১
বিদ্যুৎবালাগো, তোর কাছে আমার আজন্ম ঋন।
বুকের ভেতর মুখ গুজে যে ভালোবাসার সংজ্ঞা দিয়েছিলিস,
কামান্ধ এই জীবন ধবল ঘুঘুর পালকের মত কোমল হয়ে গেছে।
সেই ভালোবাসায়!!!
শরীরের বাইরেও বিদ্যুতবালা তুই,
আত্নার সুখ একছিলিস।
তোর শরীরের ভাজে আমার শরীরের ভাজ রেখে-
যে গোছানো সংসার সাজিয়েছিলিস
সেখানে কত শত সহস্র বোধ,
বৈরাগ্য সন্ন্যাস সহিংসতা ছেড়ে পরিবার বনে গেছে।
বিদ্যুতবালাগো, সেই আজন্ম ঋন পাপ হয়ে সাজানো কৌটায় কৌটায়।
হাজার বছর পথ হেটে অথবা-
পুই পাতা ভরে কবিতা লিখে,
কোন জনমে কি আর সে প্রায়াশ্চিত্ত হবে!!!
২
আমিতো ফুল-
নষ্ট হয়েই আছি, যারা ভালোবাসার ইতিহাসবেত্তা তারা সবাই জানে।
যেই পথে ফুল ফুটেছিলি, যে জলে ভেসেছিলি।
সেই জলপথ জানে, চোখের কোনে।
আমি তো ফুল সেই কবেই-
মৃত তারার মত নিভে গেছি, ঝরে গেছি, তোর ইচ্ছে পুরনের মাটিতে।
চোখে বুকে মাথায় পরিব্রাজক অনুভুতিবৃন্দরা সব জানে।
ঘাস ঘুঘুদের ঝরা পালকে লেখা আছে সব, মৃত্যুর কলরব।
আমিতো ফুল বেচেই নেই, মৃতও নই।
কত আজন্ম অনন্ত মুহুর্ত ধরে আমি "মারা যাচ্ছি" মুহুর্ত যাপন করছি-
সে ফুল তুই জানবিনা কোন দিন, আর জানবে সবাই।
একটা ঘোলা ফুল, পথে ছিলিস বলে,
গায়ে আজও পথিকের বুনো ধুলো গন্ধ নিয়ে-
তাকিয়ে থাকি তোর শহুরে ব্যালকনিতে, উচ্চমধ্যবিত্ত কৃত্তিম বাগানে।
৩
আমায় একটা কাগজের নৌকা বানিয়ে দিলে
আমি ধুলোবালির ছেলে থেকে নাবিক হয়ে গেলাম
কাগজের নৌকার ভারে আমার সুমুদ্রটাই ডুবে গেল।
আমায় একটুখানি ঠাই দিলে-
আমি বিছানা বালিশ গুটিয়ে বন্দরবাসি হলাম।
আমারে তারাটির সাথে ঘুম পাড়িয়ে দিলে তুমি।
স্বপ্নে এসে জাগিয়ে দিলে এবার
জেগে জুগে তোমার আচলে মুখ ধুয়ে সুবোধ হলাম
তুমি আমারে সংসার দিলে গরম ভাতে ধোয়া ওড়া।
আমায় ঘি এর বয়ামে জমানো ভবিষ্যতের গন্ধ শুকালে,
আমি স্বপ্নের ঝুড়ি নিয়ে, শহরের কোন এক পাশে বনিক হলাম।
আমার ঘাম ঝরানোর দুপুরে, কপালে হাত বুলানোর পূঁজি হলে।
তোমার আমার রক্তে মাংসে তৈরি একটা ভ্রুণ দিলে।
আমি কপালে চুমু দেয়া প্রেমিক থেকে পুরুষ হয়ে গেলাম
আমি আমার ভেতরে অজস্র সহস্রবার চিৎকার করলাম, ভালোবাসি।
তুমি হাত মুখ বুক ভর্তি সুখ দিয়ে গেলে,
এবং চলে গেলে, বলে গেলে "ভালো থেকো"
আমি পরজিবী পাতার মতন খুব নিরীহ কবি হয়ে গেলাম।
জীবন যাপন বোধন ত্বরণ ছেড়ে ছুড়ে, ভালো থাকতে লাগলাম
যদি কোনদিন জিজ্ঞেস কর-
যেন বলতে পারি, খুব ভালো আছি।
৪
যেই বিকেল গুলো ফুরুত করে সন্ধে হয়ে যেত,
সেই বিকেল গুলোই রেখে গেল অন্ধকারের ক্ষত।
সে উবে গেছে, ডুবে গেছে, নিভে গেছে
সেই অন্ধকারের মাঝে
তার না থাকাটা থেকে গেছে, গেথে আছে।
বোধের ঘোরে, গভীর তলদেশে।
যেই ঘোলা চোখ, ফুরফুরানো আচল ঢাকা মুখ
কোমল জ্বরে রোজ বাধাতো সুখের মতন অসুখ।
সেই আচল টুকু ছিড়ে গেছে, হারিয়ে গেছে, মিলিয়ে গেছে
আকাশের ঐ পাশে।
কায়া গেছে, ছায়া গেছে ধূসর মেঘে মুখ ঢেকেছে
মায়ার কুসুম রেখে গেছে, ভাট ফুলেদের কাছে।
ছবি দুইটা থিডি ইলাশট্রেশন আমার করা
সর্বশেষ এডিট : ২৭ শে এপ্রিল, ২০১৬ বিকাল ৫:০৫