প্রেম জিনিসটা অনেক আবেগের,ভালবাসার।কিন্তু ক্যাডেটদের প্রেমগুলো হচ্ছে এডভেঞ্চারপূর্ণ,রহস্যময় আর রয়েছে বিশাল সাহসিকতা।
আজকে এইরকম এক প্রেমিক পুরুষের কাহিনী বলছি।
ক্লাস নাইনের সামার ভ্যাকেশানই রক্তিমের আকাশজুড়ে একটি পাখির আনাগোনা। মেয়েটির নাম প্রভা।প্রেমের শুরু এখানেই।কিন্তু ভ্যাকেশান শেষ মানে তখন সব শেষ। ক্যাডেট কলেজের এই ক্লাস নাইনের সময়টা তার জানালার পাশে তাকিয়েই কেটে গিয়েছে।
ক্লাস টেন।মোবাইল আনার পারমিশন নেই।তো কি!!! প্রেম মানে না বাধা।মোবাইল এবার নিতেই হবে।কিন্তু মেয়েটি একটু ভয় পায়।ওর বোধ হয় আরকেটি বছর লাগবে। তাতে কি।কল ডেট তো আছেই। কল ডেট আসার দিন রক্তিমকে দেখতাম প্রেপ শেএষে সবার আগে হাউসে দৌড়। ভাইয়ারা ধরত।তো!!!!
প্রেমের কাছে পানিশমেন্ট কিছুই না।শুধু রক্তিম না।আরো অনেকেই আগে আগে দৌড়াত। ভাইয়ারা আরো ভাল দৌড়ায়।তারা আরো আগে যেত। বোঝাই যাচ্ছে,কাহিনী আছে।
একদিনের ঘটনা।
এস এস সি পরীক্ষা চলছে। পরীক্ষা শেষে আবার ফোন দেওয়া হয়।ছেলেটি বাবা মাকে ফোন দেওয়ার পরেই চলে গেল দূরদেশে।ওই দেশ আবার রুমের খাটের নিচে। প্রেম চলছে। হঠাৎ ডিউটি মাস্টার আসছে। ছেলেটির কাছে যাবার আগেই ডিউটি মাস্টার রুমের ভেতর। কিছু একটার শব্দ পাচ্ছেন তিনি। কথা না হলেও ইচিকিচিমিচিমিচি এইরকম। আসলে খাটের নিচে এইভাবেই চলে।তো ঘটনা যা দাড়ালো স্যার হাউস বেয়ারাকে নিয়ে এসে ইদুর সরাতে বলল। কি আজে বাজে শব্দ।হঠাৎ ইদুরের বদলে জ্যান্ত মানুষ বের হয়ে আসল। বের হয়েই বলে কিনা,
স্যার খাটের নিচে কিছু একটা ছিল। স্যারও বলে হুম। কিন্তু শব্দ চলছে।এইবার অন্যপাশে।রুমের আরেক কোনার খাটের পাশে যেতেই ওইখান থেকে আরো একজন বের হয়ে আসল।
বলে জ্বী স্যার কিছু একটা ছিল।
এইভাবেই চলছে দিনকাল।
মাঝখানে স্যারদের কাছে ধরা খেয়ে কিছু আদান প্রদান তো হয়েছেই। তখন দেখা যেত রক্তিমের কোথাও মনোযোগ নেই। না ক্লাসে, না মাঠে। অবশ্য হাউস চেকের সময় আরো অনেক রক্তিমকেই গেইমস টাইমে একসাথে রাস্তা দিয়ে হাটতে দেখা যেত।
এখন ক্লাস টুয়েলভ এর কাহিনী বলি।এখন প্রভার কাছেও ফোন আছে।
আরেকদিনের ঘটনা।
ইন্সপেকশন চলতেছে। তো এখন মোবাইল তো লুকাইতে হবে। ফর্মেও রাখতে ভুলে গেছে ও। আবার প্রভাকে ফোন করে জানাতে হবে ২ দিন ফোন দিতে পারবে না। কলেজের অবস্থা গরম।
এখন কি করা। শীতকাল চলতেছে।তাই ব্লেজার পরে ইন্সপেকশন। ব্লেজার এর পকেটে আশা করি কেও হাত দিবে না।সিনিয়র ক্লাস বলে কথা।
স্যার ম্যাডাম এসে গেছে রুমে। আত্মা কাপছে। চিন্তা হচ্ছে। মোবাইলটা কি সাইলেন্ট করা!!! একবার চেক করব!!
কেমনে? সবাই তো রুমে।কেও হাত দিবে না তো। আরে ওই স্যারটা বুকের দিকে তাকায় কেন। এক স্যার আইসা বলে,রক্তিম তোমাকে আজকে নার্ভাস লাগছে কেন!!!
না স্যার কিছু হয়নাই তো।
মনে মনে বলে, যায় না কেন!!!! এত কি দেখে।
একজন বলে রুমাল আছে সবার সাথে?
সবাই রুমাল দেখাও।
রুমাল তো বুকপকেটে!!! সাবধানে রুমাল বের করল সে। তারপর স্যাররা চলে গেল। উফ,অনেক বাচা বাচলাম। ইন্সপেকশন শেষ।
স্যাররা চলে যাচ্ছে। কতখন পরেই ভাইব্রেশন শুরু।এখন তো কল ধরা যাবে কোন সমস্যাই নেই। দুই দরজার চিপায় গেল ফোন ধরতে। আরেক ক্যাডেট কলেজের পোলাপান ফোন দিছে।ওইখানেও ইন্সপেকশন শেষ। কথা চলতেছে সেই।কি কি নিয়া ধরা খাইল। এইগুলা। কিন্তু আসল ধরা এইবার খাইল। রুমের ভেতর স্যার এবং স্যার সব দেখেছে।
স্যার আর রক্তিমের কথা চলছে।স্যার এর সাথে আমার জীবন জড়িত।কাউকে বইলেন না। আরো কত কি!!!!
কিন্তু লাভ হল না। কিছুক্ষন পর হাউসমাস্টার।রাতে ভি.পি।
পরদিন এডজুটেন্ট।
পরদিন প্রিন্সিপাল।
পরদিন আবার জানালার পাশে রক্তিম। তাকিয়ে দেখছে বাইরের আকাশ।
আরো অনেকেই আছে রক্তিমের সাথে।
কারণ মোবাইলটা যে শেয়ারে ছিল।