~শো-অফ~
একটা নতুন জ্যাকেট কিনছি; খুবই হাই ফাই, গায়ে দিলে শইল্লে একটা ভাব আহে।
ঢাকায় শীত একেবারে'ই নাই; গ্রামে আছে অল্প স্বল্প! এই অল্প স্বল্প শীতে এই ল্যাদার জ্যাকেট মোটেও মানায় না।
মানান না মানান পরে হিসাব নতুন জ্যাকেট কিনছি পাবলিকরে সেইটা দেখাইতে হইবো এইটাই মূল কথা।
ঢাকা শহরে আস্তো শীত কাল কোন দিক দিয়া আসে কোনদিক দিয়া যায় সেইটা কিঞ্চিৎ টের ও পাওন যায় না। মানুষের উষ্ণতায় ঢাকা শহরের ধারে কাছে শীত ঘেঁসে না।
জ্যাকেট দেখানের উদ্দেশ্যে ছুটলাম গ্রামের দিকে। গ্রামে শীত পড়ে গভীর রাইতে আর ভোর সকালে। রাইতে জ্যাকেট পরলে ব্যাডা ছাড়া ব্যাডিরা দেখবো না।
বেডাগরে দেহাইয়া কি লাভ! এরা উল্টা পাল্টা খোঁচা মাইরা স্লেইজিং করবো।
- দেখ, দেখ, ঢাকা থাইকা বান্দর আইছে।
- দেশী কুত্তার বিদাশি খেঁক।
- হালায় চিকিৎসা শেষ হওনের আগে পাগলাগারদ থাইকা পলাইয়া আইছে।
এইসমস্ত আজে বাজে কথা কইয়া মুড অফ করাইয়া দিবো।
আমি বুদ্ধিমান মানুষ তাই বহুত প্ল্যানিং প্রোগ্রাম কইরা ভোর সকালে জ্যাকেট পইরা বাহির হইলাম মর্নিং ওয়াকে। মর্নিং ওয়াক তো একটা বাহানা মাত্র আসল উদ্দেশ্য জ্যাকেট দেখানের। এই জীবনে এতো সকালে ঘুম থাইকা উঠি নাই তাও আবার শীত কালে।
মর্নিং ওয়াকে ষাটঊর্ধ্ব মহিলাগরে দেইখা বড়ই মনঃক্ষুণ্ণ হইলাম। এরা একা একা আসে ক্যান মেয়েছেলে নিয়া আসতে পারে না!
বিরক্ত হইয়া ধীরে সুস্থে বাসার দিকে হাঁটা ধরলাম আস্তে আস্তে রৈদ পড়া ও শুরু হইলো আমি'ও জ্যাকেট খুইলা ফালাইলাম। কাউরে দেখাইতে পারলাম না এই আফসোসে আমি শেষ। বেলা থাকতে থাকতে জ্যাকেট পইরা স্কুল কলেজের সামনে একটা ভাব নিয়া দাঁড়াইয়া থাকমু সেইটা আর হইলো না। আইসা পড়লাম ঢাকায়।
ঢাকা আইসা জ্যাকেট পইরা একটা ছবি তুললাম, সেইটারে ঈডিট কইরা ঘন কুয়াশা আর ঠাণ্ডা আবহাওয়া বানাইলাম যাতে পাবলিক বুঝে বহুত শীত পড়ছে।
ঈডিট শেষে যখন'ই আপলোড দিতে যামু তখন'ই মাথায় আইলো বাঙ্গালী বুদ্ধিমান জাতি আমার ঈডিট ধইরা ফেলবো; ধইরা ফেললে আর ইজ্জত রাখবো না।
তাই এইবার অভিনব পদ্ধতিতে জ্যাকেট দেখাইতাছি।
ভিন্ন ইস্যু ধইরা হুদাই আজাইরা অনেকেরে মেসেজ কইরা আমার জ্যাকেট দেখাইতাছি।
যেমন ধরেন-
- আমরা গ্রামে অনেক মজা করছি, ছবি দেখবা?
- আমাদের এখানে অনেক কুয়াশা পড়ছে, ছবি দেখবা?
- আমাদের গ্রামটা অনেক সুন্দর, ছবি দেখবা?
সর্বশেষ এডিট : ২৯ শে নভেম্বর, ২০১৯ দুপুর ১২:১২