কি শিরোনাম দেখে অবাক হচ্ছেন?
ভাবছেন আপনি কবে আবার কাউকে প্রকাশ্যে কুপিয়ে খুন করে বন্ড উপাধি পেয়ে গেলেন!
আরে ভাই এতে অবাক হওয়ার আমি তেমন কিছু দেখছি না। আপনি আমি আমরা দেশের সবাই ই এক একজন নয়ন বন্ড। যদি নয়ন নামটা ভাল না লাগে নিজের নামের শেষে বন্ড লাগিয়ে নিন। এরপর নিজেই চিৎকার করে কয়েকবার নামটা জোড়ে বলে শুনে দেখুন নতুন টাইটেল বন্ডসহ নামটা শুনতে খুব একটা খারাপ লাগবে না।
এখন আসেন, আমরা বাংলাদেশের ১৬৪.৭ মিলিয়ন (২০১৭ এর তথ্য মতে) মানুষ কবে এবং কিভাবে, স্বেচ্ছায় কিংবা নিজের অজান্তেই নয়ন বন্ডে পরিনত হলাম তার ব্যবচ্ছেদ করি।
বিঃদ্রঃ এখানে অবশ্যই আমরা আলোকচিত্রশিল্পী ড. শহিদুল আলমের মত আরো দুই একজন, যাদের গাটস আছে আমাদের মানে নয়ন বন্ডদের বিরুদ্ধে উচ্চবাচ্য করতে চায় তাদের গোনায় ধরবো না। ১৬৪.৭ মিলিয়ন বন্ডের মাঝে দুই একজন হিসাবে ও আসতে পারে না। কারন এই বিশাল সংখ্যক বন্ডের সামান্য একটা ফুতে এরকম গাটস ওয়ালা পাবলিক স্রেফ উরে যাওয়ার কথা।
দেশের এই বিশাল জনগোষ্ঠী কিভাবে বন্ড জাতিতে রূপান্তরিত হল সেটা প্রমান করতে স্বাধীনতার পরবর্তী ৪৭ বছরের তথ্য উপাত্ত কিংবা আমাদের অতিমানবীয় ঘটনা উল্লেখ করার কথা আমি ভাবতেই পারি না। বিশ্বাস করেন হজম করতে পারবেন না। যেমন আমি পারি নাই। আমি শূধু ২০১৯ সালের এই সাড়ে ছয় মাসের ভিত্তিতে দেখাচ্ছি আমরা কিভাবে স্বেচ্ছায় কিংবা নিজের অজান্তেই বন্ড হয়ে গেসি।
চলুন নয়ন বন্ডের আলোচিত সেই ঘটনা টা ছোট্ট করে একটু রিভিউ দিয়ে নেই। আমাদের যা স্মৃতি তার উপর আবার পদ্মা সেতুর জন্য আমাদের সব মাথা ছেলে ধরারা নিয়ে গেসে, তাই একটু মনে করিয়ে দিতে চাই আর কি!
গত ২৬ জুন বরগুনা সরকারি কলেজের সামনে প্রকাশ্যে রিফাত শরীফ নামে একজনকে কুপিয়ে হত্যা করা হয় এবং সেই খুনের ভিডিও সোশ্যাল মিডিয়াতে ব্যাপক প্রচার পায়। আমি এটাকে ভাইরাল বলতে চাই না। কারন এই ভাইরাল শব্দ টাও আমাদের বন্ড জাতির মধ্যে এখন ব্যাপক জনপ্রিয়। এই খুনের প্রধান আসামি ছিল সাব্বির আহম্মেদ ওরফে নয়ন বন্ড যিনি বরগুনা শহরে একটা গ্যাংয়ের লিডার যাকে নাকি আবার বরগুনার একটি আসন থেকে নির্বাচিত সংসদ সদস্য ধীরেন্দ্র দেবনাথ শম্ভু এবং তার আইনজীবী পুত্র সুনাম দেবনাথ একটু প্রশ্রয়ের দৃষ্টিতে দেখে। সেই দৃষ্টি প্রসঙ্গে কথা বলার মত গাটস আমার নাই। কৌতূহলী হলে নিজ দায়িত্বে জেনে নিবেন। এসব কিছুই এখন ওপেন সিক্রেট।
