জাপানে এলজিবিটি এর রেশিও হচ্ছে প্রতি দশ জনে একজন কেউনা কেউ এলজিবিটি। অনেক বছর ধরেই জাপানের জনসংখ্যা ক্রমাগত ব্যাপক হারে হ্রাস পাচ্ছে। বিয়ে করে ব্যক্তি স্বাধীনতা হারানোর ভয়ে অনেকে বিয়েই করেনা। আবার যারা বিয়ে করে তাদের মধ্যে বেশিরভাগ দম্পতি সন্তানের ভরন পোষনের খরচ কিংবা ঝামেলার কথা চিন্তা করে সন্তান নেয়না।
এর ফলাফল কেমন? উত্তরটা ভয়াবহ।
সপ্রতি প্রকাশিত একটি তথ্যে দেখা গেছে যে, জাপানে শিশুর জন্মহার টানা ৪২ বছর ধরে হ্রাস পেয়েই যাচ্ছে। এবং সেটি গত বছরের তুলনায় এই বছর বেশি হারে কমেছে।
এবার চিন্তা করে দেখুন, এমনিতেই জনসংখ্যা কমতির দিকে, শিশু জন্মহারও কম। তার মধ্যে আবার কেও যদি ছেলে ছেলে কিংবা মেয়ে মেয়ে খেলে সেখানে ভবিষ্যতে কী হতে পারে! অথচ এখানকার বয়োবৃদ্ধদের সাথে কথা বলে যতটুকু জেনেছি বুঝেছি যে, ওনাদের সময় কম বয়সেই বিয়ে হয়ে যেত। বিয়ের বছর পেরুতে না পেরুতেই সন্তান হয়ে যেত অধিকাংশ মানুষের। তখন তো দেশ এত উন্নতও ছিলনা। তবুও সন্তান জম্মদানে কেও ভয় পেতনা।
এবার আসা যাক বর্তমান বাংলাদেশের ট্রেন্ড টপিক নিয়ে। শরিফ থেকে শরিফা হয়ে উঠার গল্প। দেখলাম ক্লাস ৭ এর বাচ্চাদের বইয়ে ছাপা হয়েছে এই গল্প। আমার পুরো গল্প পড়া হয়নি। তবে সারাংশ শুনেছি ফেসবুকে। সত্যি বলতে এমন কোন টপিক ক্লাস সেভেনের বইয়ে দেয়ার যৌক্তিকতা আমার মাথায় ঢুকেনি। অনেকে ইসলামের দোহাই দিয়ে কথা বলছে। তাতো বটেই, তবে বিষয়টি কি শুধু ইসলামের গন্ডিতেই সীমাবদ্ধ? বরং গোটা মানবজাতির জন্যেই কি হুমকিস্বরুপ নয়!
মানুষের মস্তিষ্ক এক অদ্ভুত জিনিস। তাকে ভাল মন্দ যাই দেয়া হোকনা কেন সে সব কিছু নিয়েই চিন্তা করতে ভালবাসে। কখনো কখনো আবার মানুষ নিজের অজান্তে অবচেতন মনে অনেক নিষিদ্ধ কিছু করে বসে। কিংবা করার অভিপ্রায় জাগে মনে। আমার মতে এলজিবিটি হচ্ছে ঠিক তেমন একটি জায়গা। ধরা যাক যে, হয়ত ঠিকই কিছু মানুষের মাঝে মধ্যে নারী হয়েও পুরুষ অথবা পুরুষ হয়েও নারী হতে ইচ্ছা করে। তারমানে কি সত্যি সত্যিই সেটা হয়ে যেতে হবে!?
আমারও তো মাঝে মাঝে পাখি হয়ে আকাশে উড়তে ইচ্ছা করে। তাহলে কি এখন আমার ব্যাকবোন সার্জারি করে সেখানে ডানা প্রতিস্থাপন করা উচিত!?
এটাও অস্বীকার করার উপায় নেই যে, কারও কারও হরমোনের তারতম্যের কারনে শারিরীক কিছু পরিবর্তন আসে। কিন্তু তার জন্যে রয়েছে চিকিৎসা এবং কাউন্সিলিং। আমরা ছোট বেলায় বড্ড মূর্খ আর সেকেলে ছিলাম। এলজিবিটি শব্দটির সাথে আমার জানাশুনা বোধ করি কলেজে উঠার পরই হয়েছিল। কিন্তু তাতে আমার মহাভারত অশুদ্ধ হয়ে যায়নি। বরং আমার কোমল মন একটি অপ্রোজনীয় সংক্রামক তথ্য জানা থেকে বিরত থেকেছিল। ফলশ্রুতিতে আমার ভেতরের পুরুষ সত্ত্বা বিকশিত হয়েছিল তার আপন গতিতে। আমার মত অন্যদেরও একই অবস্থা ছিল।
সত্যি বলতে সব কিছুরই জানার একটি বয়স থাকে। আবার কিছু জিনিস বই পুস্তকে প্রকাশ করাটাও বাহুল্য। কারন প্রকৃতির চেয়ে বড় শিক্ষক আর কে হতে পারে! প্রকৃতিই আমাদেরকে সময়ের সাথে সাথে প্রয়োজনীয় সব শিক্ষা দিয়ে দেয়। সেখানে মানবসৃষ্ট কোন খোঁচা কিংবা নারাচারার কোন দরকার পরেনা। যে ছেলেটা শরিফ থেকে শরিফা হতে চায়, অথবা তার উল্টোটা, তাকেও যদি এসব সংক্রামক গল্প থেকে দূরে রাখা যায় তবে সে নিশ্চই যেই শরিফ সেই শরিফ বা শরিফাই থেকে যাবে। বাকিটা ভাবনার বিষয়। নয়তুবা হয়ত ১০০, ২০০ কিংবা ৩০০ বছর পরে এসবের কুফল ভোগ করবে পৃথিবীবাসী।
সর্বশেষ এডিট : ২৪ শে জানুয়ারি, ২০২৪ সকাল ১০:০৬