somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

বন পলাশের পদাবলি

১৬ ই মার্চ, ২০১৮ রাত ১০:৩৭
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

প্রভাতের রোদ্দুর যে তোমার মুঠিতলে
হাতের কড়ায়, ঘামের গন্ধে গন্ধবিধুর প্রাণ
আহা! যে ফড়িঙ প্রিয় সোনায় সোহাগা
সেই আজ গায় নতুন দিনের গান-


ছোটবেলায় আমরা সবাই কমবেশি দৌড়ে বেড়িয়েছি ফড়িঙের পিছুপিছু, ধরতে চেয়েছি তার লেজ!
ছোট্টবেলার সেই ফড়িঙ ধরা দিনগুলোকে পিছনে ফেলে আমরা হয়ত না চাইতেই বড় হয়ে গেছি কিংবা বড় হতে হয় বলে বড় হয়েছি। যখন বুঝতে পেরেছি যে বড় হয়েই গেছি তখন করার আর কিছুই নেই, মেনে নিতে হয়েছে বড় হয়ে যাওয়াটা। বড় হয়ে যাওয়ার নানা ব্যস্ততার মধ্যদিয়ে যেতে যেতে এক টুকরো অখণ্ড অবসর পেলে কার না মন চায় ছুটে বেড়াতে গঙ্গাফড়িঙের পিছুপিছু। এরকম অনুভব আমার হয়, আপনার হয়- আমাদের সবারই হয় এক একটা ব্যক্তিগত অনুভব। যে অনুভব এর কথা বলছিলাম ঠিক এই শিরোনামে একটা কবিতা পাওয়া যায় শ্রদ্ধেয় অলোক কুমার চক্রবর্ত্তী রচিত কাব্যগ্রন্থ বন পলাশের পদাবলি’তে।

মূলত আজ এই লেখাটা বন পলাশের পদাবলি নিয়েই, বন পলাশ তার বাক্যে বাক্যে, তার রাঙা ফুলে-ফুলে কি বলতে চায়,
কি লিখতেন চেয়েছেন কবি, কিংবা কি ভাবতে চেয়েছেন এবং কতটা ভাবাতে চেয়েছেন পাঠককে সেই নিয়েই আজকের লেখা।

সম্প্রতি শেষ হয়ে যাওয়া বইমেলা-২০১৮ তে প্রথম প্রকাশ পায় বন পলাশের পদাবলি। এর স্রষ্টা বা কবিকে আমি ব্যক্তিগতভাবে চিনি বলে রিভিউ লিখতে অনেক দ্বিধা কাজ করছিল। ভাবছিলাম হয়ত বইয়ের বাইরে গিয়ে লিখে ফেলি যদি, যদি ঠিকমত মূল্যায়ন করা না হয় !

যখন একটি কবিতার বইয়ের রিভিউ লিখতে বসা হয় তখন আসলে শুধু সেই বইয়েরই নয় বরং রিভিউ লিখতে হয় কবি ও কবিতা দুটোর একত্রে রিভিউ। কবিতা তো কবির মনের আবেগ ও ভাব। ক্ষণে ক্ষণে যেগুলো জন্ম-নিয়েছিল কবির হৃদয়ে। তাই কবিতার বইয়ের রিভিউ লেখা সবচেয়ে শক্ত কাজ বলেই মনে করছি। কবিতার বইয়ের রিভিউ লেখার চেয়ে গল্প কিংবা উপন্যাসের বইয়ের রিভিউ লেখা তুলনামূলক কিছুটা সহজ বলেই আমার কাছে মনে হচ্ছে। কবিতা থেকে উপন্যাস ভাল না মন্দ সে বিচারে যাব না, বিচার করার আমি কে! শুধু বলতে চাই দশ লাইন বা বিশ লাইনের একটা কবিতা মাঝেমধ্যে এমনকিছু বলে যায় যার তরজমা করতে গেলে কয়েকশ’ পাতা লিখলেও সম্পূর্ণ ভাব হয়ত শেষ হবে না। কবিতার সবচেয়ে বড় দুর্বলতা হচ্ছে কবিতা কি বলতে চায় অনেক সময়েই পাঠক তা বুঝতে পারেন না। যারা পারেন, তারা নিশ্চয়ই কবিতাকে ভালোবাসেন।

