যুক্তরাষ্ট্রের প্রস্তাবিত Stop Online Piracy Act (SOPA) এবং PROTECT IP Act (PIPA) নামের দুটি আইন 'স্বাধীন ও উন্মুক্ত ইন্টারনেটের ক্ষতি করবে এবং যুক্তরাষ্ট্রে আন্তর্জাতিক ওয়েবসাইটগুলোর বিরুদ্ধে ‘সেন্সরশিপ’ আরোপের নতুন রাস্তা খুলে দেবে' আর এজন্য এর প্রতিবাদে উইকিপিডিয়া চব্বিশ ঘন্টার জন্য ব্লাকআউট ঘোষণা করেছে এবং এ সময়ে ইংরেজী উইকিপিডিয়া কালো করে রাখা হবে ইউএস ভিউয়ারদের জন্য। ব্লাক আউট শুরু হবে ১৮ই জানুয়ারী ৫টা ইউটিসি টাইমে। মজিলা ও ওয়ার্ডপ্রেসের মত বিখ্যাত দুটি সাইটও ব্লাক-আউটে যোগ দিয়েছে। এছাড়া আরো প্রায় হাজার খানেকের মত ওয়েবসাইট এই ব্লাক আউটে যোগ দিচ্ছে।
গুগল, ফেসবুক, ইয়াহু, টুইটার, ইবে ও এওল এর মত জনপ্রিয় ওয়েবগুলোও সোপা ও পিপার বিরুদ্ধে তাদের অবস্থান জানিয়েছে। অন্যদিকে হলিউডের সিনেমা ও মিউজিক ইন্ডাস্ট্রি ও মিডিয়া মোঘল রুপাক মারডাক এই আইনের পক্ষে এ্যাডভোকেসি করছে। বারাক ওবামা কংগ্রেস ও সিনেটে আইন দুটি পাশ করানোর জন্য উঠে পড়ে লেগেছেন।
গুগল তার হোমপেজে এই আন্দোলনের পক্ষে সমর্থন জানাবে। আসুন আমরাও সমর্থন জানাই।
কেনো সোপা এবং পিপার বিরুদ্ধে দাঁড়াবেন জানার জন্য পড়ুন এখানে ।
উইকিপিডিয়াতে এখন এই দৃশ্য দেখা যাচ্ছে,

যেখানে লেখা রয়েছে,
Imagine a World
Without Free Knowledge
For over a decade, we have spent millions of hours building the largest encyclopedia in human history. Right now, the U.S. Congress is considering legislation that could fatally damage the free and open internet. For 24 hours, to raise awareness, we are blacking out Wikipedia. Learn more.
স্টপ অনলাইন পাইরেসি এ্যাক্ট যে কারণে আমরা মেনে নিতে পারি না:
মার্ভেন এমোরি, একজন ইন্টারনেট পলিসি এক্সপার্ট, তার ব্লগে জানাচ্ছেন,
'আইনের ভাষা অস্বচ্ছ, কিন্তু বোঝা যাচ্ছে সমস্ত কোম্পানীগুলোকে তাদের নিজস্ব সাইট এমনভাবে পর্যবেক্ষণ করতে বাধ্য করা হবে যেনো তাদের সাইট ব্যবহার করে কোনো তথ্য বা সেবা ছড়িয়ে না পড়ে যা আইন ভঙ্গের জন্য তাদেরকে আদালতের দ্বারস্থ করে।'
এর অর্থ সোশ্যাল মিডিয়া সাইট যেমন ফেসবুক, ইউটিউব সহ এমন হাজারো সাইট যেখানে ব্যবহারকারীরা তথ্য, বিষয় তৈরী থেকে শুরু করে বিতরণ করে থাকেন - সেসবে পুলিসিং করতে হবে এবং এটা নি:সন্দেহে এ-সমস্ত কোম্পানীর জন্য একপ্রকার অসম্ভব কর্ম। এত বিশাল পরিমাণের ব্যবহারকারীর প্রতিটি কনটেন্টকে মনিটর করা এককথায় অসাধ্য, এমনকি প্রযুক্তির সহায়তা নিয়েও। কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা সম্পন্ন কোনো হাইটেক প্রোগ্রাম তৈরী করা গেলে হয়তো সম্ভব হতে পারে, কিন্তু সে তো অনেক দূরের স্বপ্ন!
ক্রমবর্ধমান ইন্টারনেট ব্যবহারের ফলে বিভিন্ন সোশ্যাল মিডিয়া সাইটগুলোতে যে সমস্ত বিষয় তুলে ধরা হচ্ছে সেসব দ্রুত ছড়িয়ে পড়ছে নানা দিকে, এতে জনমত সংগঠিত হচ্ছে, তথ্যের অবাধ প্রবাহ নিশ্চিত হচ্ছে। উদাহারণ সরূপ বলা যায় টেলিভিশনের কোনো রিপোর্টের ক্লিপ ইউটিউব, ফেসবুকের কল্যাণে ছড়িয়ে পড়ছে নানাদিকে, কিন্তু প্রস্তাবিত এই আইনের ফলে টেলিভিশন কোম্পানী এর বিরুদ্ধে কপিরাইট ভঙ্গের অভিযোগ তুলতে পারবে। ফলে একজন ব্যবহারকারীর একটা আপলোডকে ইস্যু বানিয়ে সমগ্র সাইটটি বন্ধ করে দেয়া হতে পারে।
দি ইলেকট্রনিক ফ্রিডিম ফাউন্ডেশন সতর্ক করে দিয়েছে যে এই বিল যদি আইনে পরিণত হয় তবে ফ্লিকার, ইটসি, ভিমিওর মত ওয়েব বন্ধ হয়ে যেতে পারে। এছাড়া ক্লাউডিং থেকে ডাটায় সংযুক্তি বা লিংক স্থাপনও এর কারণে নিষিদ্ধ হতে পারে, যা প্রযোজ্য হবে কোনো সার্চ ইন্জিন ফাইন্ডিংস ও টুইটারের ক্ষেত্রেও।
সোশ্যাল মিডিয়া যে প্রতিদিনের অভ্যস্ততায় নতুন মাত্রা যোগ করেছে এবং যার ফলে তথ্য প্রবাহের অবাধ গতি সঞ্চার হয়েছে - ইউএস-এ প্রস্তাবিত এ আইন সমস্ত বিশ্বে এক নেতিবাচক প্রভাব ফেলবে নি:সন্দেহে।
সর্বশেষ এডিট : ১৮ ই জানুয়ারি, ২০১২ দুপুর ১:৩৮