somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

মাইনাচের প্রেম B-) এবং সেই রমিজ পাগলা।/:)

০৪ ঠা জুন, ২০১৩ রাত ১১:৩১
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

আকাশের মন ভালো নেই,
বাতাসের মন ভালো নেই।
তারাদের মন ভালো নেই
জোনাকীরও মন ভালো নেই
/:)
কারণ

মাইনাচের মন ভালো নেই।

কি কারণ মাইনাচের মন ভালো নেই? কি এমন হলোযে সদা হাসি খুশি মাইনাচের আজ মন ভারাক্রান্ত? কোন দুঃখইতো মানাচকে কাবু করতে পারেনা। তাহলে আজ কি এমন হলো যে রাস্তার পাশের সবুঝ ঘাসে শুয়ে, আছে আকাশ পানে নিরব চেয়ে?

সে অনেক কাল পূর্ব ঘটনা। তার কালোত্বের কারণেই প্রেম বিষয়ক ভাবনারা তার কাছ হতে দুরেই থাকতো সবসময়। সেদিন কি যে হয়েছিলো, কালোত্বের বাধাঁ অতিক্রম করেই সে বলেছিলো ভালবাসি। বলেছিলো একজনকে।

ভালবাসার অনবিজ্ঞ খেলোয়াড় বলেই হয়তো ভালোবাসার বহিঃপ্রকাশটাও হয়েছিলো আনাড়ী টাইপের। নতুন একটা মন পেতে হলে কি ভেবে, কি ভাবে, কি রুপে, ঠিক কি বলতে হয় তা তার অজানা বিধায় হুট করে বলেছিলো ”আতোভাতুআভা?” ছোট্ট একটা কাগজে আরো ছোট্ট শব্দটি লিখে ভিতু মনে তার সামনে ছুড়ে দিয়েছিলো। ছুড়ে দিয়েই বিজলী বেগে দৌড়।

চিরকুটটা যতনা কাজে দিয়েছিলো দৌড়াটা তার চেয়ে বেশি। দৌড় দিতে গিয়ে বেচারা মাইনাচ নিজেই দুনিয়া হতে মাইনাচ হতে হতেই বেচে গেল।

কোন্ বেকুব কলা খেয়ে খোসাখানা ফেলেছিলো সেথায়?
তার উপরেই স্লিপ খেয়ে পড়ে, কাতর সে ব্যথায়,
উফ অসহ্য যন্ত্রনা, নয়কো তার মাথায়
সবটি ব্যথা লাগলো জোরে তার কোমল নরম পাছায়।


এভাবে পিছলাইয়া ছেরাবেড়া হইয়া দরাম কইরা পড়তে দেখে,

তার হবুপ্রিয়া দৌড়ে এলো, তুল্লো তাকে ধরে
ব্যথা কি গো বেশ পেয়েছো , শুধায় কাতর স্বরে ,
সরমেতে বলতে নাহি পারে, ব্যথা যে তার পাছায়
ভুল করে তাই হবু প্রিয়া, পানি ঢালে মাথায়


ব্যথা তার পাছায়, পানি ঢালে মাথায়X(
ভাইরে ব্যথা কি আর যায়? :((

চোখ রাঙিয়ে হবু প্রিয়া বলে, কাগজ ছুড়ে দৌড়ালে কেন? কি এমন আছে যে পালাতে হবে?
মাইনাচের যেন দুমুখী গজব। একেতো প্রেমের প্রস্তাবের ভয় তারউপর আবার পাছার ব্যথা। দু মুখী ব্যথায় বেচারার আসলেই কাহিল দশা।

তাই বল্লো,

না, কিছু না
রাতে পইড়ো,
ভেবে দেইখো
”লক্ষী সোনা” বলতে গিয়েও
কিন্তু বল্ল না।
;)
এর পর খোড়াতে খোড়াতে সে সেখান হতে প্রস্তান করলো।
বিকেল বেলা পাছা উপুর করে শুয়ে ছিলো বিছনায়, পাছায় ব্যথা তাই। ভাবনা নয়কো তার পাছার ব্যথায়, ভাবনা তার চিরকুটের ভাষায়। বুঝবেতো সে। সর্ট সংকেতে কি সে বুঝাতে চেয়েছে তাকে? আর বুঝলেও সেকি আপনাবে তাকে? নাকি চোখ রাঙিয়ে দুরে ঠেলে আরো দুরে হারায়।

এ সে ভাবনাতে বিভোর ঠিক তখনি একটি মোছড়ানো কাগজ জানালার ফাঁক দিয়ে উড়ে এসে পড়লো তার নাকের ডগায়। কারো দেখা নেই। মনে হয় ছুড়ে দিয়েই পালিয়েছে সে হাওয়ায়। ভীতু মাইনাচ আরো ভীতু মনে কাগজ খুলে, পড়ে অবাক বিস্ময়ে তড়িৎ উঠে দাঁড়ায়।

লিখা সেখানে ”হা, আতোভা”।
. . . . . . .. . . . . . . . .