বন পলাশের পদাবলি নিয়ে একটুকু দাবি নিঃসঙ্কোচে করতে পারি যে, আপনি যদি ভাবতে চান তাহলে কবিতাগুলো আপনাকে ভাবাবে।


সময়ের আবর্তনে চাঁদ ওঠে আবার চাঁদ ডুবেও যায়। চাঁদের দিকে তাকিয়ে আমাদের ভাবনা চিন্তার শেষ নেই। চাঁদের একটা আলো আছে। ইংরেজিতে যাকে বলে, মুন লাইট। চাঁদের এই আলোকে বাংলায় বেশ একটা মিষ্টি নামে ডাকা হয় জ্যোৎস্না। চাঁদের এই আলোর এক অপরূপ শক্তি, কেউ যদি একবার তাকায় অন্যদুটি চোকের দিকে জ্যোৎস্না সেই চোখ ভরিয়ে দিবে রুপালী আলোয়।


আমাদের জন্ম থেকে মৃত্যু পর্যন্ত একটা দৌড়। কিভাবে দৌড়ে যেতে হবে তা আমাদের জানা। দৌড়াতে দৌড়াতে হাঁপিয়ে যাই, পায়ের শিরা-উপশিরায় রক্তচাপ বেড়ে যায়। হাতের লোমকূপ থেকে বিন্দু বিন্দু জল বেড়িয়ে আসে। সেগুলো আমাদের জানিয়ে দেয় কতটা দৌড়েছি আমরা, কিন্তু আরও কতটা দৌড়াতে হবে তা কেউ জানিয়ে দেয় না। কি এক নেশায় আমরা কেবল দৌড়েই চলি---------- দৌড়ে চলে যেতে চাই কোথাও একটা, কিন্তু পারি না। দৌড়ে চলেও যেতে পারি না আবার ফিরেও যেতে পারি না।


আমরা সবাই বেশি বা অল্প ভালো কাউকে না কাউকে বেসেছি। এখনও বাসি। ভালোবাসার সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ দিক হচ্ছে ভালোবেসে যাওয়া। ম্যাথমেটিক্যালি বলতে গেলে ভালোবাসা একটা চলমান গ্রাফ, যার মান সর্বদা ধনাত্মকের দিকে যেতে হয়। ভালোবাসার কেবল এই একটাই যোগ্যতা আছে, ভালোবাসতে পারার যোগ্যতা।



নাগরিক জীবনে হাঁপিয়ে ওঠা খুবই সাধারণ। একা থাকি কিংবা অন্য কাউকে নিয়ে থাকি একঘেয়েমি চলে আসে মাঝে-সাজে। জীবনকে বাঁচিয়ে রাখতে হলে এই একঘেয়ে জীবনের থেকে ছুটি নিয়ে পালিয়ে যাওয়া উচিত কয়েক-হাজার মাইল দূরে। শহর থেকে দূরে- যেখানে পানিতে ভাসে কলমিলতা। যেখানে কলমির পাতায় ভর করে নেমে আসে ঝি ঝি ডাকা সন্ধ্যা। তারপর ! তারপর জীবনানন্দের মত যদি বলতে পারতাম !!
- থাকে শুধু অন্ধকার
মুখোমুখি বসিবার, নাটোরের বনলতা সেন।



একজন কবিকে জানতে হলে তার কবিতা পড়ার কোন বিকল্প নেই। কবিতায় মূলত কবি বাস করেন। বাস করে তার চিন্তা চেতনা। বিজ্ঞান আর কবিতার মধ্যে একটাই কেবল পার্থক্য, বিজ্ঞানে যা যা সম্ভব নয় কবিতায় সে সবকিছুই সম্ভব।
চাইলেই কবিতার লাইন ধরে হেঁটে আসা যায় কয়েক শ’ বছর পিছিয়ে, বেড়িয়ে আসা যায় আটলান্টিকের তীরে।
কবিতায় প্রাণ থাকে, কবিতায় জীবন থাকে- থাকে জীবন সঞ্চয়ী কিছু অমৃত রস, যা তিলে তিলে জমা করেন কবি।
তাই যদি কিছু চাইতে হয়- কবির কাছেই চাও, কবিতার মাধ্যমেই চাও।



