আমি পথ খুঁজি নাকো পথ মোরে খোঁজে
মন যা বোঝে না বুঝে, না বুঝে তা বোঝে।।
আমার চতুর পাশে সব কিছু যায় আসে
আমি শুধু তুষারিত গতিহীন ধারা।
আমায় প্রশ্ন করে নীল ধ্রুবতারা
আর কত কাল আমি রব দিশাহারা.....
আগস্ট মাসটা ঠিক সমুদ্র ভ্রমণের জন্যে না, তবুও এত কাছটায় যখন চলে আসা হয়েছে, সমুদ্রটা না দেখে যাওয়া সমীচীন হতো না। নাতিশীতোষ্ণ আবহাওয়ায় রিসোর্টের বারান্দায় চা খেতে খেতে ভাবতে থাকে মনসুর । একটু দূরেই আগুন জ্বালিয়ে গান করছে সাথে আসা বাচ্চা ছেলেমেয়েগুলো । সাথে আছে বন্ধু প্রীতম আর বন্ধুপত্নী পরমা । গিয়াস ছেলেটা ভালই বাজায় গীটারটা , সাথে গায়িকারও গলা ভালো। কিন্তু চর্চার যে যথেষ্ট অভাব আছে মাঝে মাঝে কেঁপে যাওয়া গলাটা তার প্রমাণ । এই মেয়েটা খুব সম্ভবত জীবনে কোন ব্যাপারই সিরিয়াসলি নেয় নি। অথবা সব ব্যাপারই সিরিয়াসলি নিতে গিয়ে একটা তালগোল পাকিয়ে ফেলেছে। তবে যাই হোক সবার মধ্যে পজিটিভ ভাইব ছড়িয়ে দেবার একটা আশ্চর্য ক্ষমতা আছে। অবশ্য এটা খালি প্রকৃতির কাছে আসলেই হয় কিনা জানি না। ক্যাম্পাসে দু একবার দেখা হয়েছিল টি এস সি এর আড্ডায় , খুব একটা কথা বলতে দেখে নি কখনো মনসুর। মাথায় বড় একটা ওড়না বাঁধে , ঢিলেঢালা জামা পরে , ছেলে বন্ধুদের থেকেও এক হাত দুরে দাঁড়িয়ে গল্প করা এই মেয়েকে দেখে একটা নরম শরম গোবেচারা মানুষ মনে হয়েছিল। কালকের আগে কখনো বুঝতেই পারে নি মনসুর এই মেয়ের কথায় এতটা ধার থাকতে পারে। পুরো পা থেকে মাথা পর্যন্ত এক বিভ্রান্তির নাম। কখনো আবৃত্তি করে গান করে সবাইকে মাতিয়ে বেড়াচ্ছে আবার যেকোন জায়গায় যাওয়ার আগে ধরে ধরে সবকটাকে দোয়া দরুদ পড়িয়ে নিচ্ছে, পুরো মানুষটা জুড়ে এক বিভ্রান্তির খেলা।
“There will be time, there will be time
To prepare a face to meet the faces that you meet;
There will be time to murder and create,
And time for all the works and days of hands
That lift and drop a question on your plate;
Time for you and time for me,
And time yet for a hundred indecisions',
And for a hundred visions and revisions,
Before the taking of a toast and tea.”
-ওই এই কবিতা তুই লিখসিশ ?
চেহারার মধ্যে ১০০ ওয়াট বাল্ব জ্বালিয়ে রথী জিজ্ঞেস করলো।
-নাহ! আপু, পি এস এলিয়টের কবিতা
- অও, তুই না বললেও বুঝছি যে এইটা তোর লেখা হতেই পারে না, তুই যা আগডুম বাগডুম লিখিস !!
- তুমি কোনদিন যদি আমার একটু সুনাম করতে, দুঃখ সারাজীবনের ।
- তুই ভাল লিখিস না, তাও ভাল বলতে হবে?
- নাহ! শুধু লেখা না , সবকিছু নিয়ে। আমার চেহারা নিয়ে , আমার কথাবার্তা নিয়ে ।
- তোর চেহারা খারাপ তো বলি নাই , বোকা বোকা তোর চেহারা এতা তো তোর দোষ না, আল্লাহ তা'য়ালা তোকে এভাবে দেখতে চেয়েছেন আর আসলে তুই যে গাধা টাইপ এক্সপ্রেশন দিয়ে ঘুরে বেড়াস এটাও মে বি তোর চেহারার কারণে । তার চেয়ে বড় ভুল তোর প্রয়োজনের চেয়ে বেশি মাত্রায় পজিটিভ স্বভাব।
- এটার মধ্যে ভুল কি আছে?
- অবশ্যই ভুল আছে, তুই যদি প্র্যত্যেকটা মানুষের মধ্যে ভালটা ধরে বসে থাক , তাহলে তো তুই এই সমাজটা বদলাতে পারবি না। দুনিয়ার কেউ বদলাবে না। ক্যারেক্টারিস্টিক ডেভেলপ হবে না কারও ।
- মানুষ বদলাবে আমার নেগেতিভিটিতে, তা আপনাকে কে বলল ?
- না হোক তাই বলে তুই ট্রাই করবি না??
- এইখানে কেউ কাউকে বুঝে না রে আপু, আপনি একজনের জন্যে বালতি ভরা অভিযোগ নিয়ে দাঁড়িয়ে আছেন। থিক ঠিক সমপরিমাণ অভিযোগ নিয়ে হয়তো সেও আপনার জন্যে অপেক্ষা করছে অন্যে কোন কেদারায়।
- হাহাহাহা হোয়েন ফিলোসফার স্ট্রাইক্স .।।
সর্বশেষ এডিট : ০৭ ই নভেম্বর, ২০১৭ দুপুর ২:৫৬