সে থেকে তাদের চলছে প্রেমের চাকা। B-)

না, তাদের ভালবাসায় কোন আহাউহু ছিলোনা, কোন নোংরামী ছিলোনা, তোমাকে না পেলে মরেই যাবো টাইপ হালকা কোন ডায়লগ ছিলোনা, কোন প্রকার লুতুপুতুও ছিলোনা, রাত জেগে কথাও বলা হতোনা, একে অপরকে দেখলেই কাত হয়ে যাবার কোন সম্ভবনা ছিলোনা, প্রেমের জন্য রক্ত দিয়ে পত্র লেখাও হতোনা, প্রেমের জন্য পড়ালেখা ছেড়ে দেউলিয়া হতে হতোনা, সারাক্ষন প্রেম প্রেম করে পাগলও হতে হতোনা, রাত জেগে কিংবা রাথরুমে বসে দীর্ঘ প্রেম পত্রও লিখা হতোনা। যেটা হতো সেটা শুধুই মনের মাঝে অনুভব সে তাকে ভালবাসে, তার ব্যথায় সে ব্যথিত হয়, তার হাসিতে সে সুখ পায়।

সে হাসলেই চাঁদ হাসে
সে হাসলেই তারা খসে
সে হাসলেই ফুলের পরে
মৌমাছিদের মেলা বসে।
সে হাসলে জোনাক জ্বলে
সে হাসলেই প্রজাপতি
রঙধনুতে পাখনা মেলে।
সে হাসলে বৃষ্টি পড়ে
সে হাসলে ঝর্ণাতলে
অঝর ধারায় শ্রাবন ঝরে ।
সে হাসলে পাখি ডাকে
সে হাসলে বয় বাতাস
সে হাসলে ঝলমলিয়ে
সূর্য্য হয়ে হাসে আঁকাশ
সে হাসলে সাগরবুকে
উতাল হয়ে ঢেউ খেলে
সে হাসলে সবুজঘাসে
ভোরের শিশির ঝিলিক হাসে
সে হাসলে গায় পাখিরা
সে হাসলে বাঁদর নাচে
সে হাসলেই নাচে মাইনাচ
সুখের সাগরে মাইনাচ ভাসে।

কিন্তু ---------------------

সুখে আর ভাসা হয়নি বেশি দিন তাদের। তাদের সে প্রেম চিরস্থায়ী হলোনা। একদিন হোস্টেলে তার প্রিয়ার বিয়ের খবর এলো। তার প্রিয়াকে অন্য কেউ সঙ্গী করে নিয়ে যাচ্ছে তার কিছুই করার নেই। তাকে রুখবার কোন শক্তি নেই, সামর্থ নেই, অসহায় চেয়ে থাকা ছাড়া আর কোন সম্বলই ছিলোনা সেদিন। সেদিন হোস্টেলের সিটে উপুর হয়ে শুয়ে কেদেঁছিলো, নাহ, পাছার ব্যথায় না, মনের ব্যথায়।

আজ এতদিন পর কেন তার কথা মনে করে সন্ধ্যাবেলায় নিরালায় একা বসে তার ভাবনায় বিভোর? জানা নেই। হঠাৎ হঠাৎ কেন যে এসব ভাবনায় উদয় হয় বুঝিনা বাপু। আচমকা ঘুমন্ত দুঃখগুলো কেন যে ফাল দিয়ে চেতন হইয়া উঠে বুঝতে পারিনা। একটা ইরেজার হতো যদি মন মুছার বেশ হতো। সব দুঃখ দেখে দেখে মুছে দিতাম। সুখ গুলো রেখে দিতাম যত্ন করে। একটা মনের দুঃখ মুছার রাবার বড় প্রয়োজন।

এসব ভাবনায় হঠাৎ ছেদ পড়লো চারিদিকের হৈ হৈ রবে।
তার কিছু দুরে সবাই উচ্ছস্বরে চিৎকার করছে, মাইনাচ পালাও মাইনাচ পালাও, রমিজ পাগলা আসছে। আওয়াজ শুনেই ঘাড় বাঁকা করতেই দেখে রমিজ পাগলা পাশে দাড়ানো। বত্রিশ দাঁত খেলিয়ে হেসে বলে, দেয় টাকা দেয়, এক টাকা। সেদিকে মাইনাচের বিন্দুমাত্র খেয়াল নেই। ভয়ে চমকানোর কোন বিন্দুমাত্র লক্ষন নেই। সে রমিজ পাগলার দিকে অপলক চেয়েই আছে, ঠিক তার চোখ বরাবর। চেয়ে আছেইতো চেয়ে আছে।