তো ঘটনা কি হল, বন্ড সদলবলে মারমার কাটকাট করে সবার সামনে কুপিয়ে গেলো আর আমরা সবাই সেটা দাড়িয়ে উপভোগ করলাম আবার কেউ কেউ ভিডিও করলাম। অবশ্য ভিডিও করাটা খারাপও বলতে পারি না। কারন এই ভিডিওর কল্যানে হয়ত বিচার হলেও হতে পারে। নাহলে আরো বহু শত মামলার মধ্যে এই মামলা ও হারিয়ে যেত কালের গহ্বরে। কারন সোশ্যাল মিডিয়াতে কোন অপরাধের ঘটনা প্রচার না হলে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ ব্যাপারটাকে আমলে নেয় না। যাই হোক রিফাত শরীফের চান কপাল ই বলতে হবে যে ব্যাপারটা শেষ পর্যন্ত সোশ্যাল মিডিয়া পর্যন্ত গড়িয়েছে।
সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে ও আপনি দোষারোপ করতে পারে না। যেই জাতির আবাল-বৃদ্ধা-বনিতা নির্বিশেষ সোশ্যাল মিডিয়ায় আসক্ত, সেইখানে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের লোকেরাও তো একই রোগের রোগী। কই দিন আগেই শুনলাম টিকটক ভিডিও বানাতে গিয়ে সুরমা নদীতে ঝাঁপিয়ে পরে এক ছাত্রের মৃত্যু। এইরকম আসক্তির ঘটনার উদাহরণ লিখতে গেলে কয়েক বছর চলে যাবে। আর এসব আপনেরাও জানেন।
আপনাকে অবশ্যই এই বন্ড গ্রুপের সদস্যদের অতীত ইতিহাস জানতে হবে নাহলে আপনি ভুল বুঝতে পারেন যে সাব্বির আহমেদ বুঝি সেদিন ই রিফাত কে খুন করে বন্ড উপাধি পেয়ে গেসে। এই হত্যার মুল আসামী নয়ন বন্ড কিংবা ফরাজি ব্রাদারদ্বয় বরগুনা শহরে ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করেছিল সেটা ছিলো ওপেন সিক্রেট। তাহলে প্রশ্ন আসে এতদিন আমাদের গর্ব, সেই পুলিশ বাহিনি কই ছিল। এখন একটা ব্যাপার আপনাকে বুঝতে হবে যে কোন ক্রাইম যদিও কোন একজন ব্যাক্তি করে তার সাথে সম্পর্কিত অনেক পক্ষ সেই ক্রাইম থেকে লাভবান কিংবা খতিগ্রস্থ হয়। একটু ধৈর্য ধরেন ব্যাপারটা বুঝিয়ে বলছি।
সারা দেশের চিত্র না দেখিয়ে আমরা উদাহরণস্বরূপ বরগুনার বন্ড গ্যাংকে তুলে ধরছি। ধরেন বন্ড গ্যাং এর প্রধান নয়ন ছাড়া ও আরো পাঁচজন সদ্যস আছে। এই গ্যাঙের প্রধান কাজ ছিল মাদক বিক্রি, ছিনতাই, চাঁদাবাজি মাঝে মধ্যে তারা কোপাকোপি ও করতো। সদ্যসেদের সবাই ই নিজের পরিবারের সাথেই থাকতো। এখন আপনার কি মনে হয়, তাদের কর্মকাণ্ডের মাধ্যমে যেই অর্থ উপার্জিত হত (ছিনতাইয়ের কথা বাদ ই দিলাম মাদক বিক্রি কিংবা চাঁদাবাজির মাধ্যমে আমাদের দেশে কিরকম উপার্জন হয় সেটা এই দেশের সম্মানিত নাগরিক হিসাবে আমরা সবাই ই কমবেশি অবগত) সেটা কি তারা একাই ভোগ করতো নাকি তার পরিবারের মধ্যেও কিছুটা বন্টন হতো? আর শুধু পরিবার ই কেন এসব হালাল উপার্জন আরো কোন পক্ষ পেতে পারে সেটা আপনারা জানেন।
আচ্ছা ধরেই নিলাম এই গ্যাং সদস্যদের পরিবার বাংলা ফিল্মের বাবা মায়ের মত তাদের এই উপার্জন নিতে অস্বীকার করল। যেহেতু এরা সবাই কমবেশি আধ ডজন মামলার আসামী ছিলো তো সবার ই এটা জানার কথা এরা কোন পুন্যের কাজ করে উপার্জন করে। কিন্তু কোন পরিবার কি তার সন্তানকে বলছে বন্ড হওয়ার পথে যেয়ো না খোকা।
