আমি একজন ব্লগীয় পাঠক।যেহেতু আমার লেখার ক্ষমতা নেই তাই তেমন একটা লিখি নে।কিন্তু ব্লগে আমার বর্ষ পূর্তিতে লিখব না তা কিছুতেই যেন মেনে নিতে পারছিলাম নে।বর্ষ পূর্তির দিন থেকে আজ অবধি আমার অনুরবর মস্তিষ্ক কিছুতেই কিছু না করে উঠতে পেরে শেষে যা তা একটা কিছু লিখব বলেই স্থির করল।সবাই দেখি ব্লগে বর্ষপূর্তি উপলক্ষে ইনিয়ে বিনিয়ে পোষ্ট দেয়,সেই সাহস থেকেই আমার এই ব্লগীয় বর্ষপূর্তি পুষ্ট।আর কিছু না হোক লেখক গণ আমার ব্লগে এসে অভিনন্দন তো জানাবে এই বা কম কি!ব্লগ সম্পর্কে আমার ধারনা এক বছর আগে ছিল শুন্যের কাছাকাছি।যা এখনো ঠিক শুন্যতেই র্য়ে গেছে।আগে মাঝে মাঝে দু একটা কবিতা কিংবা প্রাত্যহিক কাজকর্ম গুলো আমার নিজের ডায়রি তে লিখতাম।নিজেই বুঝতাম লেখা গুলো অখাদ্য হয়েছে তাই কোথাও ছাপাব বা কোথাও পাঠাবো এমন চিন্তা মাথায় আসে নি।এর মধ্যে আমার এক লেখক জুনিয়রের সাথে আমার পরিচয়।সে আমার কবিতা গুলো দেখে বলল স্যর আপনি এইগুলো ব্লগে শেয়ার করতে পারেন।আমি বললাম ব্লগ!এই টা আবার কি জিনিস? খায় না মাথাত দেয়।তখন সে আমাকে ব্লগ সম্পর্কে একটা ধারনা দিল।আমিও আমার সদ্য কেনা ল্যপিতে ইন্টারনেট সংযোগ দিয়ে সামুতে রেজিস্ট্রেশন করে ফেললাম।পরপর দুইটা লেখা ও পাঠিয়ে দিলাম।কিন্তু আশ্চর্য হয়ে লক্ষ্য করলাম লিখা দুটি পঠিত হয়েছে মাত্র পাচবার যার পাচবার ই আমার দ্বারা পঠিত।প্রথম পাতা,ক্রমানুসারে পোস্ট সব তন্ন তন্ন করে খুজেও আমার লেখা খানি না পেয়ে বড়ই বিমর্ষ হলাম।আমার মা যে আমাকে দিয়ে কিচ্ছু হবে না কেন বলেন তাঁর যথার্থতা মর্মার্থ করতে লাগলাম।এর মাঝে জেনে গেলাম আমাকে পর্যবেক্ষণে রাখা হয়েছে।এখন টেনশন এই পর্যবেক্ষণ কবে শেষ হবে?কিংবা আদৌ শেষ হবে কি?যাই হোক কোন একদিন আরেকটা লিখা লিখে পোস্ট করতেই দেখি আমার লেখা প্রথম পাতায়।সে কি আনন্দ।আমার মনে হল যেন বিশ্ব জয় করে ফেলেছি।থাক বিশ্ব জয় করার গল্প বা আর নাই বা শুনলেন।এখন আমি ব্লগে এসে কি কি পেলাম আর কি হারালাম তাঁর একটা ফিরিস্তি দেই।প্রথমেই আসি
টেঁকি পুষ্টঃভাববার কোন কারণ নেই যে আমি টেঁকি পোস্ট দিচ্ছি।কারণ টেকনোলজি সম্পর্কেও আমার জ্ঞান শুন্যের কোঠায়।যেহেতু আমি পাঠক শ্রেণীর সেহেতু যেদিন ব্লগে ঢুকি সেদিন সব ধরণের লেখায় পরতে থাকি।এমন একদিন হাসান জোবায়ের নামক এক শ্রদ্ধেয় ব্লগারের ব্লগে ঢুকে দেখি খালি টেঁকি পোস্ট আর টেঁকি পোস্ট।সবই পড়লাম যদিও তাঁর কিছুই আমার গাধা মস্তিষ্ক গ্রহণ করতে পারল না।কিন্তু তাঁর একটা লিখা আমার খুবই মনে ধরল।তাঁর লেখাটি হচ্ছে ফেসবুক কে রাঙ্গিয়ে তোলা সম্পর্কিত।