হঠাৎ কি জানি হলো, রমিজ পাগলা গেল থেমে। বেশ কিছুক্ষন তার দিকে চেয়ে রইলো চুপচাপ। অল্পক্ষন পরেই ”দুঃখ করিস্সা” বলেই তার নোংরা হাতের নোংরা আঙ্গুল দিয়ে চোখের পানি মুছে দিয়ে আবারও হৈ হৈ করে দৌড়ে চলে গেল ভিন্ন পথে তার মতো করেই যে ভাবে এসেছিলো সেভাবেই। সেই নোংরা হাতের ভালবাসাটা কিন্তু পবিত্রই ছিলো।



ধুর শ্লা, দুঃখ বুঝার কেউ নেই, শেষ মেষ ওই রমিজ পাগলাই বুঝলো। নাকি পাগলে পাগল চিনলো? :||



রমিজ পাগলার কথা এখানে

সর্বশেষ এডিট : ০৫ ই জুন, ২০১৩ রাত ১২:১১
৫১টি মন্তব্য ৫০টি উত্তর পূর্বের ৫০টি মন্তব্য দেখুন

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

জাতির জনক কে? একক পরিচয় বনাম বহুত্বের বাস্তবতা

লিখেছেন মুনতাসির, ০২ রা নভেম্বর, ২০২৪ সকাল ৮:২৪

বাঙালি জাতির জনক কে, এই প্রশ্নটি শুনতে সোজা হলেও এর উত্তর ভীষণ জটিল। বাংলাদেশে জাতির জনক ধারণাটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ, যেখানে একজন ব্যক্তিত্বকে জাতির প্রতিষ্ঠাতা হিসেবে মর্যাদা দেওয়া হয়। তবে পশ্চিমবঙ্গের... ...বাকিটুকু পড়ুন

আত্মপোলব্ধি......

লিখেছেন জুল ভার্ন, ০২ রা নভেম্বর, ২০২৪ সকাল ১০:৫১

আত্মপোলব্ধি......

একটা বয়স পর্যন্ত অনিশ্চয়তার পর মানুষ তার জীবন সম্পর্কে মোটামুটি নিশ্চিত হয়ে যায়। এই বয়সটা হল পঁয়ত্রিশ এর আশেপাশে। মানব জন্মের সবকিছু যে অর্থহীন এবং সস্তা সেটা বোঝার বয়স... ...বাকিটুকু পড়ুন

জীবন থেকে নেয়া ইলিশ মাছের কিছু স্মৃতি !

লিখেছেন হাসানুর, ০২ রা নভেম্বর, ২০২৪ বিকাল ৫:৩২



হঠাৎ ইলিশ মাছ খেতে ইচ্ছে হল । সাথে সাথে জিভে ..জল... চলে এল । তার জন্য একটু সময়ের প্রয়োজন, এই ফাঁকে আমার জীবন থেকে নেয়া ইলিশ মাছের কিছু স্মৃতি... ...বাকিটুকু পড়ুন

ট্রাম্প ক্ষমতায় আসছে এটা ১০০% নিশ্চিত। আমেরিকায় ইতিহাসে মহিলা প্রেসিডেন্ট হয়নি আর হবেও না।

লিখেছেন তানভির জুমার, ০২ রা নভেম্বর, ২০২৪ রাত ৯:৩৩

আর এস এস সহ উগ্র হিন্দুদের লিখে দেওয়া কথা টুইট করেছে ট্রাম্প। হিন্দুদের ভোট-আর ইন্ডিয়ান লবিংএর জন্য ট্রাম্পের এই টুইট। যার সাথে সত্যতার কোন মিল নেই। ট্রাম্প আগেরবার ক্ষমতায়... ...বাকিটুকু পড়ুন

ট্রাম্প জিতলে কঠোর মূল্য দিতে হবে ইউসুফ সরকারকে?

লিখেছেন রাজীব, ০২ রা নভেম্বর, ২০২৪ রাত ১০:৪২

ডোনাল্ড ট্রাম্পের এক মন্তব্যে বাংলাদেশের মিডিয়ায় ঝড় উঠেছে। ৫ তারিখের নির্বাচনে ট্রাম্প জিতলে আরেকবার বাংলাদেশের মিষ্টির দোকান খালি হবে।

আমি এর পক্ষে বিপক্ষে কিছু না বললেও ডায়বেটিসের রুগী হিসেবে আমি সবসময়... ...বাকিটুকু পড়ুন

×