গত কয়েক মাস ধরে আমরা দেশজুড়ে মাত্রাতিরিক্ত মাইকের ব্যবহারে প্রচণ্ড শব্দদূষণের শিকার হচ্ছি। বিশেষ করে ওয়াজ-মাহফিলসহ বিভিন্ন অনুষ্ঠানে মাইকের ব্যবহার একধরনের সাংস্কৃতিক রূপ নিয়েছে। ধর্মীয় দৃষ্টিকোণ থেকে এর উপকারিতা নিয়ে আলোচনা হতে পারে, তবে আশপাশের অপরাধ ও নৈতিক অবক্ষয় দেখে মনে হচ্ছে—ওয়াজ-মাহফিল যত দ্রুত বাড়ছে, তার চেয়েও দ্রুতগতিতে অপরাধ ও অনৈতিক কর্মকাণ্ড বৃদ্ধি পাচ্ছে।
শুধু ওয়াজ-মাহফিল নয়, প্রতিদিন দোকান উদ্বোধন, মূল্যছাড়ের বিজ্ঞাপন, মৃত ব্যক্তির জানাজার ঘোষণা, হারানো গরুর খবর, রাজনৈতিক মিছিল-মিটিং—এসব কিছুতেই অতিরিক্ত মাইকের ব্যবহার ভয়াবহ যন্ত্রণা হয়ে দাঁড়িয়েছে। সর্বশেষ, রমজানে সেহরির জন্য মধ্যরাতে উচ্চস্বরে মাইক বাজিয়ে সবাইকে জাগানোর প্রবণতা শুরু হয়েছে, যা সম্পূর্ণ অপ্রয়োজনীয় ও অযৌক্তিক।
আমরা কি কখনো ভেবে দেখেছি, এই শব্দদূষণের ফলে অসুস্থ মানুষ, শিশু এবং সাধারণ জনগণের ওপর কতটা নেতিবাচক প্রভাব পড়ে? আধুনিক যুগে প্রায় সবার হাতে মোবাইল ফোন ও অ্যালার্ম ঘড়ি রয়েছে—যারা রোজা রাখবেন, তারা নিজ উদ্যোগেই সময়মতো জেগে নিতে পারবেন। তাহলে এই অতিরিক্ত শব্দসন্ত্রাসের প্রয়োজন কী?
ধর্ম আমাদের শান্তি ও সহমর্মিতার শিক্ষা দেয়। তাই আসুন, অন্যের কষ্টের কথা চিন্তা করে সচেতনভাবে মাইকের ব্যবহার সীমিত রাখি। সভ্য সমাজে শব্দদূষণ কমিয়ে আনা প্রয়োজন, কারণ এটি শুধু বিরক্তিকর নয়, বরং মানবাধিকারের লঙ্ঘনও বটে।
সবার সুস্থতা ও বিবেকবোধের জাগরণের জন্য শুভ কামনা রইল।