গণতন্ত্র কার জন্য? - তত্বগতভাবে বলা হয় গণতন্ত্র হচ্ছে “নাগরিক” বা “সিটিজেন” দের জন্য। কথাটি কিন্তু আক্ষরিক অর্থেও সত্যি মনে হয়। অর্থাৎ গণতন্ত্র “নাগরিক” দের জন্য - যারা নগরবাসী, কেবল তাদের জন্য। কারণ কেবল তারাই পারে নিজের আয়ের স্বল্প ক্ষতি স্বীকার করে রাজধানীতে বা নগরে আসীন নব্য রাজাদের জীবনকে একটু হলেও জিম্মি করে নিজেদের সমস্যার কথা তুলে ধরতে, তাদের প্রভাবান্বিত করতে, নিজেদের অধিকার আদায় করতে। এজন্য আমরা দেখি ছাত্র-শ্রমিকদের সমস্যা হলে রাজপথ আটকিয়ে ভাংচুর করতে, শহর নগরের জীবনকে স্থবির করে দিতে, তখন তাদের সমস্যার সমাধান হয়। কিন্তু গ্রামের মানুষের পক্ষে শহরের জীবনকে আঘাত করা খুবই কঠিন, কারণ এটি অপরিচিত এক জগৎ, তাই গ্রামের মানুষের সুখ-দু:খের কথা কিভাবে নব্য রাজাদের কাছে যাবে, কিভাবে তাদের ভাবাবে? পাশ্চাত্যের অনেক দেশে শিল্পায়নের ফলে সবাই প্রায় শহরবাসী হয়েছে, তাই তাদের পক্ষে ‘নাগরিক’ হওয়া সম্ভব হয়েছে, কিন্তু বাংলাদেশের মত গ্রামপ্রধান দেশে তা কি সম্ভব? আর ভাংচুরের মাধ্যমে অধিকার আদায়ের পথটিকে কি আমরা বেছে নেব? ভাংচুর না হলেও কেবল মিছিলও জনজীবনকে বিপর্যস্ত করে, আর যারা মিছিল করে তাদেরও অনেক কাজ ফেলে, অনেক ক্ষতি স্বীকার করেই তা করতে হয়। এ পথও বা কেন বেছে নিতে হবে আমাদেরকে? যদি পদ্ধতি এমন থাকে যে যথাযোগ্য যুক্তিই একটি পরিবর্তনের জন্য যথেষ্ট, তবে তো মিছিল ভাংচুরের দরকার হয় না।
তাই ঠান্ডা মাথায় একটু ভাবা দরকার, যেভাবে গনতন্ত্র সংজ্ঞায়িত হয়েছে বা চলছে তা কি ঠিক? সত্যিই কি সে তার কাঙ্খিত ফলাফল কখনও দিতে পারবে?