কার্তিকের রাত
সবুজ ঘাসেরা বড় উস্মুখ হয়েছিল
আকাশে মিটি মিটি তারাদের গল্প বলা আলোতে
সাদা চাদরের মত সুখের কুয়াশা
আলতো করে বলে গেল
শেষ দুপুরের খোলা কীর্তণ।
একটিবার তাকে দেখার বড় ইচ্ছে ছিল,
সন্ধ্যাময়ী আলোতে
বিরুদ্ধ বাতাসে কেঁপে ওঠা জোছনায়-
একটিবার ছুঁয়ে দিয়ে চলে গেল সে,
বুকের হীম ঘরে পুষে রাখা
সীমানাহীন ভালবাসা
কি য্যানো চায় সে
তুমি কী দেবে কার্তিকের রাত ??
দরকার ছিল শুধু কার্তিকের জলে স্নান করবার ?
পৌষের রোদে গা শুকিয়ে গেলে তুমি নীল চাদরের নিচে
সেখানে কি স্বপ্ন রেখেছিলে তুমি ?
নাকি ছিল কদম ফুলের মিষ্টি আমেজ ?
নাকি শুধু মৌমাছির হুল ফোটানো ?
মধু লোভে এই সকালে কেন গেলে সজনে তলায় ?
যে পথ শুধু পাখ পাখলির আনাগোনা
যে পথ শুধু আগুন জ্বলা এই শ্রাবণের মধ্য দুপুর
যে পথ শুধুই কষ্ট চেনে...
পানকৌড়ির শামুক খোঁজা সন্ধ্যাবেলা
এমন কি দরকার ছিল-
এমন করে শেষ বিকেলের গল্প বলা
সখের বাগান ছাই করবার...?
এখন আর কাউকেই বোঝা যায় না-
কিছুই বুঝিনা কোথাও...।
বিল ঝিল নদ নদী ঝিমঝিম জল
পাহাড় পর্বত, শহর কিংবা গ্রাম
ঝোপ ঝাড়, ধুলোর রাস্তা
তুলতুলে শ্রাবণ সকাল
দুপুরের পরে লম্বা পিরাণ গায়ে অচেনা মানুষ
এলেবেলে চলে গেলে বড্ড গোমর লাগতো মনে।
এখন আর মনও পোড়েনা
হয়ত পোড়ার মতন আগুন নেই আর
এখন আর পুড়তে পারেনা শরীর---।
তোমার হাতের উপরে যেদিন হলুদ বাষ্প দিয়ে খেলাঘর বানালুম
সেদিন কি ঈশ্বর হেসেছিল খুব ?
তা না হলে কেন এমন বিষক্রিয়ায় গুমরে মরা সারাক্ষণ ?
কেনই বা রাত্রিগুলো একা একা কুয়াশায় ভেজে এমন অন্ধকারে ?
ঈশ্বরের চাওয়ার বাইরে নাকি কিচ্ছুটি হয়না।
এ বিশ্ব ব্রম্ভ্রান্ডের চাকা তো তাঁর বিনা ইচ্ছেই একচুলও নড়েনা
তাহলে, এই যে রাতের এমন একাকি ঘুরে বেড়ানো,
গাছেদের সাথে রাতের গোপন বিচ্ছেদ,
নদীর সাথে ঘাসের তৃষ্ণাময় গোধূলীলগ্ন-
সব-ই তো তার জন্যেই ঘুর-পাক খায়....।
তবুও- প্রতি রাতে কে যেন আসে, এসে ফিরে যায়...
আমার বারান্দার সবুজ পাতাগুলোও কার যেনো নি:শ্বাস খোঁজে;
আমি ওদের ভেতরের ব্যকুলতা টের পাই।
আমার হাতের উপরে যে ওদের নি:শ্বাসের ওজনদার বাতাসগুলো ঝরে পড়ে।
তুমি কি জানো, সন্ধ্যার হঠাৎ কলোরব
কি যেনো বলছিল বাতাসের সাথে,
সে-ই তুমি, আমি তার নাম জানি- ভালবাসা
অথবা- অসমাপ্ত আর্তনাদ... !!!
সর্বশেষ এডিট : ১২ ই ডিসেম্বর, ২০১৮ বিকাল ৩:২৬