পরিপার্শ্বই দিয়েছিল তাঁকে,কিভাবে অস্বীকার করি সেই সহজ পাঠের দিনগুলি! সেই যে--
আমি যে রোজ সকাল হলে যাই শহরের দিকে চলে তমিজ মিঞার গরুর গাড়ি চড়ে/ সকাল থেকে সারা দুপুর ইট সাজিয়ে ইটের উপর খেয়াল মত দেয়াল তুলি গড়ে”
অথচ আজ তো তিনি আবহ-নিরপেক্ষ! একান্ত-আমার! প্রাণের মানুষ ! জীবণে জোয়ার-ভাঁটা থাকেই,একবার প্রবল জোয়ারে অনেক কিছু ভেসে গেছিল,সঙ্গে সেই বহুমূল্য প্রাণের গানটি--গানটা শুনলে কেন জানি আজও বাণ ডাকে,ভয় হয়...ফোবিয়া???খুণীর তো কত রকম অস্ত্র ? কেবল নিজের ভাগ্যকে প্রশ্ন করেছি কেন তাঁর অস্ত্র হল প্রিয়তম গানটি! আমার প্রিয় মিছরি দিয়েই বানাতে হল মারাত্মক ছুরি!
এরপর কতদিন ডুবে থাকা,তারপর একদিন ভেসে ওঠা,মাটিতে পা রাখা! মেরুদণ্ডের অনুভব-দৃঢ় মাথা তোলা।কে,কাকে কি দিয়েছিল? আমার লেখারা ছিল আমার নাড়ি ছেঁড়া ধন,আঁতুর ঘরের আগে আমি তার প্রতিপালনের ভার বই,সামান্য কথাটা বুঝতে মোটা মাথায় এত সময় লাগে!!! তবু গানটি আজও চির পিপাসিত রাহু গ্রাস করে নেয় বারবার! ওটা বাদের খাতায় চলে গেল।জীবনে তো কতকিছু হয়।রাহাজানির তালিকায় একটি গান দিলেম লিখে।
বন্ধু ছিল,ছিলই পাশে।উৎসাহ দিয়েছে বারবার-ফালতু পাগলামো ছেড়ে লেখা দরকার,লেখা হচ্ছিল না,বেশ তাহলে অন্য কিছু কাজ,মেনে নিলুম।পত্রিকা করব।তারপর দেখি বন্ধুও নেই,একা একা এই কাগজ হাতে কোথায় দাঁড়াই...বল মা তারা!
আজ শুভদিন।আবহ-নিরপেক্ষ মনের মানুষ আজ জেগে ওঠেন সবখানে,অথচ গুমোট বাইরে,বৃষ্টি হবে কি? বন্ধুর সঙ্গে দেখা হবে কি? আমরা দুজনে আবার কতদিন পর রবীন্দ্র সদনে টিকিট ঘরের সিঁড়িতে!পি ।এন।পি।সি,দেশ-বিদেশের সাহিত্য,ইতিহাস,পুরুষ চরিত্র দুই বন্ধুর কথায় কথায় একাক্কার!বৈশাখী উষ্ণতা,ঘাম ঝরায় সান্ধ্য ভীড়,ভুল-ত্রুটি ,খুলে ফেলি কত অর্গল--বন্ধু রে--আর কত বকবি? প্রতিটি ভুলের মাসুল যে দিয়েই এসেছি এই সন্ধ্যায় ,অন্ধকারে চোখ ভিজে আসে,দুজনেই চুপ-ভেসে আসছে গান...“আমার হিয়ার মাঝে লুকিয়েছিলে...”বন্ধু সুর ধরে,ভয় হচ্ছে না,সত্যি বলছি,কষ্ট হচ্ছে কিন্তু তাঁর জাতই আলাদা! তাল দিতে থাকি পায়ে পায়ে। অদ্ভুতভাবে ফিরে আসছে হারানো রত্ন,আসলে কি পাঁচ বছরের দ্বিগুণ হওয়ার চুক্তিতে আবদ্ধ সঞ্চিত ছিল? ধরা গলা কখন মিলিয়েছি অন্ধকারে---হে নূতন,দুই ছাত্রী,দুই বোন এসে কি যেন বলে...আমি গাইছি তখন ভিতরে...তুমি মোর আনন্দ হয়ে...
সে ফিরেছে ঘরে কতদিন পর,দেখার আগে যাকে চিনেছিলেম,দেখার পরে যাকে ভুলেছিলেম-আমার হিয়ার মাঝে...