ঘড়ির কাটা টিক টিক করে রাত বারোটা বাজবে আর অল্প কিছুক্ষণ পরেই।
শুরু হবে ১৯শে জুলাই ।
নন্দিত কথাসাহিত্যিক হুমায়ূন আহমেদের মৃত্যুবার্ষিকী ।
হুমায়ূন আহমেদকে নিয়ে আমি এর আগে কখনো কোন ইতিবাচক কথা বলিনি। তার কিছুসংখ্যক লেখা ভাল লেগেছিল এবং অধিকাংশই ভাল লাগেনি। যাক, সেসব কথা না।
হুমায়ূন আহমেদ মূলত মানহীন লেখাগুলো লিখতে শুরু করেন প্রকাশকদের চাপে পড়েই।
পাঠক ডিমান্ড থেকেই তার ঐ অখাদ্য লেখাগুলোর জন্ম হয়েছিল। সেজন্য পাঠক হিসেবে আপনারা যারা হুমায়ূন ভক্ত তারাও কোন অংশে কম দায়ী না। আপনারা মিসির আলী-মিসির আলী, হিমু-হিমু বলে চিল্লাপাল্লা করে করে প্রকাশকদের মাথা খেয়েছেন আর প্রকাশক খেয়েছে লেখকের মাথা । ফরমায়েশি লেখার মান যে ভাল হবে না সেটা তো জানা কথাই।
আমি হুমায়ূনকে লেখক হিসেবে বিচার করতে চাই তার সমগ্র লেখার মধ্য দিয়েই। জনপ্রিয়তা পেতে হলে এবং তা ধরে রাখতে হলে মাসে তিনটা করে উপন্যাসের জন্ম দিতে হবে এমন কোন কথা নেই।
নাম বলছি না, অনেক কবি-লেখকের পুস্তকের সংখ্যা কম কিন্তু গুণগত মান ও পাঠক রেটিং এ তারা হুমায়ূন থেক এগিয়েই আছে।
অন্যদিকে হুমায়ূন আহমেদ একা অনেক কিছুই করেছেন। গান লেখা, সিনেমা বানানো, উপন্যাস লেখা, থ্রিলার লেখা সবকিছুই করেছেন তিনি। তার প্রথমদিকের উপন্যাসগুলো ছিল যথারীতি বেশ উচ্চ সাহিত্য মানের। তার কিছু কিছু গান সত্যি অসাধারণ। কেউ কেউ তামাশা করে বলে থাকেন যে, আর অল্প কিছুদিন যদি হুমায়ূন আহমেদ বেঁচে থাকতেন তাহলে হয়ত বাংলা গানের জগতে "হুমায়ূন সংগীত" নামে বিশেষ গানের দেখা মিলত ।
তার শেষ দিকের গল্প-উপন্যাসের ভক্ত না হলেও তার গান ও সিনেমার আমি বেশ ভক্ত।
বাংলা সাহিত্যে তাই তার অবদানকে খাট করে দেখার কোন সুযোগ নেই। তিনি বাঙ্গালীকে বই কিনতে ও বই পড়তে উৎসাহী ও প্রভাবিত করেছেন।
এই লোকটার অবদান তাই অস্বীকার করার কোন সুযোগ নেই।
মৃত্যু দিবসে কামনা, হুমায়ূন ভক্তরা বেঁচে থাকুক চিরকাল, তবে তারা যেন শুধুমাত্র হুমায়ূন সাহিত্যের মাঝেই বেঁচে না থাকে।
হুমায়ূন আহমেদের উক্তিগুলোর মধ্যে আমার প্রিয় উক্তি -
[উক্তিটা ঠিক কি ছিল হুবহু মনে নেই]
তবে ভাবার্থঃ "লেখক মাত্রই অহংকারী"
ছবিঃ গুগল
১৮ জুলাই ২০১৭
সর্বশেষ এডিট : ১৮ ই জুলাই, ২০১৭ রাত ৮:১৫