আমিও আমার ল্যপি খানা নিয়ে আমার ফেসবুক রাঙ্গাতে বসে গেলাম।রাঙ্গাতে রাঙ্গাতে এক পর্যায়ে দেখি মানুষের চেহারা,লিখা কিছুই দেখা যাচ্ছে না।কি বিপদ।অনেক ঘাটাঘাটি করে দেখলাম তিনি ফেসবুক রাঙ্গানোর কথা বললেও ওখান থেকে বের হয়ে আসার কথা বলেন নি।নতুন কেনা ল্যাপটপ খানার এমন গতিক দেখে কষ্টে চোখে পানি চলে এলো।চোখে পানি নিয়েই আবার সামুতে সাময়িক পোস্ট দিলাম উপায় বাতলান।দেবদূতের মত কোথা থেকে আরেক টেঁকি অণুজীব ভাই আমাকে এসে সে যাত্রা রক্ষা করল।আমি আবার আমার মুখে হাসি ফিরে পেলাম।সামু যেমন আমাকে কাদিয়েছে ছে তেমন ই হাসি ও এনে দিয়েছে মুহূর্তেই।নেক্সট
আস্তিক্য-নাস্তিক্য মতবাদঃআমি বরাবর আলাভোলা ধরণের ছেলে।কেউ কোনোকিছু ঠিক মত ব্যখ্যা করে,যুক্তি দিয়ে বলতে পারলে আমার মনে হয় এই ঠিক আছে।এমনি একদিন ব্লগে ঘুরাঘুরি করছি।হঠাৎ করেই একখানা ক্যচাল পোস্ট সামনে চলে এলো ।ভিতরে ঢ ুকে দেখি মজা আর মজা। এ ওকে কামরাচছে ও একে। বাঙালি হিসেবে রাস্তায় চলতে চলতে হঠাৎ দেখা মারামারি থ েকে মজা লুটার অভিগ্গতা আমার আগেই আছে।লেখ ার লেখ ক সম্পর্কে আর নাই বা বললাম।কারন অতিরিক্ত নাস্তিক এবং অতিরকআস্তিক দুই প্রজাতিকেই আমি বড় ভয় পাই।সে যাক কামড়াকামড়ির এক পর্য়ে আমার মনে হল দেখি ভদ্রলোকের আর লেখা গুলো পড়ে।বিপত্তি টা ঘটল এখানেই লেখা পরতে পরতে,এই লিংক সেই লিংক ঘাঁটতে গিয়ে আমি নতুন আমাকে তৈরি করলাম।ভাবলাম আসলেই তো একটা অদৃশ্য শক্তি যার অস্তিত্ব আছে কি নেই তা বিবেচনায় না এনে শালার গরুর মত শুধু হুকুমপালন রে যাচ্ছি।না আর না।এইবার এর একটা ইতি টানা দরকার । নাস্তিকতার অকাট্য় যুক্তি বলেন কিং বা রাত্রে বউ এর সঙ্গে সঙ্গম করে শীতের ভোঁরে ঘুম থেকে উঠে গোসল করে নামায পরতে যাওয়ার কষ্ট থেকে রেহায় পেতেই বলেন আমি নাস্তিক হয়ে গেলাম।ভোঁরে বউ যখন ঘুম থেকে ডেকে বলল এই ভোঁর হয়ে গেছে গোসল করে নামায টা পড়ে নাও,আমি এক চোখ বন্ধ করে আমার প্রিয়হাসিনীর দিকে তাকিয়ে বললাম আজ থেকে নতুন আমার জন্ম হয়েছে।আমি আজ থেকে নাস্তিক হয়ে গেছি।আমার বউ কি বুঝল কে জানে,সে আপন মনে তাঁর প্রাত্যহিক কাজ কর্ম নিয়ে ব্যস্ত হয়ে পড়লো।সব ঠিকই ছিল বিপদ ঘটল যখন ঈদে বাড়িতে গেলাম তখন।শুক্রবার বাবা গোসল করে এসে বললেন কিরে এখনও শুয়ে আছিস যা গোসল করে আয়,নামাজে যেতে হবে।আমি বললাম নামাজে যাব না।তিনি আমার মুখের দিকে তাকিয়ে রইলেন।আমি বললাম শরীর টা ভালো লাগছে না।তিনি আর কথা না বারিয়ে নামাজে চলে গেলেন।