চারিদিকে এখন হুমায়ূন হুমায়ূন রব। টিভিতে হুমায়ূন, ব্রেকিং নিউজে হুমায়ূন। কবি সাহিত্যিকরা কলম হাতে হুমায়ূন বন্দনায় ঝাপিয়ে পরছেন। অভিনেতা অভিনেত্রীরা সৃতির ডালা খুলে বসছেন।সে কেমন মানুষ ছিলেন কি পছন্দ করতেন কি করতেন না ইত্যাদি ইত্যাদি।একজন কালের বোদ্ধাকে বলতে শুনলাম হুমায়ূনের সিনেমা জ্ঞান নাকি সত্যজিৎ সমতুল্য। হায়রে খোদা হুমায়ূন আহমেদ জীবিত থাকলে এই কথা শুনে হার্ট অ্যাটাক করে মারা যেতেন। অথচ বছরখানেক আগেও এই কালের বোদ্ধারাই হুমায়ূন অপন্যাস লিখে, তার লিখা বাজারি লিখা বলে আখ্যায়িত করছে। জীবিত অবস্থায় মানুষটাকে প্রাপ্য সন্মানটা আমরা দিতে পারি নাই।তার দেয়াল উপন্যাস নিয়ে কম লীলা হয় নাই। সচলায়তন নামক সুশীল ব্লগ তো তাকে ধুয়ে মুছে সাফ করে দিছে। ছাত্রলীগ যুবলীগ তাকে মুরতাদ ঘোষণা করে তার বিরুদ্ধে এলাকায় এলাকায় মামলা মিছিল করে বেরিয়েছে। এখন হুমায়ূন হয়ে গেছে কালের লেখক। শরত রবীন্দ্র সমতুল্য। যাই হোক হুমায়ূনের মৃত্যুতে টিভি চ্যানেল গুলার TRP বাড়ছে। পত্রিকার কাটতি বৃদ্ধি পাইছে।হয়ত আগামী ঈদের জন্য বুটিক হাউসগুলা হুমায়ূন পাঞ্জাবি, আজিজ মার্কেটের টিশার্ট বিক্রেতা হৃদয়ে হুমায়ূন বের করবে। আগামী বইমেলায় হুমায়ূন আহমেদের উপন্যাস বলে বিশাল বিশাল বিজ্ঞাপন আসবে। তাতে বিক্রি বাড়বে। হুমায়ূন আহমেদ স্যার এর প্রতি আমাদের আবেগ নিয়ে ব্যবসা চলবে। এটাই আমাদের এখানে নিয়ম।
পাদটীকাঃ রবীন্দ্র জন্ম বার্ষিকীতে ভারতের বিখ্যাত কার্টুনিস্ট চান্দ একটি কার্টুন এঁকেছিলেন। সেখানে বিশাল অনুষ্ঠান। দর্শকের সারিতে জ্ঞানী গুণীরা বসে আছেন। মঞ্চে মাইক হাতে খালি গায়ে নেংটিপরা এক বক্তা। তিনি গলার রগ ফুলিয়ে রবীন্দ্রনাথ বিষয়ে বক্তৃতা দিচ্ছেন- 'আমি তখন শান্তি নিকেতনের মাঠে গরু চড়াতাম। একদিন কবিগুরু ডেকে বললেন......!!'(রঙ পেন্সিল, হুমায়ূন আহমেদ)