somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

বিকৃত আত্মার পৃষ্ট-পোষক (ধারাবাহিক উপন্যাস)

০৩ রা জুন, ২০১৬ রাত ৯:১৭
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :


আস্তে আস্তে শোকের ঘনত্ব কমতে থাকলো।মোবারক শহরে বাড়ি তৈরির কাজে হাত দিল।গ্রাম থেকে সরন্জাম ও শ্রমিক সরবরাহ করা হল।মেজ ছেলে কেরামত কে দায়ীত্ব দেওয়া হল।মাঝে মাঝে মোবারক নিজে উপস্থিত থেকে দিক নির্দেশনা দিয়ে সন্ধা নাগাদ গ্রামে ফিরত।হেদায়েতও উপস্থিত থেকে বাড়ি নির্মান তদারকি করত।বাড়ির যায়গা টুকু জঞ্জলে ভর্তি ছিল।শহর তখনো শহরের আদলে গড়ে উঠেনি।পুরো শহর জুড়ে হাতে গোনা কয়েক খানি পাকা বাড়ি। মোবারক বাড়ি বানালো খড়ের চাল ও বাঁশের চাটাইয়ের বেড়া দিয়ে।নব নির্মিত চার রুম ওয়ালা বাড়িতে হেদায়েত স্ব-স্ত্রীক বসবাস শুরু করল।হেদায়েতের একা থাকার ব্যাপারটি চিন্তা করে মেজ ছেলে কেরামত কে সেখানে থাকার নির্দেশ দিল মোবারক।মোবারকের দেওয়া ভূর্তুকি দিয়ে শহরের সংসার চলতে লাগল।মোবারকের প্রাথমিক প্রচেষ্টা সফল, এবার তার ভাবনা ছেলেদের উপার্জনের পথ বের করে দিতে হবে।বাড়ির সামনে মুল সড়কের পাশে সারিবদ্ধ দোকান, মোবারক দোকান মালিকের সাথে যোগাযোগ করে ভাড়ামুল্যে একটা রেডিমেট দোকান বরাদ্ধ নিল।দোকানটিতে আগে ফার্নিচার তৈরি হত।পুর্বের দোকানদার পেশা বদলাবে তাই প্রয়োজনীয় সুযোগ সুবিধা রেখেই সে দোকান ছেড়ে দিয়েছে।মোবারক দোকান বুঝে নিয়ে হেদায়েতকে পরিচালনার দায়ীত্ব দিল।মাস খানেক পর ঈশ্বরদী শহরের বাজারে জায়গা সহ দোকান ক্রয় করে মেজ ছেলে কেরামতকে পরিচালনার দায়ীত্ব দিল।সেটা গেন্জি ও সেন্ডেলের দোকান ছিল।কেরামত প্রাথমিক স্কুল পাস উচ্চ বিদ্যালয়ের ছাত্র ছিল, ঠিকমত লেখাপড়া করত না, দুষ্টুমির কারণে লেখাপড়া ছেড়ে দিয়েছে। এখন মোবারকের পানের বরজ,ও সংসারের কাজ করে। কেরামত মোবারকের অতি আদরের ছেলে-তাই কেরামতের ব্যাপারে মোবারকের শাসনের বালাই ছিলনা।মোবারক দেখল কেরামতের যখন লেখাপড়াই মন নেই, তখন সময় থাকতে সেও ব্যাবসা বানিয্যের হাল ধরে নিজেকে গড়তে শিখুক।কেরামত মোবারকের সিদ্ধান্তে খুশিই ছিল।দুই ছেলের যৌথ আয়ের পথ করে দিয়ে মোবারক কিছুটা স্বস্থি পেল।মোবারকের উপর চাপ কমল, পুর্বের মত বাড়ি থেকে আর খরচা দিতে হয়না।বিশেষ প্রয়োজনে বাড়ি থেকে মাঝে মাঝে ভুর্তুকি দিলেই চলে।আস্তে আস্তে শহরে বসবাসরত লোক জনের সাথে হেদায়েতের ভাব জমতে লাগল।সমাজ অবয়বে যাদের পরিচিতি ছিল হেদায়েত তাদের ডাকে সাড়া দিত, মিশত। আর কেরামত আধা গ্রাম আধা শহর ভাবখানা নিয়ে তস্কর লস্কর টাইপের লোক জনের সাথে উঠাবসা করত।কেরামতের গায়ের রং ফর্সা, চেহারায় দ্যুতি আছে, বেশি কথা বলে, বিড়ি খায়, আর অবাধ দুরন্তপনা।তবে এই সব বৈশিষ্টকে কেন্দ্র করে মানুষের কাছে তার গ্রহন যোগ্যতা থাকলেও গুরুত্বটুকু ছিল বিবেচনায়।সমাজের যে শ্রেনীর সাথে বর্তমানে হেদায়েত উঠাবসা করে, সেখানে ফার্নিচার ব্যাবসায়ীর পরিচিতিটুকু তার নিজের কাছে বেমানান মনে হতে লাগল।কিন্তু মোবারকের দেওয়া ব্যাবসার দায়ীত্ব যেহেতু তার-তাই ধুর তরি ছাই ভাবখানা মাথায় বদ্ধমুল করে ব্যাবসার প্রতি সে উদাসীন।” অভিলাসি ধরনী বিলাসি চাহনি তাকে নিয়ে কাব্য রচনা করতে চাইলো” হরেক চিন্তা ভাবনায় সে কি করবে হিসাব মেলাতে থাকে।শেষ মেষ নিজের ইচ্ছাই প্রধান্য পেল। মোবারকের অনুমতি ছাড়া দোকান বিক্রি করে কন্ট্রাকটারি পেশায় নিজেকে জড়াল।সমাজ অবয়বে সে নিজেকে মেলে ধরতে চাইলো।পয়সার অস্তিত্ব টের পেয়ে মাছুমার বিলাসিতার সখ জাগে, ভালবেসে হেদায়েত মাছুমাকে বিয়ে করেছে, স্ত্রীর অধিকারের সুবিচার সে কখনই করতে পারেনি, তাই মুর্খ স্ত্রীর অযাচিত আবদারের কাছে হেদায়েত আত্মসমার্পন করতে বাধ্য হয়।এটা দাও সেটা দাও সেঁজে গুজে ঢং করে রুপবতির মায়া কানন সাজাতে সে ব্যাস্ত।সমাজে যারা উর্দ্ধোমুখি তাদের চিন্তা চেতনার সাথে হেদায়েত তাল মেলাতে থাকলো।ফলশ্রুতিতে সিনেমা হল ব্যাবসা, কন্ট্রাকটরি ব্যাবসা বিত্ত শ্রেনীর ব্যাবসায়ী স্রোতে হেদায়েত ভেষে গেল কুল পেলনা।হেদায়েতের বিলাসী আত্মায় মাসুমা পাঙ্খা নাড়ে।