আমি অন্তত এরকম বলতে দেখি নাই বরঞ্চ তাদের ছেলেদের বা ভাইদের এই বন্ড টাইপ শক্তিতে বলীয়ান হয়ে তারা নিজেরাও একজন বন্ডে পরিণত হয়। তাহলে দেখেন এইখানে এই ছয় বন্ডের সাথে তার পরিবারের বাকি সদস্যরাও খুব সুন্দর করে সমাজে এক একজন বন্ডে পরিণত হচ্ছে।
আচ্ছা এবার আসেন একটু গোবেচারা টাইপ বন্ডের কথায় আসি। গোবেচারা বলেছি দেখে এরকম ভুল বুঝবেন না যেনো। এরাও এদের ফিল্ডেও এরকম শত শত নয়ন বন্ডকে সেকেন্ডে কুপকাত করে দিতে পারে। ঐযে তাদের কথা বলছি, যারা দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে কোপাকোপির চমৎকার দৃশ্য দেখছিল কিংবা যাদের কাছে এই দৃশ্য কিছুটা লোমহর্ষক মনে হওয়ায় তারা লেগ গুটিয়ে পালিয়েছিলো। এরা সবাই এক একজন বন্ড। এখন আপনি বলতে পারেন কিভাবে এরা বন্ড হয়!
আসেন, এরা যে কত ভাবে বন্ড হয় তার ফিরস্তি দিচ্ছি। প্রথমে আসি যারা দাড়িয়ে এই কোপাকোপি দেখছিলো তাদের প্রসঙ্গে। আমরা তো সবাই জানি যে অন্যায় যে করে কিংবা অন্যায় যে সহে দুইজনেই সমান অপরাধী। তো এখানে চোখের সামনে খুন হচ্ছে আমার মধ্যে যেহেতু ভাবান্তর নাই তাহলে আপনাকে বুঝতে হবে আমি ও কম বেশি অই বন্ডের লেভেলেই আছি। এখন আপনি বলতে পারেন ভাই, এওরকম অস্ত্রের সামনে কি যাওয়ার সাহস সবার আছে নাকি? না ভাই এখানে অস্ত্র মুখ্য না এখানে মুখ্য হচ্ছে অইখানে আপনি অন্যায়কে বাধা দিলে কোন ভাবে বেনিফিটেড হচ্ছেন কিনা। যেহুতু বন্ড গ্রুপের সদস্যারা এলাকার হোমরাচোমরা তাদের কাজে বাধা দিয়ে তাদের বিরাগভাজন কেউ হতে চায় নাই।
আচ্ছা বাদ দেন ভাই বুঝলাম অস্ত্রের সামনে যেতে সাহস পান নাই। কিন্তু আমি শুরুতেই বলে নিছিলাম এদেরকে গোবেচারা টাইপ বন্ড বলছি দেখে বুঝতে ভুল করবেন না। নয়ন বন্ড ও তার গ্যাং মেম্বাররা দিবালোকে একজনকে মাত্র কুপিয়ে সাহসিকতার জন্য খুব বাহাবা পাচ্ছে। কিন্তু এই গোবেচারা টাইপ বন্ডেরা শত শত মানুষকে কুপোকাত করে দিচ্ছে সে হিসাব কি রাখেন? আরে ভাই রাখবেনই বা কিভাবে এসব খবর তো আপনার সোশ্যাল মিডীয়াতে আসে না।
ধরেন যারা দাঁড়িয়ে এই ঘটনা প্রত্যক্ষ করেছে তার মধ্যে তিনজনকে বেছে নিলাম, যার মধ্যে একজন মাছ বিক্রেতা, একজন ওষুধ বিক্রেতা আর অন্যজন ছাত্র। আমার মতে এরা তিনজন ই গোবেচারা কিন্তু ভিতরে ভিতরে নয়নের চেয়েও সাহসী বন্ড। কিভাবে? প্রমান দিচ্ছি,
