ধরে নেয়া যায়- প্রায় ১ কোটি বাংলাদেশী বর্তমানে জীবনের নানা প্রয়োজনে প্রবাসে বসবাস করছেন। কেউ বা কাজের প্রয়োজনে পরিবার পরিজন রেখে আবার কেউবা পরিবারসহ বিদেশে আছে। কেউ কেউ আবার অন্য দেশের পাসপোর্ট পেয়েও গেছেন।
প্রবাসী বাংলাদেশীদের কাছে বাংলােদেশের পাসপোর্ট একটি অন্যতম প্রয়োজনীয় জিনিস। কেননা, এটাই তার পরিচয়। এটাতে লাগানো হয় প্রবাসী যে দেশে বসবাস করেন সেই দেশের ভিসা।
বর্তমানে বাংলাদেশে যে পাসপোর্ট দেয়া হয় তার মেয়াদ দেয়া হয় ৫ বছর। এটা প্রবাসীদের যন্ত্রণার অন্যতম কারণ। কেননা, ৫ বছর পর আবার তাকে পাসপোর্ট নবায়ন করতে হয়। এখন নবায়ন দেয়া হয় না। পুরাতন পাসপোর্টের তথ্য দিয়ে নতুন আরেকটি পাসপোর্ট ইস্যু করা হয়। এটাকে বলা হয় রিইস্যূ । এই রিইস্যু করানোর পেছনে অনেক যন্ত্রণা। কেননা, এটা করানোর জন্য পাসপোর্ট অফিসে যেতে হয়।
পাসপোর্ট অফিস মানেই অবৈধ টাকার লেনদেন। সেখানে খুব কম মানুষই টাকা ছাড়া পাসপোর্ট নিতে পারেন। ফলে পাসপোর্ট অফিসে যারা কাজ করেন তারা সবাই হা করে থাকেন টাকার জন্য।
বর্তমানে প্রবাসেও বাংলাদেশের পাসপোর্ট অফিসগুলোর শাখা খোলা হয়েছে। বিদেশে বাংলাদেশের দূতাবাসগুলোর ভবনে এই সব অফিস খোলা হয়েছে। ফলে টাকা খেকোরা এখন বিদেশেও হা করে থাকে।
সমস্যা থেকে উত্তরণ পাবার একটি অন্যতম উপায় হচ্ছে পাসপোর্টের মেয়াদ ৫ বছরের পরিবর্তে ১০ বছর করা। ১০ বছর মেয়াদী পাসপোর্টের দাবি প্রবাসীদের অনেক দিনের। কিন্তু এই দাবী পাস কাটানোর জন্য পাসপোর্ট অফিসের লোকেরাই দায়ী। তারা চায় না পাসপোর্টের মেয়াদ ১০ বছর করা হোক। কেননা, পাসপোর্ট তাদের কাছে অবৈধ আয়ের উৎস। এটার মেয়াদ ১০ বছর করা হলে তাদের আয় কমে যাবে। তারা গাড়ী , বাড়ি করতে পা্রবে না। বিলাসী জীবন যাপন করতে পারবে না।
তবে আমি মনে করি, সরকার যদি ১০ বছর মেয়াদী পাসপোর্ট চালু করে তাহলে এটা থেকে নাগরিকদের সাথে সাথে সরকারও লাভবান হবেন। কেনন, বর্তমানে ৫ বছর মেয়াদী একটি পাসপোর্ট বানাতে ধরে নেই, ৫ হাজার টাকা লাগে। তাহলে ১০ বছর মেয়াদী পাসপোর্টের জন্য ফি ১০ হাজার টাকা নেয়া যেতে পারবে। ১০ হাজার টাকায় বছর মেয়াদী পাসপোর্ট দিতে হতো ২ টি। আর ১০ বছর মেয়াদী পাসপোর্টের জন্য সরকারকে দিতে হবে মাত্র ১ টি পাসপোর্ট। ফলে সরকারের অর্থ সাশ্রয় হবে।
বর্তমানে পাসপোর্ট অফিসে অহেতেুক কর্মী রাখা হয়েছে। এতো কর্মী তখন আর প্রয়োজন হবে না। ঢাকার আগার গাঁও পাসপোর্ট অফিসে থেকে বিদেশের পাসপোর্ট অফিসগুলোতে প্রতি মাসে ঢাকা অফিসে থেকে কর্মকর্তা-কর্মচারীদের ভ্রমণ ও মাসের পর মাস বিদেশে অবস্থানের জন্য সরকারকে বিপুল পরিমাণ অর্থ খরচ করতে হচ্ছে। ১০ বছর মেয়াদী পাসপোর্ট চালু করলে সরকারকে এই অর্থ খরচ করতে হবে না। বন্ধ হবে পাসপোর্ট অফিসের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের প্রমোদ ভবন।
পাসপোর্ট অফিসের নিম্নপদস্থ কেরানীরা গাড়ী বাড়ির মালিক। তাদের এই টাকার উৎস কী? এটার সন্ধানের জন্য দুদককে তৎপর হওয়া প্রয়োজন।
সর্বশেষ এডিট : ০১ লা ফেব্রুয়ারি, ২০১৯ রাত ৮:০১