এক দিকে সংসার,অন্যদিকে কারবার, নুন্যতম অর্থকড়ি
ধরাকে গড়িতে নারি, দেহায়েত খেতে রাজি গড়াগড়ি
সাধ্যে কুলাতে গিরি, সেথা ছিল বাড়াবাড়ি
হেদায়েত তাই পিছলে পড়িল, খড়গ নরক ধরাধরি।

সর্বশেষ এডিট : ০৩ রা জুন, ২০১৬ রাত ৯:১৮
২টি মন্তব্য ১টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

বিশ্রী ও কুশ্রী পদাবলির ব্লগারদের টার্গেট আমি

লিখেছেন সোনাগাজী, ০৭ ই নভেম্বর, ২০২৪ সন্ধ্যা ৬:০৫



আমাকে জেনারেল করা হয়েছে ১টি কমেন্টের জন্য; আমার ষ্টেটাস অনুযায়ী, আমি কমেন্ট করতে পারার কথা; সেটাও বন্ধ করে রাখা হয়েছে; এখন বসে বসে ব্লগের গার্বেজ পড়ছি।

সম্প্রতি... ...বাকিটুকু পড়ুন

ছবি কখনো কখনো কিছু ইঙ্গিত দেয়!

লিখেছেন ডার্ক ম্যান, ০৭ ই নভেম্বর, ২০২৪ সন্ধ্যা ৬:৩৭



গতকাল ভারতীয় সেনাপ্রধানের সাথে বাংলাদেশ সেনাপ্রধান এর ভার্চুয়ালি কথা হয়েছে। ভারতীয় সেনাবাহিনী তাদের অফিসায়াল এক্স পোস্টে এই ছবি পোস্ট করে জানিয়েছে।

ভারতীয় সেনাপ্রধানের পিছনে একটা ছবি ছিল ১৯৭১ সালের... ...বাকিটুকু পড়ুন

প্রথম আলু

লিখেছেন স্নিগ্দ্ধ মুগ্দ্ধতা, ০৭ ই নভেম্বর, ২০২৪ সন্ধ্যা ৬:৫৯



লতিফপুরের মতি পাগল
সকালবেলা উঠে
পৌঁছে গেল বাঁশবাগানে
বদনা নিয়ে ছুটে



ঘাঁড় গুঁজে সে আড় চোখেতে
নিচ্ছিল কাজ সেরে
পাশের বাড়ির লালু বলদ
হঠাৎ এলো তেড়ে




লাল বদনা দেখে লালুর
মেজাজ গেল চড়ে।
আসলো ছুটে যেমন পুলিশ
জঙ্গী দমন করে!





মতির... ...বাকিটুকু পড়ুন

দেশে ইসলামি আইন প্রতিষ্ঠা করা জরুরী?

লিখেছেন রাজীব নুর, ০৭ ই নভেম্বর, ২০২৪ রাত ৯:০২



বিশ্ব ইসলামের নিয়মে চলছে না।
এমনকি আমাদের দেশও ইসলামের নিয়মে চলছে না। দেশ চলিছে সংবিধান অনুযায়ী। ধর্মের নিয়ম কানুন মেনে চললে পুরো দেশ পিছিয়ে যাবে। ধর্ম যেই সময় (সামন্ত... ...বাকিটুকু পড়ুন

একটি ছবি হাজার কথা বলে

লিখেছেন ইফতেখার ভূইয়া, ০৮ ই নভেম্বর, ২০২৪ রাত ৩:৫৩

আগস্টের ৩ তারিখ আমি বাসা থেকে বের হয়ে প্রগতি স্মরণী গিয়ে আন্দোলনে শরিক হই। সন্ধ্যের নাগাদ পরিবারকে নিয়ে আমার শ্বশুর বাড়ি রেখে এসে পরদিনই দুপুরের মধ্যেই রওনা হয়ে যাই। আগস্টের... ...বাকিটুকু পড়ুন

×