই সেই দিন মনটা খুবই খারাপ ছিল , কি করে ধরি কে আমার চিরতার পানি খায়

সাড়া দিন বহুত চিন্তা ভাবনা করলাম

কিভাবে কি করুম :O তার পরের দিন রাতে আবারো ঘুমানোর সময় চিরতা ভিজাচ্ছিলাম

তখন চোখের সামনে পরলো ঘুমের ট্যাবলেটের প্যাকেট

দুইটা ঘুমের ট্যাবলেট দিয়া দিলাম চিরতার গ্লাসে এবং গ্লাসটা ফ্রিজের রেখে নিশ্চিন্তায় ঘুম দিলাম , আর মনে মনে বললাম নে বাপ আজকা খাঁ জন্মের চিরতা খাঁ

সকালে যখন ঘুম থেকে উঠে গোসল করে কাজে যাচ্ছিলাম , তখন দেখি মামুন ভাই নাক ডেকে ঘুম যাচ্ছে

দুপুরে যখন বাসায় এলাম তখনও দেখি হেইতে ঘুম যাইতাছে

দুপুরে ভাত খাইয়া মামুন ভাইয়ের দরজার ফাক দিয়া চাইয়া দেখি আর ভাবি আহা কি আরামেই না ঘুমাচ্ছে বেচারা

দুনিয়ার কোন খুজ খবরই নাই , আর ঐ দিকে মনে হয় তার চাকরী যায় যায়

আহা মনে কত সুখ , সুখ না থাকলে কি কেউ এতো বেল করে ঘুমায় নাকি

সকাল ৯টায় তার ডিউটি ছিল , সেই কথাও সে ভুলে গেছে

তাই তাকে আর ডাকা ডাকি না করে আমি আমার রুমে গিয়া দিলাম ঘুম , ঘুম থেকে উঠলাম সন্ধ্যা ৬ টায়

তখনো ঘুম যাচ্ছিল মামুন ভাই

নিজে নিজে একটু

হাসলাম , তার পর রেডি হয়ে বাসা থেকে বেড় হয়ে গেলাম

অফিসে গেলাম একটু কাজ করলাম , তার পর আড্ডা দিয়ালাম রাত ১১ টা পর্যন্ত

বাসায় গিয়া দেখি হেইতে ঘুম যাচ্ছে

তখন মনে হলো চোরের ১০ দিন আর গিরস্থের এক দিন

এই কথাটা আসলেই ১০০% সত্যি

তখন মনে হলো বেচারা সাড়া দিন নাখাওয়া কিছুই খাঁয় নাই

তার জন্যি মায়া হলো

তাই ফ্রিজ থেকে মুরগীর মাংস বেড় করে রান্না করলাম , রান্না শেষ হলো রতা ১২-৪০ মিনিটে । তখন মামুন ভাইয়ের রুমের দরজায় গিয়া ডাকাডাকি শুরু করলাম কুনু খোজ খবর নাই , মনে হয় তিনি ঘুমের রাজ্যে হারিয়ে গেছে । মুবাইল দিয়ে কল দিলাম তার মুবাইলে রিং হচ্ছে কিন্তু কুনু খবর নাই , মনে মনে ভয় লাগছিল , নাক ডাকার শব্দও নাই মইরা গেলো না তো

দরজায় জোরে জোরে থাবড় দিলাম কুনু খবর নাই , মনে মনে কৈ দরজা ভাঙ্গুম কিনা । তখনই ভিতর থেকে রাগান্বিত স্বরে আওয়াজ এলো কেডারে এইভাবে দরজা বাইরায় , শালার ঘুম যাইয়াও শান্তি নাই , এই মাত্র শুইলাম এখনই ডাকা ডাকি শুরু করছে

আমি মনে মনে কৈ খাইছেরে , হেইতে ঘুমাছে প্রায় ২৪ ঘন্টা হইয়া গেছে , আর উনি কয় এই মাত্র ঘুম গেলাম

