নতুন নতুন অনেক নজীরই সৃষ্টি হলো সবুজ শ্যামল এই বাংলাদেশে। ১৯৭১ সালে যেমন পাক বাহিনী পলায়ন করেছিলো, আমরা স্বাধীনতা পেয়েছিলাম, ঠিক তেমনিই ২০২৪ এ শেখ হাসিনা পলায়ন করলেন, আমরা পূনরায় স্বাধীনতার স্বাদ আস্বাদন করলাম। কিন্তু ব্যপার টা বড়ই অদ্ভুত। শেখ হাসিনার এই পালিয়ে যাওয়ার সাথে আমাদের স্বাধীনতা ফিরে পাওয়ার সম্পর্কটা কি? সে তো আমাদের এই স্বাধীন দেশেরই প্রধানমন্ত্রি ছিলেন। তিনি তো পশ্চিম পাকিস্তানের কোন শাসক ছিলেন না। সেই ১৯৭৫ পরবর্তী রাজনীতিতে আওয়ামিলীগের নেতৃত্বে থাকা এই মহিলা জড়িয়ে ছিলেন বাংলাদেশের প্রতিটা নাগরিকের বিচার বিবেচনায়। সে ছাড়া আওয়ামিলীগ অকল্পনীয় কিছু। সেই শেখ হাসিনা পালিয়ে গেলেন দেশ ছেড়ে আর আমরা পেলাম নতুন করে স্বাধীনতার স্বাদ। তার মানে এই দাঁড়ায় যে তিনি তার ক্ষমতার চুড়ান্ত অপব্যবহার করে, সাধারণ মানুষের ভোটের অধিকার হরণ করে, মানুষের মুক্ত ও স্বাধীন চেতনাকে রুদ্ধ করে, বাক, সংবাদ ও মত প্রকাশের স্বাধীনতাকে আটকে দিয়ে নিজেই পশ্চিম পাকিস্তান এর ভুমিকায় ছিলেন। আর তার এই গুম খুনের যে চীত্র এখন প্রকাশ পাচ্ছে, ভুক্তভোগী মানুষ আয়না ঘরের অভিজ্ঞতা শেয়ার করছে, তা শুনে যে কেউ বিস্মিত হতবাক হতে বাধ্য।আর তাই যখনই তিনি পালিয়ে গেলেন, জাতি আয়না ঘর থেকে মুক্ত হলো আর আমরা আবার মুক্ত হলাম- স্বাধীনতার স্বাদ পেলাম। বস্তুত উনি পুরো বাংলাদেশটাকেই একটি আয়না ঘর বানিয়ে দেশের মানুষের উপর জুলুম আর নির্যাতন চালাচ্ছিলেন।
উনি যেভাবে সরকারি প্রতিটা প্রতিষ্ঠানকে দারা আওয়ামি দলদাসে পরিণত করেছে। বিশেষ করে প্রশাসন, বিচারালয় ও পুলিশ ও র্যাব বাহিনীকে যে পর্যায়ে নিয়ে এসেছেন, তাতে সবাই ভাবতো এরা সবাই একটি নির্দিষ্ট দলের কর্মী। এরা কেউ বাংলাদেশের নয়, আওয়ামিলীগের। ঘুষ - কমিশন বাণিজ্যকে তারা প্রাতিষ্ঠানিক রুপ দিয়েছে। দেশের একজন প্রধানমন্ত্রী কি সুন্দর করে বলে আমার পিয়ন ৪ শত কোটি টাকার মালিক! হেলিকপ্টার ছাড়া চলেই না। সেই হেলিকপ্টারে করেই তাকে প্রাণ নিয়ে দেশ থেকে পালাতে হলো। কতটা দম্ভ আর অহমিকা থাকলে মানুষ এমনটি বলতে পারে! এমনকি শেষ পর্যন্ত বাংলাদেশের মানুষের শেষ ভরসার স্থল আর্মিকে পর্যন্ত তারা বিতর্কিত করেছে। তাদের প্রতি মানুষের যে শ্রদ্ধা ভালোবাসা আশা ভরসা ছিলো, সেই ভাবমুর্তিকে তারা দলদাসে পরিণত করেছে। দলদাস দিয়ে তারা মানুষের উপর নিপিড়ন নির্যাতন চালিয়েছে। ন্যায় বিচার গুমড়ে কেঁদেছে।
ফখরুদ্দিন - মইন উ আহমেদ কিভাবে আমাদের গনতন্ত্রকে এক নায়কতন্ত্রে নিয়ে গেলো তার সম্পূর্ণ ইতিহাস জাতি জানতে চায়। দেশের মধ্যে ঘটা সকল নির্বাচনের নামে প্রহসন হয়েছে, যত খুন গুম হয়েছে, টাকা পাচার হয়েছে, দূর্নীতি হয়েছে, লুটতরাজ হয়েছে, তার একটি ডকুমেন্টারী তৈরী হওয়া এখন সময়ের দাবী। পিলখানা হত্যাকান্ড, আবরার হত্যা কান্ড, সাগর রূনি হত্যাকান্ড, শাপলা চত্বর হত্যাকান্ড, ব্লগার হত্যা কান্ড, আর্টিসান হত্যাকান্ড, জঙ্গি নাটকের মাধ্যমে বিভিন্ন হত্যাকান্ড, সেভেন মার্ডার, বালিশ কেলেঙ্কারী, পর্দা কেলেঙ্কারী, বাংলাদেশ ব্যাক সহ রিজার্ভে থাকা টাকা গায়েব, লক্ষ লক্ষ টাকা পাচার সহ সকল অনিয়ম অন্যায় দুঃশাষনের ধারাবহিক প্রতিবেদন এই দেশের প্রথিতজশা সাংবাদিক - বুদ্ধিজীবি ভায়েরা লিখবেন ও প্রচার করবেন বলে আমি আশা করি। যে সকল দলদাস এসব অপকর্মের মাধ্যমে নিজেদের আখের গুছিয়েছেন, করেছেন বেগম পাড়া, যারা যারা এসব অপকর্মের সাথে জড়িত, তাদের সবার নাম সহ প্রতিবেদন গুলো আসা উচিৎ। রেন্টুর লেখা বই " আমার ফাঁসি চাই" এর মতো আরো একটি বই বাজারে আসুক। যেনো পরবর্তী প্রজন্ম জানতে পারে আওয়ামিলীগ নেত্রী বঙ্গবন্ধু কন্যা জননেত্রী শেষ থুক্কু শেখ হাসিনা কি মানব নাকি দানব ছিলেন। যেহেতু আমরা বাঙ্গালীর মেমোরী গোল্ড ফিশ জাতীয় মেমোরি। দুদিন বাদে সব ভুলে যাবো ..... !
সর্বশেষ এডিট : ০৭ ই আগস্ট, ২০২৪ বিকাল ৪:৩২