somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

তথাকথিত চেতনার বর্বরাতার শিকার একটি দিন

১৯ শে এপ্রিল, ২০১৭ সন্ধ্যা ৭:৪৭
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :


[বাইকে হকিস্টিক হাতে গাড়ি থামাচ্ছে]

পরীক্ষাটি আর সব সাধারণ পরীক্ষার মতই শেষ করে একসাথে সবাই জামায়েত হয়েছি,প্রশ্ন উত্তর মিলিয়ে নিচ্ছি। গেটের সামনে একটি ছোট্ট জটলা দেখলাম মানুষের;জানা গেল কাউকে বের হতে দেয়া হবেনা কলেজ থেকে। কেন???
জানা গেল একটি ক্ষমতাসীন দলের ছাত্র মিছিলে যেতে হবে তাই!
পাঠক সরকারী কলেজগুলোতে এসব তথাকথিত মিছিল মিটিং হরদম হয়,ছাত্রছাত্রীরাও সয়ে গেছে,মিছিলে পিছনের গলি ধরে সবাই কিন্তু আজ যে পরিস্থিতির মধ্য দিয়ে গেলাম বলার মত না।
জোড় করে আমাদের নিয়ে যাওয়া হল।কেউ পালাতে চেষ্টা করল কিন্তু তাদের সাথে খুবই বাজে রকমের আচরণ করা হল। কিছুক্ষণ র্যালি ধরে হাটা হল,ভাবলাম এই হয়ত শেষ কিন্তু এর থেকেও বড় কিছু অপেক্ষা করছিল আমাদের।
কোন এক রাষ্ট্রের ক্ষমতাধর তথাকথিত ছাত্র রাজনৈতিক দলের জেলা সম্মেলনের আনন্দ মিছিলের বলিদান কেন হব আমরা???
কিন্তু হতে হয়েছে। এই হল সিলেট সরকারী কলেজের নৈমিত্তিক ব্যাপারস্যাপার। আমাদের কলেজের পাশেই মুরারি চাঁদ কলেজ। আমাদেরকে হাটিয়ে নিয়ে আসা হল মুরারি চাঁদ কলেজের সামনে কিন্তু কলেজ গেট তারা আগেই বন্ধ করে তালা মেরে রেখেছে আর পাহারা দিচ্ছে তথাকথিত নেতারা। ওইদিকে আর যাওয়া হল না।
এবার ঘটল আরেক ঘটনা,
রাস্তা ত বিরাট,সেখান থেকে অনেকগুলো বড় বড় ট্রাক থামানো হল,আমাদের এইবার ট্রাকে উঠে মিছিল দিয়ে যেতে হবে! এটা একটু বেশিই হয়ে গেল না? না হয়নি।
আমারা কোমলমতি ছাত্রছাত্রীরা এদিক সেদিক করছি কোথায় যাব? হাজারের মত স্টুডেন্ট, এরা সবাই ভয়ার্ত,চোখে মুখে আতংক,পালাতে গেলেই ধরে আনছে। কেউ যখন উঠতে নারাজ জোর করে তুলছে,কেউ উঠতে অস্বীকার করলে মারধোর করছে,আমাদের সামনেই পেটানো হল অনেকজনকে। এবার মারের ভয়ে অনেকেই উঠতে লাগল,মেয়েরা কান্নাকাটি শুরু করল,কারো হয়ত মাসিক চলছে সে এখন দানবীয় ট্রাকে উঠবে কি করে?
সে না উঠলে হয়ত তার চুল টানবে,তুলবে পশুদের মত করে!
উঠতে হল। এরই মধ্যে আমার এক বন্ধু লুকিয়ে ছবি তুলতে লাগল,ব্লগে দিবে এই ভেবে কিন্তু কেউ একজন দেখে ফেলল ততকক্ষণেঅনেক কুকীর্তির ছবি তুলা হয়ে গেছে কিন্তু ওর ফোনটা কেড়ে নিল একজন।
তার এত দামী ফোন!
ওর অবস্থা খারাপ,আমি ওকে নিয়ে ফাঁক দিয়ে ফাস্ট ফুডের দোকানে ঢুকে পড়ি।
তারা তাদের কার্যক্রম চালিয়ে যায়। অসহায় লেগেছে নিজেকে; সাদা শার্ট,টাই,শোলডারে ব্যাজ,প্যান্ট,কালো শু গলায় আইডি কার্ড পরা ছাত্রদের সাথে এ কেমন আচরণ?
এরা কি শিক্ষিত??নিজেদের নাকি শিক্ষিত ভাবে?
বর্তমানে ত দাড়ি টুলি পাঞ্জাবি পরিহিত কাউকে দেখলে আমরা জঙ্গি ভেবে বসি?
জঙ্গির কি এই সংজ্ঞা?আর যারা আধুনিক কাপড়চোপড়, চোখে সানগ্লাস আর বুকে মুক্তিযুদ্ধ চেতনা,হাতে হকিস্টিক নিয়ে রাস্তায় ট্রাক থামিয়ে জোর করে মেরেধরে স্টুডেন্টদের নিজেদের দলে টেনে নিয়ে যেতে চায় তারা কি?
তাদের কে কি জঙ্গি বলা যায়না?