তখন বললাম মামুন ভাই আমি দরজা খোলেন , দরজা খোলার পর বললাম গতকাল রাতে থেকে ঘুম যাচ্ছে প্রায় ২৪ ঘন্টা হয়ে এলো কোন খোজ খবর নাই আপনার , তাই মনে হলো অসুস্থ কিনা এই জন্যই ডাকলাম , আমার কথা শুনে মামুন ভাই কয় যাহ আমি তো একটু আগেই না ঘুমাছিলাম, তখন তিনি ঘড়ি দেখে বলে দেখ এখন রাত ১ টা বাজে আর আমি ঘুম গেছি রাত ১১,৫৫ মিনিটে , মাত্র ১ ঘন্টা ঘুম গেছি

তখন মনে মনে কইতাছি এক ঘন্টা নারে ভাই , তোমার জীবন থেকে একটা দিন হারাইয়া গেছে , আর এই জন্যে আমি দায়ী

আমি কিছুতেই তাকে বুঝাতে পারছিলাম না যে তিনি এক টানা ২৪ ঘন্টা ঘুম গেছে

সে উল্টা আমার সাথে রাগারাগি করে আবারো ঘুমাইতে গেলো

হঠাত করেই মুবাইলটা হাতে নিয়া কি জানি চিন্তা করতেছিল :O তখন আমার দিকে তাকায় আবার মুবাইলের দিকে তাকায়

তখন আমারে কয় দেখে এক ঘন্টা হয় নাই মুবাইলের মধ্যে ৩৪ টা মিস কল আইছে , এই মুবাইলটা লইয়া যে কি করি

এই মাত্র অফিস থেকে এসে ঘুম দিলাম এরই মধ্যে এতো গুলা মিস কল । তখন বললাম ভাই আজকে ১৭ তারিখ আর আপনি ঘুম গেছিলের ১৫ তারিখ রাতে ১১টার ৫৫মিনিটে , মাঝ খানে এক দিন চলে গেছে, ১৬ তারিখ শেষ হয়ে এখন ১৭ তারিখে এসে পড়েছে , এখন রাত ১ টা ২০মিনিট am' ১৭ তারিখ । তখন সে মুবাইলে তারিখ দেখেও বিশ্বাস করতে চাইলো না :O কিছুক্ষণ আমতা আমতা কইরা কার কাছে যেন কল দিয়া সিউর হইলো

, এবং বলে তার মানে গতকাল আমি অফিসে যাই নাই :O তখন বললাম ভাই গতকাল থেকে কিছুই খান নাই , গোসল করে আহেন আমি ভাত রান্না করেছি , খাইয়া দাইয়া আবার ঘুম যাইয়েন

ভাত খেতে বসে বললাম দুনিয়ার সব কিছুতেই বেজালে ভরে গেছে , এখন মানুষ বিষের মধ্যেও বেজাল মিশায় , কিভাবে যে কি হইবো , তখন মামুন ভাই কয় কেন কি হইছে , আমি এই সুযোগে বলে বসলাম , দেখেননা ভাই দুই তিন দিন ধইরা ঘুম হয় না , তাই গতকাল রাতে চিরতার গ্লাসে দুইডা ঘুমের ট্যাবলেট দিয়েছিলাম , মনে মনে ভাবছিলাম সকালে চিরতা খাইয়া ইচ্ছা মতন ঘুম দিমু , কিন্তু কিয়ের কি চিরতা তো তিতাও লাগলো না উল্টা ঘুমও আইলও না , ঘুম আসার এতো চেষ্টা করলাম , এই সব কিয়ের বালছাল ঘুমের ওষুধ বানায় খাইলে ঘুম আইয়েনা


আমার এই কথা শুনে মামুন ভাইয়ের টাগড়ায় ভাত আটকে গেলো


ওহ ওহ করে কাশ দেওয়া শুরু কইরা দিলো , তখন আমি পানির গ্লাসটা এগিয়ে দিলাম

মনে মনে কইলাম আমার লগে ভিটলামি



হাঁ হাঁ হাঁ হাঁ হাঁ চোরের ১০ দিন আর ...............................