বই- বন পলাশের পদাবলি
কবি- অলোক কুমার চক্রবর্ত্তী





সেই যে পিয়াসী সন্ধ্যায় মৌনমুখর স্মৃতির আলাপন
একাকীত্বে যে করবী নিয়ে স্বপ্নপেছনে করেছি রচন-

কামনার কালীদহে এখনও ভাসা ভাসা গাঁথা মালা খানি
প্রেমের অঞ্জলি দিতে, আবাহন না জনামি।


সর্বশেষ এডিট : ১৬ ই মার্চ, ২০১৮ রাত ১০:৩৮
৩০টি মন্তব্য ৩০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা মামলায় দেশনায়ক তারেক রহমানকে সম্পৃক্ত করার নেপথ্যে  

লিখেছেন এম টি উল্লাহ, ০৬ ই নভেম্বর, ২০২৪ বিকাল ৫:০৮


আগেই বলেছি ওয়ান ইলেভেনের সরকার এবং আওয়ামীলীগের যবনায় জনাব তারেক রহমানের বিরুদ্ধে পৌনে একশ মামলা হলেও মূলত অভিযোগ দুইটি। প্রথমত, ওই সময়ে এই প্রজন্মের নিকট উপস্থাপন করা হয়েছিল দেশনায়ক তারেক... ...বাকিটুকু পড়ুন

ট্রাম্পকে নিয়ে ব্লগারদের রাজনৈতিক চিন্তাভাবনা

লিখেছেন সোনাগাজী, ০৬ ই নভেম্বর, ২০২৪ সন্ধ্যা ৬:১০



**** এডমিন টিমের ব্লগারেরা আমাকে বরাবরের মতোই টার্গেট করে চলেছে, এভাবেই সামু চলবে। ****

ট্রাম্পের বিজয়ে ইউরোপের লোকজন আমেরিকানদের চেয়ে অনেক অনেক বেশী শংকিত; ট্রাম্প কিভাবে আচরণ করবে ইউরোপিয়ানরা... ...বাকিটুকু পড়ুন

ট্রাম্পের বিজয়, বিশ্ব রাজনীতি এবং বাংলাদেশ প্রসংগ

লিখেছেন সরলপাঠ, ০৬ ই নভেম্বর, ২০২৪ সন্ধ্যা ৭:২১

ট্রাম্পের বিজয়ে বাংলাদেশে বা দেশের বাহিরে যে সব বাংলাদশীরা উল্লাস করছেন বা কমলার হেরে যাওয়াতে যারা মিম বানাচ্ছেন, তারাই বিগত দিনের বাংলাদেশের ফ্যাসিস্টের সহযোগী। তারা আশায় আছেন ট্রাম্প তাদের ফ্যাসিস্ট... ...বাকিটুকু পড়ুন

ঠেলার নাম বাবাজী !

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ০৬ ই নভেম্বর, ২০২৪ রাত ৯:৩১

এক গ্রামীণ কৃষক জমিদার বাড়িতে খাজনা দিতে যাবে। লোকটি ছিলো ঠোটকাটা যখন তখন বেফাস কথা বা অপ্রিয় বাক্য উচ্চারণ করে ক্যাচাল বাধিয়ে ফেলতে সে ছিলো মহাউস্তাদ। এ জন্য তার... ...বাকিটুকু পড়ুন

শীঘ্রই হাসিনার ক্ষমতায় প্রত্যাবর্তন!

লিখেছেন সৈয়দ মশিউর রহমান, ০৭ ই নভেম্বর, ২০২৪ সকাল ৯:৩৮


পেক্ষার প্রহর শেষ। আর দুই থেকে তিন মাস বাকি। বিশ্ব মানবতার কন্যা, বিশ্ব নেত্রী, মমতাময়ী জননী, শেখ মুজিবের সুয়োগ্য কন্যা, আপোসহীন নেত্রী হযরত শেখ হাসিনা শীগ্রই ক্ষমতার নরম তুলতুলে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×