আমিও অমলকান্তির মতো
রোদ্দুর হতে চেয়েছিলাম
স্কুল পালিয়ে রবীন্দ্রনাথ!
আমার কোন দিদির নাম দূর্গা ছিলো না
তার পরও পলাশ ডাঙ্গার মাঠ পেরিয়ে
রেল লাইনের সমান্তরলে সাম্যবাদের
পথে হেটে কলেজের দেয়ালে চিকা মেরেছিলাম।
"গোবিন্দ তোমার রক্ত মাখা শার্ট আমাদের আদর্শের পতাকা"
সস্তা ব্রিষ্টল ফেলে নকল হাভানা চুরট ধরিয়ে
এক গাঁদা ধোঁয়ায়
কাকিনা ষ্টেশনে ট্রেনে উঠে চলে যেতাম কিউবা!
কমরেড ডেকেছে
যেতে হবে বাংলা থেকে বলিভিয়া।
ক্যারিবিয়া থেকে কারমাইকেল কলেজ
প্রতিটি দেয়ালে আমি মনসঃপটে
চিকা মেরেছিলাম"ইনকিলাব জিন্দাবাদ"
সেই বিপ্লবের মতো
আমিও এখন
পুঁজিবাদের কাছে মুখ থুবরে পড়ে আছি।
অসাম্প্রদায়িক বাংলা গড়তে
যবনের ছেলে হয়েও
গাজনের মেলায় আমি শিব সেজেছিলাম!
কুলগুরু কোল কোন্দের পীরের চেয়েও কার্ল মার্কস
আমার কাছে বেশী সম্মানের ছিল।
খন্দকারের মেয়ে আমার বাইকের পিছনে উঠে
বলেছিল"এই পথ যদি না শেষ হয়........
পথ শেষে
সে ঠিকেই পৌছে গেছ অন্যের ঘরনী হয়ে।
আমি শরাবের পেয়ালায় পথ খুঁজে ছিলাম বলে
বাবা আমায় বিয়ে দিয়ে সংসারী বানাতে চেয়েছিল।
কিন্তু যে রোদ্দুর হতে চায়,
সংসার কি তারে মেঘ হয়ে বাধা দিতে পারে!
তাই একদিন ভগবাণ বুদ্ধের মতো
ঘুমন্ত স্ত্রী পুত্রকে রেখে রাতের আঁধারে বেরিয়ে
ইট কংক্রীটের এই নগরীতে
এসে দুঃখ বিলাসে মেতে উঠেছিলাম।
কোন অশশ্থ বৃক্ষ আমাকে ছায়া দান করেনি
মেস বাড়ীর
চিলাকোঠার ছাদে আশ্রয় নিয়েছিলাম।
আমার যশোদা চিঠি লিখেছিল
"ভগবাণ তুমি ফিরে এসো
তোমার ছেলের বেবী ফুুড ফুরিয়ে গেছে
বাবার ওষুধও শেষের পথে
আমার শাড়ী বাসন্তীর জালের মতো হয়েছে"।
দুঃখ বিলাসে নয় দারিদ্র্রের করাল গ্রাসে
আমার সব আদর্শ যমুুনার জলে ভেসে গেছে।
পুঁজিবাদের সৌন শিবিরে যোগ দিয়ে
আমি এখন কর্পোরেটের কেরানী সেজেছি।
আটপৌর জীবনের ঘানি টেনে টেনে
আমি এতটাই ক্লান্ত যে রোদ্দুরে ভয় পাই!
নির্ঝরের সপ্ন ভঙ্গের মতো আামার সপ্নগুলো ও
যখন ধরা দেয় না জীবন সংসারে,
উঠ পাখির মতো মাথা গুজি নষ্ট ভূমে।
আমার স্বপ্নরা এখন
পোঁয়াজ,মরিচ চাল,ডালের
মুুুল্যের মাঝে ঘোরা ফেরা করে।
আটপৌরের টানাপড়েনে বৃত্তবন্দী আমি,
আমার জীবনে আর অমলকান্তি,রবিবাবু,
মার্কস,লেলিণ,গোবিন্দ, চে গুয়েভারা আসে না।
(রিপোস্ট)
সর্বশেষ এডিট : ০২ রা জুলাই, ২০১৬ সকাল ১১:৪৩