আমার জানা মতে, বাংলাদেশে পাসপোর্ট বানানো মোটামুটি কঠিন কাজ হলে ও মালয়েশিয়াতে বাংলাদেশের পাসপোর্ট বানানোর মতো সহজ কাজ আর নেই। এখানে পাসপোর্ট বানানো নেক সহজ তাই নয় এখান থেকে পাসপোর্ট বানানো খরচও অনেক অনেক কম। বলা যায় বিনা খরচে এখানে পাসপোর্ট বানানো সম্ভব।
জানা গেছে বিদেশে বাংলাদেশের দূতাবাস সময়ে পাসপোর্ট তৈরি করতে চাইলে বাংলাদেশের চেয়ে অনেক বেশি ফিস প্রদান করতে হয়। এটা গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় কর্তৃক নির্ধারিত। বাংলাদেশে পাসপোর্ট তৈরি করার ফিস সাধারণত 3000 টাকার কাছাকাছি। বিদেশে বাংলাদেশের দূতাবাস সমূহে এই ফিস নির্ধারিত করা হয়েছে মার্কিন ডলারে। সাধারণ একটি পাসপোর্ট বানাতে প্রয়োজন হয ১০০ মার্কিন ডলার ফিস নির্ধারিত।
গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের মাননীয় প্রধানমন্ত্রী কর্তৃক বিশেষ বিবেচনায় যে দেশ সমূহে বাংলাদেশের শ্রমিকরা অধিকহারে অবস্থান করে সেই দেশ সমূহে পাসপোর্ট ফি শুধুমাত্র শ্রমিকদের জন্য কমিয়ে 30 ডলার করা হয়েছে। এই 30 ডলার সংশ্লিষ্ট দেশের মধ্যে পরিশোধ করা যাবে তবে মুদ্রার বিনিময় হার হতে হবে সেই সময়ে সাম্প্রতিককালের।
যেহেতু ফিস লাগে খুবই কম ফলে প্রবাসীরা ব্যাপকভাবে পাসপোর্ট বানাচ্ছে।
অনেক বাংলাদেশের শ্রমিক ই আছেন যারা বছরে একাধিক পাসপোর্ট তৈরি করেছেন।
পাসপোর্ট তৈরি করার জন্য ব্যাংকের নির্ধারিত হিসাবে টাকা জমা দিয়ে আবেদনপত্র পূরণ করে পোস্ট অফিসের মাধ্যমে কুয়ালালামপুরে অবস্থিত বাংলাদেশ দূতাবাসে পাঠিয়ে দিলেই হল। দূতাবাস আবেদন পত্র পাওয়ার পরে আবেদন পত্র প্রসেস করে এবং নির্ধারিত সময়ের মধ্যে পাসপোর্ট তৈরি করে অনলাইনে প্রকাশ করে।
আবেদনকারী চাইলে কুয়ালালামপুরের পাশে আম্পাংএ অবস্থিত পাসপোর্ট অফিস থেকে সরাসরি নিজে গিয়ে পাসপোর্ট সংগ্রহ করতে পারেন অথবা পোস্ট অফিসের মাধ্যমে ওপাসপোর্ট সংগ্রহ করতে পারে।
মালয়েশিয়াতে শ্রমিকদের জন্য পাসপোর্ট এর আবেদন ফিস ৩০ মার্কিন ডলার হলেও তাদেরকে ৩০ মার্কিন ডলার পরিশোধ করতে হয় না। তাদেরকে মালয়েশিয়ার স্থানীয় মুদ্রায় 116 রিংগিত পরিশোধ করলে চলে।
30 মার্কিন ডলারের আজকের বিনিময় হার অনুযায়ী রিংগিতে এই ফিসের পরিমাণ অর্থ আসে ১২৩ রিঙ্গিত। কিন্তু তাদেরকে পরিশোধ করতে হচ্ছে মাত্র 116 রিংগিত।
একটি বিষয় লক্ষণীয় যে, সরকার মাত্র তিন ভাগের এক ভাগ ফিস গ্রহণ করার ঘোষণা দিলেও সরকার সেই টাকা পাচ্ছে না। সরকার পাচ্ছে 116 রিংগিত অর্থাৎ প্রতিটি পাসপোর্টে সরকারের রাজস্ব লস হচ্ছে প্রায় ৭ রিঙ্গিত।
জানা গেছে, বাংলাদেশ দূতাবাসের পাসপোর্ট অফিসে প্রতিদিন গড়ে এক থেকে দেড় হাজার পাসপোর্টের আবেদন পত্র জমা পড়ে। ধরা যাক যদি 1000 আবেদনপত্র জমা পড়ে তাহলে 1000 আবেদনের ক্ষেত্রে সরকারের লোকসানের পরিমাণ 7000 রিঙ্গিত। প্রতি মাসে ২২ বাইশ কর্মদিবস ধরলে এক মাসে লোকসানের পরিমাণ ১ লাখ ৪৪ হাজার রিঙ্গিত বাংলাদেশি টাকায় প্রায় ২৯ লাখ ৫২ হাজার টাকা।
কুয়ালালামপুরের বাংলাদেশ দূতাবাস সম্প্রতি এক ঘোষণায় বলেছে তারা বিগত তিন মাসে প্রায় এক লক্ষ দশ হাজার আবেদনপত্র গ্রহণ করেছে। এক লক্ষ দশ হাজার আবেদনপত্রের ক্ষেত্রে বাংলাদেশ সরকারের লোকসানের পরিমাণ হচ্ছ মালয়েশিয়ান রিংগিত 7 লক্ষ 70000 যা বাংলাদেশী টাকায়। 15,785,000 মাত্র! (বিনিময় হার এক রিংগিত সমান বাংলাদেশি টাকায় 20 টাকা 50 পয়সার হিসাব)
ইচ্ছাকৃতভাবে রাষ্ট্রীয় অর্থ লোকসানের এই দৃষ্টান্ত মনে হয় বাংলাদেশের খুব কম অফিসেই আছে!
সর্বশেষ এডিট : ২৮ শে এপ্রিল, ২০২১ সন্ধ্যা ৬:১৩