বাঙলাদেশে জন্মাও।
দেশ ছাড়ো।
ভারতের দিকে নয়,
ভগবানের দোহাই, ওরা শুধু নিজেদের লোকই ভাববে।
অন্যকোথাও যেমন ধরো
কানাডা, আমেরিকা, বিলেত
অথবা ইচ্ছে হলে যাও মঙ্গলে।
তা যাকগে,
যদি শহরের শেষমাথা খুব একটা দূর বা রসময় মনে না লাগে
তাতে তোমার কী সমস্যা?
বাড়ি ফেতর এসো, প্রায়শ।
মনে হঠাৎ প্রেম জাগাও লোকগানে,
ঢাকাইয়া গালি আর ভ্রমণের বিজ্ঞাপণে।
পরিচিত পতাকার দিকে হাসি দিও, কিন্তু
সন্দেহপ্রবণতা ভালো ধান্দাবাজি যত।
তবে 'কলম' আর 'কালাম' উচ্চারণ আলাদা হয় যেন,
কেননা তা না হলে লিখতে গিয়ে ধর্মযুদ্ধ হবে।
কলকাতা এড়ানোই ভালো সর্বক্ষণ। খুববেশি বাড়ির মতন।
খুঁজতে থাকো উপনিবেশিকতা,
রুটির কতগুলো সমার্থক নামতা,
আর শহীদ দিবস।
সাবধান, এটাকে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস ডেকো না।
মানুষের বেড়ানোর ইচ্ছার সাথে অভ্যস্ত হও
আর যদি কারো আদতেই হয় আসা, বিছাও আসর আর পরব
মুর্গীর ঝোল, লেঁবুর সরবত,
পরোটা-আলুভাঁজি আর যার নেশা যেটায় ,
যা, আসলে, বাড়িতেই ভালো পাওয়া যায়।
এ তথ্যটা সত্যি ভেবেই আলোকজ্জ্বল হোক বিশ্রী যাত্রা
আর নতুন সহকর্মী।
এটাকে ভাবো বাসাবাড়ি আর ঘরবাড়ি,
শব্দকে দেখো পৃথক উপকূলে বিস্তৃত ভঙ্গিমায়।
যখন তোমাকে সত্যিকার অর্থে বিদেশী না বলা হয়
মনে হয় লাথি দিয়ে সমুদ্রে ফেলানো
এর সাথে পঁচা শেকড়ের সম্পর্ক নেই কোন
বরং আছে পাশ্চাত্য-দাঁতের পেছনে সমাহিত ইতিহাস বইগুলোর।
খালি মনে করিয়ে দাও তুমি বহিরাগত
দ্বিতীয় ভাষার ভুলভাল অগরল শব্দবন্ধে
যেন ধূলোমলিন শ্রেণীকক্ষ থেকে উঠে আসা গানেরকলি।
বালছাল গাও আর সেটাকে কবিতা বলে চালাও।
লিঙ্গপরিচয় আর সমকামী অধিকারে সমর্থন দাও।
ভারত আর ভারতবর্ষের
ভেতরকার তফাতটা বোঝো।
ভাঙা ইতিহাসগুলো জানো ঠেঁসে
যেন নিজস্ব অবস্থান ধরে রাখা যায়
মালিকানা নির্বেশেষে ।
বাংলা দাসপ্রথাকে অন্য কিছুর সাথে তুলনা কোরো না,
এবং যারা করে তাদের বিরোধি হও
তাদের ইঙ্গমার্কিন গির্জা আঁকড়ে থাকার কথা মনে করাও
কালো দেহ পুড়ে যাওয়ার পরে ঠিক
যেন নিপীড়িতরাই ঐতিহ্যের মালিক।
ডিঙ্গি দেখলেই মনে রেখো কফিনভরা জাহাজ
সীমানা, সন্ত্রাস, আর করুণা, মানবনির্মিত আজ।
জেনো যে তোমার সুবিধার ইতিহাস
বসে থাকে সার্বভৌমত্ব আর নির্বাসিতের মাঝখানে,
ভেবো এটা উষ্ণতার তৃণভূমি।
মাকে আরও ফোন দিও।
জেনে নিও যে সহচর মানেই প্রিয় সম্বোধন।
চুপ করে শোনো; এতদূর আসাটা লজ্জাজনক কিছু যদি না শিখলে।
হও মাতাল চাষার মতো কর্মঠ।
তবে কেউ যেন চাষা বা মাতাল না ডাকে যদি না তা-ই হয়ে থাকো।
যেখানেই যাও সাথে নিও পুরনো পুরাণ আর কালঅয়ন
কে জানে কখন পড়বে প্রয়োজন।
লোকজন জিজ্ঞাসা করলে শুধু বোলো বাড়ি ঢাকায়।
গর্বিত কিন্তু প্রগতিশীল, মনে রেখেও ভুলে যাওয়া যায়,
স্মরণ করেও কিন্তু সীমালঙ্ঘন।
বিচ্ছেদের পেয়ালা থেকে ছিটিয়ে দাও একবার ভূমি,
একবার বর্তমান তুমি
আর শেষতক সামনের পথ।
ছেড়ে দাও। ঐতিহ্য-সংস্কৃতি কোন প্রতিযোগিতা না হোক;
এটা তো অনুগত কিন্তু অপ্রশিক্ষিত দলবলের সহঅধিনায়ক।
পুনর্বিবেচনা করো আকস্মিক পরিবর্তন
ক্রমবর্ধমানের বিপরীতে
ঘরবাড়িবাসার উদ্দেশ্য স্থায়িত্বসমেত।
যে শহরই তোমাকে গ্রহণ করে খুলে দাও হৃদয়,
কিন্তু, সবচে' গুরুত্বপূর্ণ,
আলগা করো হাতের মুঠি,
চলে যাওয়া মানেই ছুরি হয়ে ওঠা নয়।
সর্বশেষ এডিট : ০৮ ই মে, ২০২২ সন্ধ্যা ৬:০৯