প্রথম কথা, মুক্তিযুদ্ধের ছবি যত দিন লাগুক আমাদেরই বানাতে হবে।
সম্প্রতি মুক্তিপাওয়া ছবি যুদ্ধ শিশুর প্রমো যখন প্রথম বের হয়েছিল তখন সেই স্ট্রং ভিজ্যুয়াল গুলো দেখে সত্যি চমকে উঠেছিলাম। সেই সাথে অপেক্ষা করছিলাম ছবিটি কখন মুক্তি পাবে আর কখন আমি দেখব। কাল হিন্দি ভার্শনটা দেখলাম, দেখে মনে পড়ল, এই ছবির নাম "দ্যা বাস্টার্ড চাইল্ড" রাখার জন্য প্রথমে চেয়েছিলেন এর রচয়িতা ও পরিচালক মৃত্যুঞ্জয় দেবব্রত। সম্ভবত এ নিয়ে কোর্ট-কাচারিও করেছিলেন তিনি। যতদূর মনে পড়ে এই ছবি'র নাম বাস্টার্ড চাইল্ডই রাখবার জন্য গোঁ ধরেছিলেন নির্মাতা। পরে অবশ্য নাম পরিবর্তন করে ছবিটি বাংলাদেশ ও ভারতে মুক্তি দিতে পেরেছেন তিনি তার প্রথম নির্মীত পূর্ণ দৈর্ঘের কাহীনি চিত্র "যুদ্ধ শিশু"।
ছবিটা দেখে প্রথমে যে প্রশ্নটি মনে এলো এই ছবির নাম ঠিক কী অর্থে নির্মাতা বাস্টার্ড/ না-জায়েজ/ অবৈধ চাইল্ড/ আওলাদ/ শিশু রাখতে চেয়ে ছিলেন? ছবিটি অনলাইনে খুজতে গিয়ে ছবি সম্পর্কিত কিছু টিভি ইন্টারভিউ দেখা হয়ে গেছে। এক ইন্টারভিউতে শুনলাম নির্মাতা "বাস্টর্ড" শব্দ নিয়ে মানুষের কনসেপ্শন, মিসকনসেপ্শন ইত্যাদি প্রসঙ্গ এনে কথা বলছেন।
চলচ্চিত্রের নির্মাতার বয়স তিরিশের আশেপসে হবে, পয়সা যোগাড় করে বাংলাদেশের মুক্তি যুদ্ধের পটভূমী নিয়ে ছবি করবেন বলে ঠিক করেছেন। শুরুতেই ছবির নাম রাখলেন যা তা নিয়ে শোরগোল হল। ভিক্টর ব্যানার্জি, ফারুখ শেখ এদের এমন কোন অভিনয় নয়, শুধু ভিক্টর ব্যানার্জি আর ফারুখ শেখ নাম দুটি ছবির সাথে জুড়েছেন। ছিল রাইমা সেন আর ইন্দ্রনীল। জীবনের প্রথম ছবি করে একটা বিতর্ক তুলে এক্সট্রা মাইলেজে নিজেকে অনেকটা এগিয়ে নেবার খায়েসেই কী বেশী ছিল এ ছবি নির্মান করার কারন? ছবিতে না ধরতে পেরেছে মুক্তি যুদ্ধের বাংলাদেশ না ধরতে পেরেছে বর্তমান বাংলাদেশ। মনগড়া এক কল্পকাহিনীর চলচ্চিত্র "যুদ্ধ শিশু"। এই ছবি কী নেহায়েতই নির্মাতার 'অজ্ঞতার শিশু' নাকি কোন 'এজেন্ডা শিশু' তা জানবার আগ্রহ রইল।
শেষ কথা, মুক্তিযুদ্ধের ছবি যত দিন লাগুক আমাদেরই বানাতে হবে।