অনেকদিন হয় মনের জন্য একদন্ড সময় বের করতে পারছিনা। সোজা সরল মন আমার তাই রেগে-মেগে চারকোনা ঘুড়ি হয়ে আছে। আমি বললাম, কিরে এত্ত অভিমান করেছিস! সেতো কথাই বলল না। উল্টো তার লেজ দেখিয়ে দিল। বললাম, চল তোকে আজ আকাশে উড়িয়ে দেই। একথা শুনে আমার মনের সে কি খুশি। চারপাশের যন্ত্রমানবের নগরীর ভীরবাট্টায় খুব কষ্ট করে এক চিলতে নীল জোগার করে মনের ঘুড়িটাকে দিলাম উড়িয়ে। সোঁসোঁ করে উড়তে উড়তে একসময় প্রায় দৃষ্টির আড়াল হয়হয় অবস্থা। বললাম, বুঝেছি যে অনেকদিন পর একটু ফুরসৎ পেয়েছিস উড়ার। তাইবলে আমায় ছেড়ে এতদূর চলে যাবি? আমার জন্যে তোর কোন টান হয়না? মনঘুড়ি তার টান দেখানো শুরু করল। আমার নাটাইয়ে শুরু হল কালবৈশাখী। ঘুরতে ঘুরতে নাটাইয়ের সুতোর শেষ পাকটাও আর অবশিষ্ট রইল না। আমি হাসলাম। মনকে বললাম, এত টান দেখাচ্ছিস এখন? কিন্তু এই টান তো কাছে আসার নয়। আমায় ছেড়ে উড়ে যেতে চাস? ঠিক আছে। তোর ইচ্ছাই পূরন হোক। আমি দিলাম সুতো কেটে। খানিক বাদেই মনঘুড়ি আমার কাছে আসতে লাগল। কিন্তু কেমন যেন ছন্নছাড়া ভাব তার মাঝে। মাথার সাথে লেজ লেগে আছে। দিকশূন্য ভাবে এদিক ওদিক উড়ছে। তারপর মুহূর্তেই কোথায় যেন হারিয়ে গেল। খুব মনখারাপ হল আমার। মনে মনে বললাম, দেখলি তো আমাকে ছাড়া তুইও কতটা অচল? এখন নিশ্চই কোন মরুভূমির বুকে আছরে পরেছিস। সেখানে কে তোর সঙ্গি হবে? দিনরাত কার বকবকানি শুনবি? তুই কি মুক্তির মিছিলে ছিলি? কিন্তু চাইলেই কি মুক্তি মেলে? এত সহজেই? আর সব মুক্তিই কি আসল মুক্তি? বন্ধনে থাকা মানেই কি আবদ্ধতা? মন তা বুঝেনা। সে কেবল হারিয়েই যায়।
সর্বশেষ এডিট : ০৪ ঠা জানুয়ারি, ২০১৯ দুপুর ২:১৭