আমি বিব্রত,
প্রতিদিন অজস্র কারণে আমি বিব্রত হই।
আমি বিব্রত তোমাদের চাকচিক্যে
আমি বিব্রত তোমাদের অভ্যাসে
আমি হতাশ তোমাদের আচরণে,
আমি আরও একবার বিব্রত হব; তোমাদেরই কারণে।
অতি ঠুনকো বিষয়েও আমি সদাই বিব্রত ,
প্রিয়জনকে শুভ সকাল বার্তা পাঠাতেও আমি বিব্রতবোধ করি,
সাহস করে তাকে ভালবাসার কথা বলা ,
সে তো সহস্র সংখ্যক বিব্রতকর অবস্থার সমষ্টি ।।
আমি বিব্রত ,
আমি সদাই বিব্রত
আমার মায়ের স্বপ্নগুলো পূরণ করতে পারিনি বলে,
আমি বিব্রত আমার বোকা মা’টার কাছে ,
আমি সত্যি সত্যি বিব্রত আমার পিতার কাছে ,
যিনি এখনো একটি পুরানো নকিয়া মোবাইল ব্যবহার করছেন ।।
বাসায় গ্যাস, পানি ও বিদ্যুৎ নেই বলে
আমি আমার স্ত্রীর কাছে বিব্রত।
আমার বেতন বাড়ে না বলে,
আমি আমার বড় ছেলেটার কাছে বিব্রত।
পত্রিকায় ন্যাংটো মেয়ের ছবি ছাপায় বলে,
আমি আমার ছোট মেয়েটার কাছেও বিব্রত ।।
আজ যে তরুণ ছেলেটা গাড়ি চাপায় মারা গেল,
গতকাল যে কুমারী মেয়েটা ধর্ষিত হল,
তাদের মৃত্যুর জন্যও আমি বিব্রত।
আমি বিব্রত ,
আমি একজন তরুণ যুবক,
যে পুরো জাতির কাছে সর্বদা বিব্রতবোধ করে থাকে।
পৃথিবীর তাপমাত্রা দুই ডিগ্রী বেশি বলে,
দেশে বিদেশে বন্যা হয়, ঘূর্ণিঝড় হয়, নিত্য নতুন দুর্যোগ হয়।
না খেয়ে থাকে এক সময় মরে যায় নিস্তেজ মানুষগুলো ।
সীমান্তে নির্দোষ প্রাণগুলো পাখির মত গুলি খেয়ে মরে যায়,
খেতে না পেয়ে কিংবা গুলি খেয়ে যারা মরে যাচ্ছে প্রতিদিন,
তাদের অসহায় ও নির্দোষ মৃত্যুর জন্যও আমি বিব্রত।
আমি বিব্রত,
আমি সত্যি সত্যি বিব্রত।
আমি বিব্রত সৃষ্টিকর্তার কাছেও,
যিনি বলেছিলেন আমরাই নাকি সৃষ্টির সেরা জীব!
সেই সেরা আমাদের সেরা পাশবিকতাই বিব্রত করে আমাকে।
প্রতিদিন অজস্র কারণে হাজার বার আমি বিব্রতবোধ করি,
আমি কামিনী রায়ের কাছেও বিব্রত,
যিনি বলেছিলেন,
আপনারে লয়ে বিব্রত রহিতে আসে নাই কেহ অবনী পরে।
ট্যাগ লাইনঃ
এই কবিতা যদি আপনাকে বিব্রত করতে না পারে,
তবে আমি আরও একবার বিব্রতবোধ করব।
কবিতাটি ২০১৬ সালে লেখা হয়েছিল। এটি মূল লেখার পরিবর্তিত, পরিবর্ধিত ও পরিমার্জিত রূপ।
সর্বশেষ এডিট : ৩১ শে আগস্ট, ২০১৭ রাত ৯:৩৭