ইনসমনিয়াক
ইনসমনিয়াক তুমি। রোজ রাতে ঘুম আসে না তোমার। অন্যদিকে আমি রাত এগারোটা বাজতেই মরার মতো ঘুম দেই। এ নিয়ে তোমার অভিযোগের শেষ নেই। তোমার আবদার আমি যদি আরেকটু রাত পর্যন্ত জাগি তো তুমি আমার সাথে মোবাইলে বেশ খানিকটা সময় কাটাতে পার। তোমাকে সারপ্রাইজ দেব বলে গত রাতে না ঘুমানোর সিদ্ধান্ত নিলাম। রাতের বেলা চা খেলে নাকি ঘুম লাগে না। চা খেলাম তাই দু কাপ। তারপর এগারোটা বাজতেই কল দিলাম। তুমি রিসিভ করলে না। আবার কল দিলাম। তুমি রিসিভ করলে না। টেনশনে কোথায় যে ঘুম পালালো। সারা রাত জেগে জেগে কল দিলাম। তোমার কোন সাড়া পেলাম না। পরদিন তুমি জানালে, কিভাবে কিভাবে জানি তোমার ঘুম লেগে গিয়েছিল।মোবাইলটাও সাইলেন্ট মুডে ছিল!
নিয়তি
ফারাহানার বড় বোন ফারাজানাকে রুবেল খুব পছন্দ করে। তাকে বিয়ে করার জন্য তাই সে পারিবারিকভাবে প্রস্তাব পাঠাল। ঘটনাটা প্রায় দু বছর আগের। ঘটনাক্রমে ফারজানার বিয়ে হয়েছিল আমেরিকা প্রবাসী এক ছেলের সাথে। রুবেল বিয়ে করেছে ফারহানাকে।
শেষ খুন!
আনিস পেশাদার মার্ডারার। অনেক মানুষকে খুন করেছে সে। কোন এক শুভক্ষনে তার বুধোদয় হল। সে ভাবল, না অনেক হয়েছে আর না। আগামী কাল মতলিব মাস্টারকে হাপিশ করার পর আর কখনো সে এ কাজ করবে না। এটাই শেষ। সে আসলেই আর কোন খুন করতে পারেনি। কারন মতলিব মাস্টারকে খুনের দায়ে তার যাবজ্জীবন কারাদন্ড হয়ে যায়।
ফেসবুক স্ট্যাটাস!
ফেসবুকে তারিনের একটি পোস্ট তার বন্ধুমহলে সবার নজর কাড়ে। হাজারের উপর লাইক তার সে পোস্টে। পোস্টটিতে সে লিখেছিল, ইশ! যদি মরে যেতে পারতাম! পরদিন সত্যিই রোড এক্সিডেন্টে তার মৃত্যু হয়। সে কি সত্যিই মরে যেতে চেয়েছিল? যারা লাইক দিয়েছিল, তারাও কি চেয়েছিল সে মরে যাক?
একজন আগাগোড়া লেখকের গল্প
এক লেখক কোন বিষয়ে লিখতে গেলে আগে নিজে সেই বিষয়ের অভিজ্ঞতা নেন, তারপর লিখেন।
তার প্রথম উপন্যাস ছিল একজন মাদকাসক্তের জীবন নিয়ে। তিনি আগে মাদক সেবন শুরু করে তবেই লিখেছিলেন সেই বিখ্যাত উপন্যাসটা।
তারপর তিনি লিখলেন একটা নিটোল প্রেমকাহিনী। ওটা লেখার আগে তিনি একটা প্রেম করলেন। তারপর যখন চাইলেন একটা বিরহের উপন্যাস লিখতে তখন তার প্রেমিকাকে ছাড়লেন।
অত:পর তিনি লিখলেন বিবাহিত জীবনের আনন্দ বেদনার কাহিনী। বলাবাহুল্য, সেটা লেখার আগে তিনি বিয়ে করলেন। তারপর লিখলেন বাবা- ছেলের সম্পর্কের কাহিনী। ততোদিনে তার ছেলে বেশ বড় হয়ে গেছে। তারপর তিনি ছিনতাই করার ব্যর্থ চেষ্টা করে গেলেন জেলে। সেখানে বসে লিখলেন একজন কয়েদীর কাহিনী। জেলখানা থেকে বের হয়ে লিখলেন ‘মুক্তির আনন্দ’ নামে একটা গল্প। তারপর তিনি চাইলেন মৃত্যুকালীন অভিজ্ঞতা নিয়ে একটা গল্প লিখবেন। সে অভিজ্ঞতা নেয়ার জন্য তিনি বেশ কিছু ঘুমের ট্যাবলেট খেয়ে নিলেন। তারপর ছেলেকে ডেকে ঘটনাটা বলে হাসপাতালে নিয়ে যেতে বললেন।
কিন্তু দুর্ভাগ্য, সেই গল্পটি আর কখনো লেখা হলো না তার। কারন ডাক্তার অনেক চেষ্টায়ও তাকে বাঁচাতে পারল না।
ব্যক্তিগত গল্প!
ছেলের বয়স ২ বছর। তার যন্ত্রনায় লেখালেখির কাজটা শান্তি মতো করতে পারি না কখনো। কত কত গল্প ঘুওর বেড়ায় মাথার ভেতর, লিখতে পারি না। বিরক্ত হয়ে একসময় তাকে তার মাসহ একমাসের জন্য নানা বাড়ি পাঠালাম।
এখন আর গল্প আসে না মাথায়!