somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

।।অপেক্ষার গল্প।।

১৬ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১১ সকাল ১০:৫৬
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :



রাত ১২:৩০

স্বপ্ন:
[হঠাৎই ভেসে উঠল তোমার মুখ.....চোখে পানি...মুখে হাসি....আমি অবাক হলাম....আমি বললাম "তুমি কাঁদছ না হাসছ?..........তুমি কি যেন বললে....শুনতে পারলাম না....অনেক চেষ্টা করলাম....কিন্তু কিচুই শুনতে পেলাম না....হঠাৎই হারিয়ে গেলে তুমি....]

বিছানা থেকে উঠে রুম থেকে বেরিয়ে বারান্দায় যাই....এ মাথা ও মাথা পায়চারী করি....রুমে একটা টিকটিকি টিক্ টিক্ করে ওঠে। বাইরের ল্যাম্প পোষ্টে পোকাদের বৈশাখী মেলা হচ্ছে....পাশ দিয়ে একটা তেলাপোকা চলে গেল....আমি বারান্দার একটা চেয়ারে বসে পরলাম।

ইস্, তুমি থাকলে তেলাপোকা দেখে এতক্ষনে চিৎকার করে আমাকে জড়িয়ে ধরতে....স্যারের বাসায় একদিন তেলাপোকা দিয়ে তোমাকে ভয় দিলাম.... তুমি চিৎকার করে উঠলে, আর স্যার আমাকে পিটালেন....তারপর বাইরে বেরিয়ে তুমি আমাকে হাজার বার আমাকে "সরি" বললে....

রাত ১:০০

পাগল হলাম নাকি.... একা একা কি চিন্তা করছি আমি....চেয়ারে হেলান দিয়ে......সামনের গ্রিলে পা তুলে আবার চিন্তায় হারালাম....

.....ঐ যে ফ্রেন্ডস হোটেলে....একদিন ঝগড়ায় হেরে তোমাকে খাওয়ালাম....তারপর কি মনে করে তোমাকে বলা ফেললাম....আই লাভ ইউ....তুমি উঠে গেলে কথা না বলে....সেদিন আমি প্রথম সিগারেটে টান দিই....পর পর তিন দিন ব্যাচে যাই না....তুমি ফোন করে আবার দেখা করতে বল....আবার....ঐ হোটেলে....ঐ চেয়ারে....তুমি বলে ফেললে....আই লাভ ইউ....তারপর থেকেই শুরু হল....চিঠি লেখা....ফোনে কথা বলা....ক্লাস ফাকি দেয়া....ঝগড়া....ভালবাসা....কথা রাখা....না রাখা....অপেক্ষা....কষ্ট....ভালবাসা আর ভালবাসা....

রাত ০৩:৫০

উঠে নিজে নিজে চা বানাই.....আবার বারান্দায় বসি.....বাইরে গার্ড বাশিঁ দেয়.....একটা কুকুর কয়েকবার ঘেউঘেউ করে উঠল.....

.....তুমি হঠাৎ কথা বলা বন্ধ করে দিলে.....আমি ততদিনে.....বিবাগী.....ধুমপায়ী..... ফেরারী.....অপেক্ষা করি তোমার জন্য.....কয়েকদিন পর শুনলাম তুমি অসুস্থ..... আমি গেলাম তোমার বাসায়.....বিছানায় তুমি.....আমাকে দেখে ওপাশ ফিরলে.....তুমি ততদিনে অনেক শুকিয়ে গেছ.....তোমার চোখের নীচে কালি.....শুনলাম তুমি সিঙ্গাপুর যাচ্ছ কাল.....তোমার অসুখ এর নাম আমায় বললে না.....শুধু বললে আমায় ভালবাস.....আমার কষ্ট হচ্ছিল আমি রুমটা থেকে বেরিয়ে আসতে চাচ্ছিলাম.....তুমি ডাকলে আর তোমার পাশে বসতে বললে.....মাথায় হাত দিলাম তোমার .....তুমি আমার হাতে একটা কাগজ দিলে .....হাত ধরলে.....তোমার হাত কাপছিল.....তোমার বাবা তোমাকে বিশ্রাম দিতে বললেন.....আমি উঠলাম.....পিছন ফিরে তোমায় দেখি..... চোখে জল.....ঠোঁট কাঁপছে (আই লাভ ইউ).....হাত আমার দিকে বাড়ানো..... আমি নিজেকে শক্ত করে বের হলাম..... তোমার আব্বাও বলল না তোমার অসুখের কথা।.....আমি রাস্তায়..... বাইরে বৃষ্টি হচ্ছে (বড় বড় বৃষ্টির ফোঁটা)..... বুক পকেট থেকে চিঠিটা বের করলাম.....তাতে লেখা.....
"আই লাভ ইউ।
আমার জন্য অপেক্ষা কর।
সেই হোটেলে, যেখানে প্রথম ভালবাসা।
মনে রেখ আমি আসব।
যদি না আসি, কষ্ট পেয় না।"


