ডেঙ্গু বর্তমানে বাংলাদেশের অন্যতম বড় স্বাস্থ্যঝুঁকি হিসেবে দেখা দিয়েছে। প্রতি বছর বর্ষা মৌসুমে ডেঙ্গুর প্রকোপ বাড়তে থাকে, যার প্রধান কারণ হচ্ছে এডিস মশার বংশ বিস্তার। তবে, ডেঙ্গু প্রতিরোধে আমাদের প্রতিদিনের ছোট ছোট পদক্ষেপগুলোই হতে পারে এর থেকে মুক্তির উপায়।
জমা পানি ফেলা: প্রধান দায়িত্ব
ডেঙ্গু প্রতিরোধের মূলমন্ত্র হলো এডিস মশার প্রজনন ক্ষেত্র নষ্ট করা। এডিস মশা সাধারণত ঘরের আশপাশে জমে থাকা পরিষ্কার পানিতে ডিম পাড়ে, যা পরবর্তী সময়ে বড় বিপদের কারণ হয়ে দাঁড়ায়। তাই, নিয়মিত প্রতিদিন জমা পানি ফেলে দেওয়ার অভ্যাস গড়ে তুলতে হবে। টবে, ফুলের গাছের নিচে, ছাদে, বাথরুমে বা অন্যান্য স্থানে জমে থাকা পানি ফেলে দিয়ে এডিস মশার জন্ম রোধ করা সম্ভব।
নিজ আঙিনা পরিষ্কার রাখা: দায়িত্ববোধের পরিচায়ক
নিজের বাসস্থান, আঙিনা, আশপাশের জায়গা পরিষ্কার রাখা আমাদের নাগরিক দায়িত্ব। এডিস মশার প্রজনন জায়গা বন্ধ করতে হলে এই সচেতনতা গুরুত্বপূর্ণ। অনেক সময় আমরা নিজের বাসার ভেতর পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা বজায় রাখলেও বাইরের জায়গাগুলোতে অযত্ন রেখে দিই। এ কারণে, শুধু ঘর নয়, ঘরের বাইরেও নজর দিতে হবে, যাতে কোনো জমা পানি না থাকে।
কেরোসিনের ব্যবহার: সহজে প্রতিরোধ
যাদের জন্য জমা পানি সরানো কঠিন বা সম্ভব নয়, তারা সহজ উপায়ে কেরোসিন ব্যবহার করতে পারেন। জমে থাকা পানিতে কেরোসিন ঢেলে দিলে মশার লার্ভা নষ্ট হয় এবং এডিস মশার প্রজনন বন্ধ করা যায়। এটি একটি কার্যকর উপায় যা সহজে বাস্তবায়ন করা যায়।
সচেতন নাগরিক হিসেবে দায়িত্বশীল ভূমিকা
প্রতিটি নাগরিকের উচিত নিজ নিজ জায়গা থেকে ডেঙ্গু প্রতিরোধে সক্রিয় ভূমিকা পালন করা। সমাজের প্রতিটি স্তরের মানুষকে এই বিষয়ে সচেতন করতে হবে এবং এটি কেবল একা সরকারের দায়িত্ব নয়। পরিবার থেকে শুরু করে সমাজের সর্বস্তরের মানুষকেই এগিয়ে আসতে হবে।
যে দেশে আমরা বাস করি, সেই দেশকে ডেঙ্গু মুক্ত করতে চাইলে প্রতিদিন ছোট ছোট দায়িত্ব পালন করা জরুরি। নিজ আঙিনা পরিষ্কার রাখা, জমা পানি ফেলে দেওয়া এবং সহজে কেরোসিন ব্যবহার করা আমাদের সেই লক্ষ্য পূরণে সহায়ক হবে।
ডেঙ্গুর বিরুদ্ধে প্রতিদিনের এই সংগ্রামই আমাদের নিরাপদ এবং সুস্থ জীবন নিশ্চিত করবে।
লেখক- আজহার উদ্দিন
সর্বশেষ এডিট : ২৮ শে সেপ্টেম্বর, ২০২৪ সকাল ১০:০৮