মাছ বিক্রেতা প্রতিদিন কয়েক মন মাছ বিক্রি করে। ধরেন আনুমানিক চল্লিশটা পরিবার এই মাছ বিক্রেতার মাছ খায়। এখন মাছ দ্রুত পচনশীল ব্যবসায়ী নিজে লাভবান হতে মাছে ফরমালিন মেশালো। যেই চল্লিশটা পরিবার এই মাছ বিক্রেতার মাছ খায় তাদের অবস্থা তো রিফাত শরীফের চেয়ে ও খারাপ। রিফাত তো একেবারে মরে বেঁচে গেসে কিন্তু ফরমালিন খেয়ে খেয়ে এই চল্লিশ পরিবারের কম করে হলেও ১৫০ জন মানুষ যে ক্যান্সার সহ নানা মরনব্যাধির দিকে ধাবিত হচ্ছে সে খবর কি রাখি আমরা? আবার দেখেন এই মাছ বিক্রেতার পরিবার তার উপার্জন থেকে খরচ করে, তারা জানেও সে কিভাবে উপার্জন করে কই তার পরিবারের সদ্যসরা কি তাকে বাধা দিচ্ছে? তার মানে শূধু মাছ ওয়ালা না তার পরিবারের বাকি সদস্যরা ও বন্ডে পরিণত হয়েছে। কারন অন্যায়কে তারা উৎসাহিত করছে।
ওষুধ বিক্রেতা বেশি লাভের আশায় নিম্ন মানের কিংবা ভেজাল ওষুধ বিক্রি করছে। এটার কথা বাদ ই দিলাম প্রত্যেকটা ওষুধ বিক্রেতা তো ডিগ্রীপ্রাপ্ত বন্ড। এরা রামদা দিয়ে মারে না এরা মারে এন্টোবায়োটিক দিয়ে।
বলতে পারেন সব ই বুঝলাম ছাত্র কিভাবে বন্ড হল? আরে ভাই আপনারা বুড়ো হয়ে গেসেন না? ছাত্ররাই তো আপনাদের দায়িত্ব কাধে তুলে নিসে। স্কুল কলেজ কিংবা বিশ্ববিদ্যালয়ের টাইটেলধারী বন্ডদের কথা বাদ ই দিলাম। ধরেন যে ছাত্র দাড়িয়ে ছিলো তার বাবা একজন দ্বিতীয় শ্রেণীর সরকারী চাকুরীজীবী কিন্তু সে আবদার করে একটা ৩ লাখ টাকা দামের বাইক চাইতে তার সরকারী চাকুরীজীবী বাবা না করতে পারলো না। কারন ছেলে জানে বাবার বেতন বিশ হাজার হলেও বাবার মাসিক আয় লাখেরও অনেক উপরে। বাবার টাকার গরমে ছেলেও খুব একটা পড়াশুনায় মনযোগী না। পরীক্ষায় নকল করে কোনরকম পাস করে। কলেজে যায় মেয়েদেরকে টিজ করতে। কি ভাই এসব তো আপনি ও অনেক করেছেন তাই এসব কারনে তো তাকে বন্ড মনে হচ্ছে না? হবে না তো ভাই! রিফাত ফরাজির ছোট ভাই রিশান ফরাজিও কলেজের ছাত্রই ছিল।
তো দেখলেন বন্ডের ডালপালা কত বড়। এখন বাকি থেকে গেল ওই শ্রেণী যারা ভিডিও করে সোশ্যাল মিডিয়াতে দিয়ে রিফাত ফরাজিকে বিচার পাইয়ে দেয়ার একটা বন্দোবস্ত করেছে। এরা এই কারনে একটা বাহাবা পেতেই পারে। কিন্তু রাখেন এই শ্রেনির মানুষ আপনার বাহাবার থোরাই কেয়ার করে। তারা শুধু কেয়ার করে লাইক, কমেন্ট আর শেয়ার। এই শ্রেণীর লোকেরা হল সোশ্যাল মিডিয়া বন্ড। এরাই সোশ্যাল মিডিয়াতে লাইক, কমেন্ট ও শেয়ারের জন্য বলে বেরায় পদ্মা সেতুতে অনেক মাথা চাই এবং তাদের কথায় সারা দিয়ে দেশব্যাপি বাকি বন্ডরা নয়জন নিরীহ মানুষকে নয়ন বন্ডের মতই হত্যা করেছে।
