আসলে যৌনটা কথাটা উঠলেই কেমন একটা বিতর্ক শুরু হয়ে যায়৷ যৌনতা নিয়ে যেমন বহু কেলেঙ্কারি,সেরকমই যৌনতা নারীমুক্তির প্রতীক হয়ে দাঁড়িয়েছে। কিন্তু যৌন কেলেঙ্কারির ঘনটাগুলো বারবার নারীমুক্তির প্রতীককে ছেপে গেছে।তেমন এই কেলেঙ্কারিজনিত বিষয়গুলো বরাবরই সবার নজরে এসেছি। দেশে কিংবা বিদেশে বলা চলে প্রতিটি রাষ্ট্রের বিভিন্ন অঙ্গনের ব্যক্তিদের সঙ্গে যৌন কেলেঙ্কারির ঘটনা জড়িয়েছে।সামাজিক অঙ্গনের ব্যক্তিদের থেকে শুরু করে রাষ্ট্রের সর্বোচ্চ ক্ষমতাধর ব্যক্তি পর্যন্ত এই কেলেঙ্কারিতে জড়িয়েছেন। আর তা থেকে বাদ পড়েনি ভারতীয় রাজনৈতিক অঙ্গনও পযন্ত। ভারতীয় রাজনীতির অঙ্গন নানা কারণে কলঙ্কিত হয়েছে। নানাবিধ কেলঙ্কারিতে জড়িয়েছেন ভারতীয় রাজনীতিবিদরাও। সেসব কেলেঙ্কারির মধ্যে রয়েছে যৌন কেলেঙ্কারিও। ব্লগে থাকা সকল পাঠকদের জন্য ভারতীয় রাজনীতির জগতের সবচেয়ে বহুল আলোচিত কয়েকটি যৌন কেলেঙ্কারির ঘটনা তুলে ধরা হলোঃ
সুরেশ রাম কেলেঙ্কারি ১৯৭৮সাল
প্রখ্যাত দলিত নেতা জগজীবন রাম তখন প্রধানমন্ত্রী মোরারজি দেশাইয়ের সরকারের উপ প্রধানমন্ত্রী। ১৯৭৭ সালের নির্বাচনে জনতা দলের জগজীবন ইন্দিরা গান্ধীকে ধরাশায়ী করেছেন। সেই সময়েই জগজীবনের পুত্র সুরেশ রামের কয়েকটি নগ্ন ছবি প্রকাশিত হয়েছিল একটি পত্রিকায়। ছবিগুলিতে কয়েকটি মেয়ের সঙ্গে অশালীন অবস্থায় দেখা গিয়েছিল সুরেশকে। মজার বিষয় হল যে পত্রিকায় সুরেশের ছবিগুলি প্রকাশিত হয় তার সম্পাদিকা ছিলেন ইন্দিরার পুত্রবধূ মানেকা গান্ধী। এই কেলেঙ্কারির ব্যাপক প্রভাব পড়ে জগজীবনের রাজনৈতিক জীবনে।
তার ফলে জনতা দল দুই ভাগে বিভক্ত হয়ে যায়। মোরারজি দেশাইয়ের সরকারও ক্ষমতা থেকে নড়ে যায়। কংগ্রেসের সমর্থনে নতুন প্রধানমন্ত্রী হন চরণ সিংহ।
সঞ্জয় যোশি কেলেঙ্কারি ২০০৫সাল
বিজেপির সেসময় সাধারণ সম্পাদক সঞ্জয় সাধারণভাবে তার কঠোর নিয়ামানুগ জীবনযাপনের জন্য পরিচিত ছিলেন। কিন্তু তার রাজনৈতিক জীবনকে নাড়িয়ে দিয়েছিল সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত একটি ভিসিডি এবং একটি অডিও ক্যাসেট। ভিসিডিটিতে দেখা যায় সঞ্জয় এক নগ্ন মহিলার সঙ্গে বিছানায় শুয়ে আছেন। ক্যাসেটটিতে ছিল সঞ্জয়ের সঙ্গে আর এক মহিলার কথোপকথন। সেই টেপে সঞ্জয় বলছিলেন কোনও এক অপূর্ণ প্রতিশ্রুতির কথা। সে সময়ে বিজেপির অন্দরে নরেন্দ্র মোদীর বিরোধী গোষ্ঠীর নেতা বলে পরিচিত সঞ্জয়। আসলে দলের অন্তর্দ্বন্দ্বের শিকার তিনি এমনটাই মনে করেন অনেকে।
এন ডি তিওয়ারি কেলেঙ্কারি ২০০৯সাল
তিওয়ারি তখন অন্ধ্র প্রদেশের রাজ্যপাল। সেই সময়ে একটি তেলুগু চ্যানেলের পরিচালিত স্টিং অপারেশনের সদস্যরা তিওয়ারির সরাকারি বাসভবনে ঢুকে পড়েন। তিওয়ারি তখন তিন মহিলার সঙ্গে বিছানায় শুয়ে আছেন। এই ঘটনার পর হিসেবে তিওয়ারি রাজ্যপালের পদ থেকে পদত্যাগ করেন এবং প্রকাশ্যে ক্ষমাও চান জনগণেরক কাছে।
মহীপাল মদের্না-ভাঁওরি দেবী কেলেঙ্কারি ২০১১সাল
মহীপাল ছিলেন রাজস্থানের জলসম্পদ মন্ত্রী। সে সময়ে ভাওরি দেবী নামে এক নার্সের উধাও হয়ে যাওয়ার ঘটনায় ভাওরির স্বামী মহীপালের বিরুদ্ধে ভাওরিকে অপহরণের অভিযোগ তোলেন।পরে জানা যায় ভাওরি একটি ভিডিও ক্লিপ দেখিয়ে মহীপালকে ব্ল্যাক মেলের চেষ্টা করছিলেন। ভিডিওটিতে ধরা ছিল ভাওরির সঙ্গে মহীপাল সহ আরও কিছু সরকারি আধিকারিকের যৌন সম্পর্কের ছবি। এর ফলে মহীপালকে তার মন্ত্রিত্ব থেকে বরখাস্ত করা হয়। পরে ভাওরি হত্যাকাণ্ডে মহীপাল গ্রেফতারও হয়েছেন।
অভিষেক মনু সিঙ্ঘভি কেলেঙ্কারি ২০১২সাল
কংগ্রেস নেতা অভিষেকের ড্রাইভার একটি সিডি প্রকাশ করেন যাতে এক মহিলা আইনজীবীর সঙ্গে সেই মহিলারই সুপ্রীম কোর্টের চেম্বারে অভিষেককে আপত্তিকর অবস্থায় দেখা যায়। অভিষেক পরে অভিযোগ তোলেন তার ড্রাইভার তারই অজান্তে এই ভিডিও তুলে তাকে ব্ল্যাক মেল করার চেষ্টা করছে। দিল্লি হাইকোর্টে অভিষেকের আবেদনের ভিত্তিতে হাইকোর্ট এই ভিডিওর প্রচার নিষিদ্ধ করে। কিন্তু ততোদিনে ভিডিওটি সবার হাতে হাতে পৌঁছে যায়। সেইসঙ্গে কলঙ্ক রটে যায়।
তথ্য ইন্টারনেট