সামহোয়্যার ইন ব্লগে আমার মত অভাজনকেও প্রথম পাতায় লেখার অনুমতি দেওয়ার জন্য কর্তৃপক্ষকে আন্তরিকভাবে ধন্যবাদ।কবিতাটি সামহোয়্যার ইন ব্লগ কর্তৃপক্ষকে উৎসর্গ করা হল।
(একটা বিষয় খেয়াল করেছেন -আমরা কোন কবিতা বা গল্প-উপন্যাস কারোর নামে উৎসর্গ করে পরবর্তীতে কিন্তু নিজের জিনিস বলেই দাবী করি।কাউকে যে উৎসর্গ করা হয়েছিল পরে আর তা মনে থাকে না।এ থেকে প্রমাণিত হয়, উৎসর্গ করাটা হল একটা মন ভুলানো কাজ।তবে এখানে ব্লগ কর্তৃপক্ষেরও যে মন ভুলানো হচ্ছে তা কিন্তু না।এ ব্যাপারে তারা নিশ্চিত থাকতে পারেন।)
অকৃতকার্য
-----------
অতঃপর হার মেনেছি,-
হার মেনেছি তার অনপেক্ষনীয় শেষ শক্তিটির কাছে,
যে শক্তির প্রতিই ছিলাম এতকাল সদাসন্ত্রস্ত
অবাক লাগে তীলে তীলে ভক্তিভরে উদ্দীপিত করা বোধের পবিত্র-প্রজ্বলিত আগুন
কীভাবে দপ করে নিভিয়ে দিয়ে যায়?
কীভাবে ইমানের শক্ত খুটির দুর্বল অংশ সণাক্ত করে,
করে দেয় পুরো খন্ড বিখন্ডায়িত?
মুহূর্তেই ছিন্ন হয় আমার বিশ্বাসমালা
অনন্তর আমি সম্পুর্ণরূপেই আত্মসমার্পণ করি,
জলাঞ্জলি দিই আমার অখিল পুণ্য। আর নিমজ্জিত হয় তুচ্ছ সুখের কেলিতে
আমার মস্তিষ্ক এখন উন্মাদের মত দিকহারা
আমার চেতনা যেন আচ্ছন্ন জানোয়ারের বিষাক্ত লালায়
আমার আমিতে যখন লেলিয়ে উঠেছে পশুত্বের চূড়ান্ততা।
হঠাৎ
বিদ্যুৎ স্পর্শের মত চমকে উঠি
আর চমকে উঠি তখনি,যখন সর্বনাশের আর কিছু বাকি নেই
কারণ ততক্ষণে আমার সমস্ত টাটকা রক্তে ধরে ফেলেছে পচন
দেহের প্রতিটি অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ, শিরা উপশিরা ছেয়ে গেছে পাপিষ্ঠতায়
আমি উদভ্রান্তের মত হয়ে যায়
আমি হতবুদ্ধির মত ফ্যালফ্যাল ঝাপসা দৃষ্টিতে পাশ ফিরে তাকায়
এবং ফিরেই দ্বিতীয়বারের মত ভয়াবহ রকমের চমকে উঠি
কারণ পাশে কোন শয্যাশায়িণী নেই
তার পরিবর্তে বিছানার পাশে অজস্র ছলের পাখা নিয়ে দাঁড়িয়ে আছে শয়তানরূপ এক মৌন ঘাতক
তখন আর আমার বুঝতে কিছু অবশিষ্ট রইল না
মুহূর্তের মধ্যেই আমার সমস্ত শরীরে ভর করল ক্রোধের ক্ষিপ্ত অগ্নি
আমি উন্মত্তের মত শশব্যস্ত হয়ে উঠি,
এক ঝটকায় টুটি ছিড়ে নিতে যাই ঘাতকের
কিন্তু ঘাতক নাগালের বাইরে
সে সহজেই পিছিয়ে যায় দ্রুত লয়ে
এবং হাসে।হাসে কেমন অদ্ভুত পরিতৃপ্তিতে
রাগে ফেটে বিষম হিংস্র যখন আমি
সহসা ঘাতকের কর্কশ গলা থেকে প্রতিধ্বনির মত উচ্চারিত হয় কিছু অনাকাঙ্ক্ষিত উক্তি
"তুমি অকৃতকার্য,তুমি পরাশ্রিত,
তুমি আজ থেকে প্রভু ইবলিসের দাস,আমাদেরই সদৃশ জনাব"
বলেই ঘাতকের মুখের পরিতৃপ্তির হাসি আরো বিস্তৃত হয়
অতঃপর ধীরে ধীরে বিলীন হয়ে যায় তার ঘোর লাগা অবয়ব
আমি তখন নরম শয্যার 'পরে বাকরুদ্ধ হয়ে পড়ে আছি