এবার আসলো ঈদের দিন সবাই গোসল করে তৈরি হয়ে আছে অপেক্ষা শুধু আমার জন্যে।আমি নবাবি চালে ঘুম থেকে উঠে দাঁত ব্রাশ করতে থাকলাম।আমার এই ধীর মূর্তি দেখে আমার মা বললেন সবাই তোর জন্যে অপেক্ষা করছে তারাতারি কর বাপ।আমি বললাম সবাই কে চলে যেতে বল আমি নামাজে যাব না।আমার মা বললেন কেন?নামাজে যাবি না কেন?আমি বেশ স্পষ্ট করে বললাম আমি নাস্তিক হয়ে গেছি।এ কথা শুনে আমার বাবা বললেন কি হয়েছিস?নাস্তিক হয়েছিস?হারামজাদার বাচ্চা দাড়া তোকে নাস্তিক হওয়াচ্ছি!বলেই কোথা থেকে এক খানা চ্যলা কাঠ নিয়ে আমাকে দৌড়াতে আরম্ভ করলেন আমিও অবস্থা বেগতিক দেখে দে ছুট পুকুরের দিকে।দৌড়াতে দৌড়াতে ছোট বোন কে বললাম এই একটা গামছা আর আমার পাঞ্জাবীটা পুকুর ঘাটে নিয়ে আয়।সত্যি বলছি সেদিন নামাজে গিয়ে সবার সঙ্গে এক কাতারে দাড়িয়ে নামায পরতে,সবার সঙ্গে কোলাকুলি করতে বেশ লেগেছিল।সেদিন থেকে তওবা করেছি আল্লাহ ভগবান জানি নে কিন্তু আমার পরিবার আমার প্রতি বিমুখ হয় এমন কোন কাজ আমি আর কক্ষনো করবো না।ভাবুন ব্লগের নাস্তিক ভাইগুলো কি ধরণের প্রভাবক!
এই একবছরের ব্লগীয় জীবনে এমন ছোট খাট অনেক ঘটনা আছে।অনেকদিন হয়তো অনেক রাত পর্যন্ত জেগে একটা লেখা লিখছি।আমার স্ত্রী আমার উপর রাগ করে শুয়ে পড়েছে।আমি লেখা পোস্ট করে শুতে গিয়ে দেখি শোবার ঘরের দরজা বন্ধ কি আর করা বাইরের ঘরেই রাত্রি যাপন করেছি।সকালে উঠে দেখি বউ কোন ফাকে একখানা চাদর গায়ের উপর দিয়ে গেছে টেরই পাইনি।পাশ ফিরে দেখি বউ আমার পাশেই মেঝেতে শুয়ে আছে।সকালের নাস্তা করে যখন বলি দেখ আমার এই অখাদ্য লেখায় একজন মন্তব্য করেছে।তখন সে অনেক আগ্রহ নিয়ে আমার লেখাখানি পড়ে বলে এত সুন্দর লেখা(স্বামীর লেখা তো খারাপ হলেও ভালো বলতে হয়) আর মাত্র একটা মন্তব্য!তোমার লিখে কাজ নেই।তাঁর চেয়ে তুমি একটা খাতায় কিছু লিখ আমি মন্তব্য করে পুরো খাতা ভরায় দিবনে।আমাদের জীবনের ভালোবাসা কিছু টুকরো মান অভিমানের অংশ ও এই ব্লগ।এই ব্লগে যারা লিখেন তাদের কোনদিন দেখিনি তাও মনে হয় কত যেন পরিচিত কত যেন আপন।এই এক বছরের ব্লগীয় জীবনে অনেক কিছুই শিখেছি।এর জন্য সামু ব্লগ কে অনেক ধন্যবাদ।ইদানীং নতুন একটা রোগে ধরেছে।রোগ টা হচ্ছে কিছু লিখতে গেলেই চলিত ভাষা রেখে সাধু ভাষা চলে আসছে এর কারণ ও এই ব্লগের ব্লগার।বিশিষ্ট চটি লেখক থুক্কু স্যটায়ার লেখক শ্রদ্ধেয় দুর্যোধনের জন্যে আমার এই দুরগতি।পরিশেষে বলি জানি এই অখাদ্য লেখা খানি কেউ পরবেন না।আর যদি পরেও ফেলেন নিজ গুলে আমার ছোট মুখে বড় কথা গুলো খমাসুন্দর দৃষ্টিতে দেখবেন।সবাইকে ধন্যবাদ।শুভ ব্লগিং।