ডাক্তারদের দোষ দিয়ে লাভ নাই, সব নষ্টের মূল হাসপাতালগুলো.......
দেশে মন্দ - ভণ্ড ডাক্তার যদি থাকে ৮০% তাহলে দেশের বেসরকারি হাসপাতাল, ডায়গনিস্টিক সেন্টার ১০০% ভণ্ড মুনাফা লোভী।
আমাদের দেশে সবচাইতে বড় রক্তচোষা ব্যাবসা প্রাইভেট হাসপাতাল। খেয়াল করে দেখুন, ঢাকা শহরের সকল প্রাইভেট হাসপাতাল ডায়াগনস্টিক সেন্টার গুলো দিনে দিনে কিভাবে ফুলেফেঁপে বিশাল মহিরুহ বটবৃক্ষ হয়েছেঃ
আমার চোখে দেখাঃ-
(১) ল্যাব এইডঃ গ্রীন রোডে ছোট্ট একটা বিল্ডিংয়ে শুরু করেছিল। এখন গ্রীন রোড - ধানমন্ডি তিন নম্বর রোড এপার-ওপার ওভার ব্রিজ বানিয়ে রোডের দুই পাসের দুই বিশাল ভবন যুক্ত করেই ক্ষান্ত হয়নি, গ্রীন রোডে আরও কয়েকটা স্থানে অনেক গুলো প্লটে বিশাল বিশাল ভবন নির্মাণ করে হাসপাতাল বাড়িয়েছে। এই এলাকা পেরিয়ে মিরপুরে গড়েছে আরও এক ল্যা এইড সাম্রাজ্য! গোটা দেশজুড়ে আছে এদের ডায়গনাস্টিক সেন্টার ব্রাঞ্চ।
(২) স্কয়ার হাসপাতালঃ ল্যাব এইডের মতোই শুরু করেছিলো একটা বড়ো বিল্ডিংয়ে(এটা প্রথমে থাইল্যান্ডের সাথে জয়েন ভেঞ্চার একটা ফাইভ স্টার হোটেল নির্মাণ করছিলো...পরে রোগীদের সেবার নামে রোগী জবাই করার ধান্ধায় হাসপাতাল বানায়)। এখন পান্থপথের দুই দিকেই বিশাল বিশাল ভবন নির্মাণ করে ওভার ব্রিজ বানিয়ে দুই ভবন যুক্ত করেছে! এই যে বিশাল বিশাল নির্মাণ যজ্ঞ এর পিছনে শতসহস্র কোটি টাকা নিশ্চয়ই স্কয়ার গ্রুপ হলুদ মরিচের গুঁড়ো বিক্রি করে কামায় নাই। সব টাকাই শারিরীক অসুস্থ মানুষের গু- মূত কফ পরিক্ষার নামে জবাই করে নিয়েছে। অথচ জাতীয় দূর্যোগের দিনে এরাও করোনা আক্রান্তদের চিকিৎসা দিচ্ছেনা।
(৩) পপুলার ডায়াগনস্টিক সেন্টারঃ ছোট্ট একটা বিল্ডিংয়ে শুরু করে এখন ধানমণ্ডি দুই নম্বর রোড অর্ধেকটা দখল করে আছে অথচ ওরা কোনো করোনা রোগীর চিকিৎসা সেবা দেয়না! এদের মুল ব্যাবসা ডায়গনাস্টিক টেস্টের নামে ডাকাতি করা। এই ডাকাতির ফাঁদ ফেলেছে গোটা দেশজুড়ে।
(৩) আনোয়ার খান মর্ডান হাসপাতালঃ মেডিক্যাল সেক্টরে ডাকাতির লিডার! মালিক নিজে এমপি এবং বাংলাদেশ প্রাইভেট মেডিক্যাল কলেজ এসোসিয়েশনের প্রেসিডেন্ট। ধানমণ্ডি ৫-৬ নম্বর রোড এবং মিরপুর রোডের বৃহৎ অংশ দখল করে নিজেদের শানসওকত বৃদ্ধি করে "সাদ্দাদের প্রাসাদ" বানিয়েছে সেই একই তরিকায়- শারিরীক অসুস্থ মানুষের গু- মূত কফ পরিক্ষার নামে মানুষ জবাই করে।
(৪) ডেল্টা ডায়গনাস্টিক সেন্টার এন্ড হসপিটালঃ একদা ধানমণ্ডি ৩ নম্বর রোডে তিনতলা একটা বিল্ডিংয়ে বহুবছর রোগী মেরে হাত পাকিয়ে চলে যায় মিরপুর দারুসসালাম রোড। ওখানেও শুরু করেছিলো ছোট পরিসরে। এখনতো বিশাল সাম্রাজ্য ডেল্টা হাসপাতালের।
একই চিত্র গ্রীন লাইফ, ধানমন্ডি হসপিটাল, কমফোর্ট ডায়গনাস্টিক সেন্টার, বি আর বি হসপিটাল, শমরিতা হাসপাতাল, জাপান বাংলাদেশ ফ্রেন্ডশিপ হাসপাতাল, ইউনাইটেড, এপোলো, আসগর আলী, ইউনিভার্সাল হসপিটাল, মেট্রোপলিটন, ইম্পেরিয়াল সহ সব হসপিটাল এবং ডায়গনাস্টিক সেন্টার। এইসব ডাকাতিয়া হাসপাতালের নাম আলাদা আলাদা করে লিখতে গেলে 'আরব্য উপন্যাসের সহস্র এক রজনী' অতক্রম করে যাবে তবু্ও কাহিনী শেষ হবেনা।
আসলে চিকিৎসা নিয়ে বাণিজ্য করছে সব বেসরকারি হাসপাতাল, ডায়াগনিস্টক সেন্টার এবং ওষুধ ব্যবসায়ীরা। রোগীদের জিম্মি করে রমরমা বাণিজ্য করছে তারা। ওয়ার্ডের বেড ফাঁকা থাকলেও বলা হচ্ছে আইসিইউ ছাড়া সিট খালি নেই। প্রয়োজন না থাকলেও অযথা আইসিইউতে রেখে ব্যবসা চলছে।
৫০০ টাকার পরীক্ষা ফি বেসরকারি হাসপাতাল ৩ হাজার থেকে ৫ হাজার টাকা পর্যন্ত নিচ্ছে। আবার পরীক্ষা না করেও রিপোর্ট দেওয়ার মতো ঘটনাও ঘটছে।
প্রয়োজন না থাকলেও সরকারি হাসপাতালে সিট নেই উল্লেখ করে বেসরকারি হাসপাতালের আইসিইউতে পাঠিয়ে দিচ্ছেন এক শ্রেণির চিকিৎসক। এখন আইসিইউ আতঙ্কে ভুগছে রোগীরা। বেসরকারি হাসপাতালের বেড, কেবিন ভাড়া ও চিকিৎসক ফি’র ব্যাপারে কোনো নীতিমালা নেই। ফলে ইচ্ছামতো ভাড়া আদায় করা হয়। হাসপাতাল ছাড়ার সময় তাদের মোটা অঙ্কের বিল ধরিয়ে দেওয়া হচ্ছে। জীবন বাঁচাতে বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি হওয়া রোগীদের যে বিল ধরিয়ে দেয় তা দিতে বাধ্য হয়। সেই রোগী হত্যাকারীরাই হাসপাতালের মালিক। রোগী মারা টাকায় গড়ে উঠেছে সকল প্রাইভেট হাসপাতালের আলিসান ভবনগুলো।
সর্বশেষ এডিট : ১৭ ই অক্টোবর, ২০২৪ বিকাল ৫:২২