রাত ০৪:২০

হঠাৎ চোখে পোকা ঢুকল.....উঠে বাথরুমে যেয়ে চোখে পানি দিলাম.....চোখ জ্বলছে.....কাপটা ডাইনিং টেবিলে রেখে আবার বারান্দায়..... বারান্দার গ্রিল ধরে দাড়ালাম।

.....এরপর.....অনেকদিন কাটল.....প্রত্যেক দিন অপেক্ষা করি..... বিকেলে ফ্রেন্ডস হোটেলে.....ঐ টেবিলে.....নতুন নতুন জুটি দেখি.....শুনি অনেক পরিচিত কথা.....কোন মেয়েকে আসতে দেখলে মনে হ্য় এই বুঝি তুমি এলে.....এখনও আমার বিশ্বাস হয় তুমি আসবে তাই প্রতিদিন দু'কাপ কফির অর্ডার দিই.....সন্ধা হলে ফিরে আসি.....বুক পকেট থেকে চিঠিটা বের করি.....মনে হয় তুমি আমার অনেক কাছে আছ.....শুধু ধরতে পারছি না.....ভালবাসতে পারছি না.....

রাত ০৪:৪৫

চোখ জ্বলছে ২২ নম্বর সিগারেট নিভাতে নিভাতে বিছানায় গেলাম.....কাল আবার যেতে হবে, যদি তুমি আস। এক বুক আশা নিয়ে চোখ বুঝলাম তোমার অপেক্ষায়।
সর্বশেষ এডিট : ১৬ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১১ সকাল ১০:৫৬
১৮টি মন্তব্য ১৬টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

‌এখন সময় কৃষ্ণচূড়ার

লিখেছেন মরুভূমির জলদস্যু, ২৪ শে এপ্রিল, ২০২৫ বিকাল ৫:০৪



বৃক্ষপ্রেমিক দ্বিজেন শর্মা বলেছিলেন - বসন্তে কৃষ্ণচূড়া ফোটে না, আর ফুলের বাজারেও কৃষ্ণচূড়া বিকোয় না।
তবুও কৃষ্ণচূড়ার কদর আর রূপের ঝলক তাতে একবিন্দুও কমে না।

ফুলের নাম : কৃষ্ণচূড়া
অন্যান্য ও আঞ্চলিক... ...বাকিটুকু পড়ুন

শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান

লিখেছেন করুণাধারা, ২৪ শে এপ্রিল, ২০২৫ রাত ৮:২৪



চাইলে জিয়াউর রহমান ঢাকায় ঝাঁ চকচকে দালান কোঠা রাস্তা বানিয়ে সবার চোখ ধাঁধিয়ে উন্নয়ন করার বাহাদুরি করতে পারতেন। সেটা না করে তিনি ঘুরতে লাগলেন সারা দেশে, গ্রামে গঞ্জে গিয়ে খাল... ...বাকিটুকু পড়ুন

জবাবদিহিতার অনন্য দৃষ্টান্ত

লিখেছেন মেঠোপথ২৩, ২৪ শে এপ্রিল, ২০২৫ রাত ৮:৪৫

অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টার পদ থেকে পদত্যাগ করার পর বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের অন্যতম কেন্দ্রীয় সমন্বয়ক নাহিদ ইসলামের বিরুদ্ধে গুজব ছড়ানো হয় সোশ্যাল মিডিয়ার বিভিন্ন অ্যাকাউন্ট থেকে। সেসব পোস্টে তার বিরুদ্ধে বিপুল... ...বাকিটুকু পড়ুন

আপনি যাত্রা করবেন নাকি রাজনীতি করবেন ?

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ২৪ শে এপ্রিল, ২০২৫ রাত ১০:১১


ইদানীং দেশে রাজনৈতিক দল গজানোর হার দেখলে মনে হয়, দেশের মাটিতে এখন ধান নয়, গজায় দল। ভোট এলেই বুঝি এই দলগুলো দুলে ওঠে, আর না এলেই পড়ে থাকে ফাইলের পাতায়।... ...বাকিটুকু পড়ুন

আওয়ামী লীগের নেতারা যদি সত্যিই নির্দোষ হতেন, তাহলে তারা পালিয়ে গেলেন কেন?

লিখেছেন নতুন নকিব, ২৪ শে এপ্রিল, ২০২৫ রাত ১১:০৯

আওয়ামী লীগের নেতারা যদি সত্যিই নির্দোষ হতেন, তাহলে তারা পালিয়ে গেলেন কেন?

পলায়নপর ছবি কৃতিত্ব এআই

২০২৪ সালের ৫ আগস্ট শেখ হাসিনার সরকারের পতনের পর আওয়ামী লীগের শীর্ষ নেতারা দেশ ছেড়ে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×