[সামনে থেকে লিড দিচ্ছে এমন কেউ]

নাকি বললে আমার ফাঁসি হয়ে যাবে?
আমারা কলেজে যেতে ভয় পাই,ক্যাম্পাসে হাটিনা,অনিরাপদ বোধ করি।
আতংকে কলেজে থাকি।
এর সমাধান কি আছে?
রাজনীতির সংজ্ঞা এভাবে দেয়া যায় ত?
হ্যা যায়।
আর এখানে সবথেকে কাপুরুষ অবস্থানে ছিল বাংলাদেশ পুলিশ।
হাজারের মত ছাত্রছাত্রী রাস্তায় অসহায়ের মত দাঁড়িয়ে এদিক ওদিক করেছ আর তারা দাঁড়িয়ে ট্রাফিক কন্ট্রোল করে ওই সন্ত্রাসদের পথ করে দিচ্ছে এগিয়ে যাবার!
আমাদের দেশ,আমাদের আইন শৃঙ্খলা বাহিনী, আমাদের কলেজ,আমাদের ইউনিফরম আমাদের নিরাপত্তা দিতে ব্যর্থ।
কখনো সফল হবেও না।
সর্বশেষ এডিট : ১৯ শে এপ্রিল, ২০১৭ সন্ধ্যা ৭:৫১
০টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। সংস্কারের জন্য টাকার অভাব হবে না, ড. ইউনূসকে ইইউ

লিখেছেন শাহ আজিজ, ০৭ ই নভেম্বর, ২০২৪ দুপুর ১:২৪



বুধবার (৬ নভেম্বর) দুপুরে ঢাকার তেজগাঁওয়ে প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন ঢাকায় নিযুক্ত ইইউর রাষ্ট্রদূত মাইকেল মিলার এবং সফররত এক্সটার্নাল অ্যাকশন সার্ভিসের এশিয়া ও প্যাসিফিক বিভাগের পরিচালক পাওলা... ...বাকিটুকু পড়ুন

তোমার বিহনে কাটে না দিন

লিখেছেন মায়াস্পর্শ, ০৭ ই নভেম্বর, ২০২৪ বিকাল ৪:০৩



অবস্থানের সাথে মন আমার ব্যাস্তানুপাতিক,
বলে যাই যত দূরে ততো কাছের অপ্রতিষ্ঠিত সমীকরণ।
তোমাকে ছেড়ে থাকা এতটাই কঠিন,
যতটা সহজ তোমার প্রতিটি চুল গুনে গুনে
মোট সংখ্যা নির্ণয় করা।
তোমাকে... ...বাকিটুকু পড়ুন

বিশ্রী ও কুশ্রী পদাবলির ব্লগারদের টার্গেট আমি

লিখেছেন সোনাগাজী, ০৭ ই নভেম্বর, ২০২৪ সন্ধ্যা ৬:০৫



আমাকে জেনারেল করা হয়েছে ১টি কমেন্টের জন্য; আমার ষ্টেটাস অনুযায়ী, আমি কমেন্ট করতে পারার কথা; সেটাও বন্ধ করে রাখা হয়েছে; এখন বসে বসে ব্লগের গার্বেজ পড়ছি।

সম্প্রতি... ...বাকিটুকু পড়ুন

ছবি কখনো কখনো কিছু ইঙ্গিত দেয়!

লিখেছেন ডার্ক ম্যান, ০৭ ই নভেম্বর, ২০২৪ সন্ধ্যা ৬:৩৭



গতকাল ভারতীয় সেনাপ্রধানের সাথে বাংলাদেশ সেনাপ্রধান এর ভার্চুয়ালি কথা হয়েছে। ভারতীয় সেনাবাহিনী তাদের অফিসায়াল এক্স পোস্টে এই ছবি পোস্ট করে জানিয়েছে।

ভারতীয় সেনাপ্রধানের পিছনে একটা ছবি ছিল ১৯৭১ সালের... ...বাকিটুকু পড়ুন

প্রথম আলু

লিখেছেন স্নিগ্দ্ধ মুগ্দ্ধতা, ০৭ ই নভেম্বর, ২০২৪ সন্ধ্যা ৬:৫৯



লতিফপুরের মতি পাগল
সকালবেলা উঠে
পৌঁছে গেল বাঁশবাগানে
বদনা নিয়ে ছুটে



ঘাঁড় গুঁজে সে আড় চোখেতে
নিচ্ছিল কাজ সেরে
পাশের বাড়ির লালু বলদ
হঠাৎ এলো তেড়ে




লাল বদনা দেখে লালুর
মেজাজ গেল চড়ে।
আসলো ছুটে যেমন পুলিশ
জঙ্গী দমন করে!





মতির... ...বাকিটুকু পড়ুন

×