নয়ন বন্ড রিফাতকে কেন হত্যা করল তার মোটিভ এখন ও পুলিশ ক্লিয়ার করতে পারে নাই উপরন্তু সে তথাকথিত বন্ধুক যুদ্ধে নিহত। তো আপনি বা আমি কোনদিন ই জানতে পারবো না আসল কারন কি ছিল বা অন্য কারো হাত ছিলো কিনা। কারন রিফাত হত্যার পর বাকি ঘটনা গুলো পর্যবেক্ষণ করলে আপনিও বুঝতে পারবেন ব্যাপারটা, কিন্তু দেখেন বাড্ডায় তসলিমা কে যে হত্যা করলো তারা কিন্তু নয়ন বন্ডের চেয়েও বেশি ভয়ংকর। এদের মোটিভ ই বা কি ছিলো। মা গেলো মেয়ের ভর্তির ব্যাপারে খোজ খবর নিতে সেখানে কি নির্মমভাবে তাকে হত্যা করা হল। দিনের আলোতে কয়েকশ মানুষ সেই হত্যা কান্ডে অংশগ্রহণ করলো বাকি কয়েক হাজার সেই হত্যাকান্ড দেখে আনন্দ নিল। আবার সেই এক সুত্র প্রয়োগ করেন দেখবেন সবাই বন্ডের বেঞ্চমার্ক খুব সুন্দর করে পূর্ণ করেছে।
এখন আপনি সবার উপরে বর্ণিত সুত্র প্রয়োগ করেন দেখবেন আমরা সবাই কোন না কোনভাবে বন্ড হয়ে যাচ্ছি। কখন নিজেই বন্ড, কিংবা কখন বন্ডের সহযোগী, কখন বা বন্ডের আয়ের বখরা খাচ্ছি, কখন বন্ডের ভাই/বোন মামা/ চাচা ইত্যাদি।
একটু দম নেন, তারপর ভাবেন। দেখবেন আপনি আপনার জায়গায় বন্ড হয়ে বসে আছেন। হয়ত আপনি কাউকে কুপিয়ে হত্যা করছে না কিন্তু অন্য কোন না কোনভাবে কারো ক্ষতি করছেন। সেটা হতে পারে ঘুষ খাওয়া, দুর্নীতি, দায়িত্ব পালনে গাফলতি, খাদ্যে ভেজাল, চুরি-ডাকাতি, রেইপ, ইভটিজিং, অপরাধ দেখেও হাত গুটিয়ে বসে থাকা, পরীক্ষায় নকল কিংবা প্রশ্ন ফাঁস।
পত্রিকার পাতা খুললে তার প্রমান পেয়ে যাবেন। এই দেশে বন্ড ছাড়া কোন ভাল মানুষ আছে কিনা আমার সন্দেহ হয়। আপনি একজন নির্দিষ্ট বন্ডকে দোষারোপ করতে পারবেন না। দেখবেন তার উপরে আরো বিশাল কোন বন্ড তাকে প্রশ্রয়ের দৃষ্টিতে দেখছে সেখানে আপনি কিছু বলতে গেলে হয় ড. শহিদুল আলমের মত কিংবা ভাগ্য আর একটু ভাল হলে সাগর-রুনি দম্পতির অবস্থা বরন করতে হবে।
যেই দেশে ৩ মাস বয়েসি শিশু থেকে শত বছরের বৃদ্ধা ও নিরাপদ না(২০১৯ সালেই শুধু দেশে যে পরিমান শিশু রেইপড হয়েছে এরচেয়ে বেশি অন্যকোন দেশে হয়েছে কিনা আমার জানা নেই। থাকলে জানাবেন) যেই দেশে বালিশ উঠাতে খরচ পড়ে ৮০০ টাকা, তসলিমার মত নিরীহ মানুষ গণপিটুনিতে মারা যায়, যেখানে কোন ভেজাল ছাড়া খাদ্যের কথা চিন্তা করা যায় না, যেই দেশের মানুষের কাছে অবকাঠামোগত উন্নয়নই শুধু উন্নয়ন মনে হয়, সেই দেশের মানুষের আসলে মানুষ হবে না হবে বন্ড মানুষ, তাদের মাথা গণহারে কেটে পদ্মা সেতুতে দিয়ে সেতুর কাজ তরান্বিত করতে জোর দাবি জানাচ্ছি।
বিঃদ্রঃ আপনারা দেশের হালহকীকত সম্পর্কে আমার চেয়েও বেশি ওয়াকিবহাল। কোটির বেশি উদাহরণ দেয়া যেতো আমাদের বন্ড হওয়ায় সম্পর্কে। তাতে শুধুই লেখার কলেবর বাড়ত। আশা করি এতোটুকুন ই আপনাদের বুঝার জন্য যথেষ্ট।
সর্বশেষ এডিট : ২৫ শে জুলাই, ২০১৯ বিকাল ৫:৪৩